‘রাহবার’ আবারও ভাসবে টাঙ্গুয়ার হাওরের জলে
Published: 4th, June 2025 GMT
ছবি: বোটের মালিকের ফেসবুক থেকে নেওয়া
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সমুদ্র সম্পর্কে মানুষ কতটা জানে
সমুদ্রের তলদেশ নিয়ে জানার আগ্রহ অনেক বিজ্ঞানীদের। যদিও বলা হয় মাত্র ০.০০১ শতাংশ মোট সমুদ্র এলাকা এখন পর্যন্ত অন্বেষণ করা হয়েছে। পৃথিবীর বেশির ভাগ অংশজুড়ে থাকলেও গভীর সমুদ্র নিয়ে বিজ্ঞানীদের জানার পরিধি বেশ কম। সায়েন্স অ্যাডভান্সেসে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হচ্ছে, মানবজাতি এখন পর্যন্ত গভীর সমুদ্রতলের মাত্র ০.০০১ শতাংশ কম এলাকা সম্পর্কে জানে। এই এলাকার আকার রোড আইল্যান্ডের প্রায় সমান বা বেলজিয়ামের প্রায় এক-দশমাংশ। এই সীমিত অনুসন্ধান আমাদের গ্রহের বৃহত্তম বাস্তুতন্ত্রকে সঠিকভাবে বোঝা ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
২০০ মিটারের বেশি গভীরতা থেকে গভীর মহাসাগর শুরু হয়, যা পৃথিবীপৃষ্ঠের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশজুড়ে বিস্তৃত। বিশালতা সত্ত্বেও সমুদ্র সবচেয়ে কম অন্বেষণ করা অংশ। গভীর মহাসাগর বিভিন্ন ধরনের জীবের আবাসস্থল, জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ, অক্সিজেন উৎপাদন আর খাদ্য ও ওষুধের মতো মূল্যবান সম্পদ সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমুদ্রপৃষ্ঠে বসবাসকারী ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন পৃথিবীর প্রায় ৮০ ভাগ অক্সিজেন উৎপন্ন করে। এসব জীব গভীর সমুদ্রস্রোত থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে। সামুদ্রিক জীব উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বায়ুমণ্ডলীয় কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণে সহায়তা করছে। জলবায়ু স্থিতিশীলতায় সমুদ্রের অবদান অনেক।
সমুদ্র সরাসরি মানুষকে সহায়তা করছে। প্রতিবছর ২০ কোটি টন সামুদ্রিক খাবার সরবরাহ করা হয় সমুদ্র থেকে। বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬ কোটি মানুষকে কর্মসংস্থান দিচ্ছে সমুদ্র। এ ছাড়া স্পঞ্জ ও ব্যাকটেরিয়ার মতো সামুদ্রিক জীব এইচআইভি, স্তন ক্যানসার ও কোভিড-১৯ সহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ভূমিকা রাখছে। পাঁচ দশক ধরে বিজ্ঞানীরা সম্ভাব্য চিকিৎসার জন্য হাজার হাজার নতুন সামুদ্রিক যৌগ খুঁজে যাচ্ছেন।
সমুদ্রের অনেক গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও মানুষ গভীর সমুদ্র সম্পর্কে কম জানে। ওশান ডিসকভারি লিগের একদল গবেষক ১৯৫৮ সাল থেকে পরিচালিত প্রায় ৪৪ হাজার গভীর সমুদ্র ডাইভ থেকে তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁদের অনুসন্ধান দৃশ্যমান অনুসন্ধানের তীব্র সীমাবদ্ধতাকে তুলে ধরছে। ওশান ডিসকভারি লিগের সভাপতি ও বিজ্ঞানী কেটি ক্রফ বেল বলেন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমাদের গভীর সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বোঝার প্রয়োজন। মানুষের কার্যকলাপ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে গভীর সমুদ্রের পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। দূষণ, সম্পদ শোষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মাধ্যমে সমুদ্রের ওপরে চাপ তৈরি হচ্ছে। গবেষকেরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, সমুদ্রে মানুষের বিভিন্ন কার্যকলাপ ও উষ্ণায়নের কারণে ভবিষ্যতে ক্ষতিকর প্রভাব প্রায় দ্বিগুণ হবে। মহাসাগর ইতিমধ্যে মানুষের কার্যকলাপ থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ অতিরিক্ত তাপ ও ৩০ শতাংশ কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ করেছে। এর ফলে উষ্ণ তাপমাত্রা, অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস ও সমুদ্রের অম্লতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ধরনের পরিবর্তন গভীর সমুদ্রের আবাসস্থলকে অযোগ্য করে তুলছে। বিভিন্ন গভীরতায় সামুদ্রিক জীবনকে ব্যাহত করছে। বিশ্বব্যাপী জীববৈচিত্র্য ও উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করছে।
সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট