ইমরান খানের মুক্তির পক্ষে কেন সোচ্চার হচ্ছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা
Published: 11th, January 2025 GMT
পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে তখন তুমুল বিক্ষোভ চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশ্বস্ত সহযোগী রিচার্ড গ্রেনেল সে সময় পাকিস্তানি সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দী ইমরান খানের মুক্তির দাবি জানান। গত নভেম্বরে এ দাবিসংবলিত তাঁর একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
একই দিন আরেকটি টুইট বার্তায় গ্রেনেল লেখেন, ‘পাকিস্তানের দিকে তাকান। দেশটিতে ট্রাম্পের মতো একজন নেতা মিথ্যা মামলায় কারাগারে আছেন। যুক্তরাষ্ট্রের লাল ঢেউয়ে (লাল রং ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির সঙ্গে যুক্ত) অনুপ্রাণিত হয়েছেন সেখানকার জনগণ। বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক মামলা-মোকদ্দমা বন্ধ করুন।’ পরে এই টুইট মুছে ফেলা হয়।
গ্রেনেলের দুটি টুইটেই হাজার হাজার ভিউ হয়েছে। ৪ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতার পর ট্রাম্প ১৫ ডিসেম্বর গ্রেনেলকে বিশেষ মিশনের দায়িত্ব দিয়ে প্রেসিডেনশিয়াল দূত মনোনীত করেন। এর পরের দিন ১৬ ডিসেম্বর ট্রাম্পের এই ঘনিষ্ঠ মিত্র আবারও ইমরানের মুক্তি চান। ওই সময় তাঁর পোস্টে ভিউয়ের সংখ্যা ছিল কোটির বেশি।
অনেক ভাষ্যকার বলছেন, ইমরান খানকে নিয়ে ট্রাম্পঘনিষ্ঠদের এত আগ্রহের কারণ নিয়ে সন্দিহান তাঁরা। ট্রাম্পমিত্ররা বিষয়টিকে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির ক্ষেত্রে এক অর্থপূর্ণ চাপ সৃষ্টি বলে দেখাচ্ছেন। কেউ কেউ একে পিটিআইয়ের ভাগ্যের পরিহাস হিসেবে চিহ্নিত করছেন। তাঁরা বলছেন, পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলটি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা পেতে তদবিরের চেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ তিন বছরের কম সময় আগেও দলটি ইমরানকে অপসারণের পেছনে ওয়াশিংটনের ভূমিকা থাকার অভিযোগ করে।গ্রেনেলের বার্তা আরও গুরুত্ব পায়, যখন রিপাবলিকান দলের আরেক নেতা ও যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পদে ট্রাম্পের সাবেক মনোনীত ব্যক্তি ম্যাট গেটজও লেখেন, ‘ইমরান খানকে মুক্তি দিন।’
এক্সের (সাবেক টুইটার) এসব পোস্ট ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) পক্ষে সমর্থন জোরালো হওয়ার ইঙ্গিত। নিজেদের নেতার মুক্তির দাবিতে সেই ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছে দলটি।
তবে অনেক ভাষ্যকার বলছেন, ইমরান খানকে নিয়ে ট্রাম্পঘনিষ্ঠদের এত আগ্রহের কারণ নিয়ে সন্দিহান তাঁরা। ট্রাম্পের মিত্ররা বিষয়টিকে পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির ক্ষেত্রে এক অর্থপূর্ণ চাপ সৃষ্টি বলে দেখাচ্ছেন। কেউ কেউ একে পিটিআইয়ের ভাগ্যের পরিহাস হিসেবে চিহ্নিত করছেন। তাঁরা বলছেন, পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলটি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা পেতে তদবিরের চেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ তিন বছরের কম সময় আগেও দলটি ইমরানকে অপসারণের পেছনে ওয়াশিংটনের ভূমিকা থাকার অভিযোগ করে।
পাকিস্তানের দিকে তাকান। দেশটিতে ট্রাম্পের মতো একজন নেতা মিথ্যা মামলায় কারাগারে আছেন। যুক্তরাষ্ট্রের লাল ঢেউয়ে (লাল রং ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির সঙ্গে যুক্ত) অনুপ্রাণিত হয়েছেন সেখানকার জনগণ। বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক মামলা-মোকদ্দমা বন্ধ করুন।রিচার্ড গ্রেনেল, ট্রাম্পের প্রেসিডেনশিয়াল দূতজটিল সম্পর্কপ্রায় চার বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে অপসারণ করা হয় ইমরান খানের সরকারকে।
ক্ষমতাচ্যুতির কারণ হিসেবে ওই সময় ইমরান অভিযোগ করেছিলেন, পাকিস্তানের প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে হওয়া এক ষড়যন্ত্রের শিকার তিনি। একই সঙ্গে তিনি সমর্থকদের দেশজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ আয়োজনের আহ্বান জানান। ইমরানের ওই অভিযোগ জোরালভাবে নাকচ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান—দুই দেশই।
এ ঘটনার পর থেকে ইমরান ও তাঁর নেতা-কর্মীরা পাকিস্তানের বর্তমান সরকারের দমন–পীড়নের শিকার হয়ে চলেছেন। কয়েক ডজন অভিযোগে ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে তাঁকে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর দলের প্রতীক ক্রিকেট ব্যাটকে দেশের জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে দলটির মনোনীত ব্যক্তিরা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে বাধ্য হন।
ইমরান খান ও তাঁর দলের ওপর দমন–পীড়ন চলার পুরো সময়ে বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা কোনো রকম মন্তব্য করা থেকে অনেকটাই চুপ থেকেছেন। তাঁরা বলছেন, এটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে থাকা প্রভাবশালী বিভিন্ন পাকিস্তানি গোষ্ঠী, যাদের বেশির ভাগ ইমরান ও পিটিআইয়ের সমর্থক, তারা তাঁর মুক্তির জন্য মার্কিন রাজনীতিবিদদের মধ্যে জোর প্রচার চালাচ্ছে।ইতিমধ্যে ইমরানের অপসারণের ঘটনার পর পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কে কিছুটা উন্নতি দেখা যায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ২০২২ সালের মে মাসে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডোনাল্ড ব্লমকে পাকিস্তানে নিয়োগ দেয়। ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে পদটি খালি পড়ে ছিল।
ইমরান খান ও তাঁর দলের ওপর দমন–পীড়ন চলার পুরো সময়ে বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা কোনো রকম মন্তব্য করা থেকে অনেকটাই চুপ থেকেছেন। তাঁরা বলছেন, এটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে থাকা প্রভাবশালী বিভিন্ন পাকিস্তানি গোষ্ঠী, যাদের বেশির ভাগ ইমরান ও পিটিআইয়ের সমর্থক, তারা তাঁর মুক্তির জন্য মার্কিন রাজনীতিবিদদের মধ্যে জোর প্রচার চালাচ্ছে।
হাসান আব্বাস ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক। আল–জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানি গোষ্ঠীগুলোর বিশেষ করে ইমরান খানের মুক্তির দাবিকে ঘিরে সোচ্চার প্রচার-প্রচারণা দুই দেশের সম্পর্কে জটিলতার মাত্রা যুক্ত করেছে।’
পাকিস্তানি ওই গোষ্ঠীগুলোর প্রচেষ্টায় গত বছরের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ‘পাকিস্তানে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ’ নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এক শুনানি। সেখানে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টি—উভয় দল থেকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের প্রতি ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচন খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানানো হয়।
কয়েক মাস পর গত বছরের অক্টোবরে বাইডেনের ডেমোক্রেটিক পার্টির ৬০ জনের বেশি আইনপ্রণেতা ইমরান খানের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য ইসলামাবাদের ওপর ওয়াশিংটনের প্রভাব খাটাতে বাইডেনকে আহ্বান জানান। পরে গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা আতিফ খান ট্রাম্পের পুত্রবধূ লারা ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ইমরানের বন্দিজীবন নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে আলোচনা করেন তাঁরা।
ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। এর দুই দিন পর ২২ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে পাকিস্তানে গত নভেম্বরের বিক্ষোভ ও সহিংসতা নিয়ে কংগ্রেশনাল শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বিক্ষোভে পিটিআইয়ের অন্তত ১২ কর্মী নিহত হন। এ ঘটনার জন্য পিটিআই শাহবাজ শরিফ সরকারকে দায়ী করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজনদের পক্ষ থেকে যেসব মন্তব্য আসছে, সেসবের কোনো গুরুত্ব থাকার কথা উড়িয়ে দিয়েছে ইসলামাবাদ। গত মাসে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, তারা ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন স্বার্থ ও একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার ভিত্তিতে’ সম্পর্ক চায়।
আরও পড়ুনপাকিস্তানে ৯ মের বিক্ষোভ: সামরিক আদালতে ২৫ বেসামরিক ব্যক্তির সাজা২১ ডিসেম্বর ২০২৪পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মুখপাত্র রানা ইহসান আফজাল বলেন, গ্রেনেল বা গেটজের মতো ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে আসা মন্তব্য ‘একজন মার্কিন নাগরিকের ব্যক্তিগত’ বক্তব্য হিসেবে দেখছে ইসলামাবাদ।
আফজাল আরও বলেন, ‘কোনো নাগরিকের ব্যক্তিগত মন্তব্যে (পাকিস্তান) সরকার সাড়া দেয় না। আমরা নতুন প্রশাসনের (যুক্তরাষ্ট্রের) সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছি। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি পর্যায়ে কোনো উদ্বেগ থাকলে পাকিস্তান আনুষ্ঠানিক সাড়া দিতে পারে।’
গ্রেনেল বা গেটজের মতো ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে আসা মন্তব্য ‘একজন মার্কিন নাগরিকের ব্যক্তিগত’ বক্তব্য হিসেবে দেখছে ইসলামাবাদ।রানা ইহসান আফজাল, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মুখপাত্রযুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত হোসেন হাক্কানি স্বীকার করেন, ইমরান ও তাঁর দলের পক্ষে সমর্থন আদায়ে সে দেশের প্রবাসী পাকিস্তানি গোষ্ঠীগুলো সাফল্য দেখিয়েছে। আল–জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘ইমরান খানের মুক্তির আহ্বান জানাতে তারা দুই দলের নেতাদেরই রাজি করাতে পেরেছে।’
তবে হাডসন ইনস্টিটিউটের এই জ্যেষ্ঠ ফেলো সতর্ক করে বলেন, ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিতে এখনো পাকিস্তান নিম্ন অগ্রাধিকারের বিষয় হয়ে রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।