চিকিৎসা ভিসায় ভারতে যাওয়ার সময় যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশনে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ইডেন কলেজ শাখার নেত্রী সুস্মিতা পাণ্ডেকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁর ছোট ভাই সত্যজিত পাণ্ডেকেও আটক করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁদের আটক করে। বিকেলে তাঁদের বেনাপোল বন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

আটক সুস্মিতা পাণ্ডে ও সত্যজিত পাণ্ডে মাগুরা সদরের ঢাকা রোড এলাকার স্বপন পাণ্ডের সন্তান। সুস্মিতা পাণ্ডে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। সুস্মিতা পাণ্ডে এবং তাঁর ভাই সত্যজিত পাণ্ডের বিরুদ্ধে ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বেনাপোল স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মো.

আহসানুল কাদের ভূঞা বলেন, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সুস্মিতা পাণ্ডে এবং তাঁর ছোট ভাই সত্যজিত পাণ্ডে চিকিৎসা ভিসায় ভারতে যাওয়ার জন্য বেনাপোল স্থলবন্দরে আসেন। বেলা ১১টার দিকে তাঁরা ইমিগ্রেশনে আসেন। আগে থেকে পাওয়া সংবাদের ভিত্তিতে তাঁদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তাঁরা ঢাকার নিউমার্কেট এলাকার একটি হত্যা মামলার আসামি বলে স্বীকার করেন। এরপর বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁদের বেনাপোল বন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

বেনাপোল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল মিয়া বলেন, ভারতে যাওয়ার পথে ইমিগ্রেশন পুলিশ সুস্মিতা পাণ্ডে এবং তাঁর ভাই সত্যজিত পাণ্ডেকে আটক করে বন্দর থানায় হস্তান্তর করেছে। তাঁরা দুজনে ঢাকার নিউমার্কেট এলাকার একটি হত্যা মামলার আসামি। নিউমার্কেট থানায় খবর দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে পুলিশ বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। রাতেই তাঁদের ঢাকার নিউমার্কেট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাফা সীমান্ত খুলে দিতে ইসরায়েলকে চাপ দিন

গাজায় ত্রাণ প্রবেশের জন্য রাফা সীমান্ত খুলে দিতে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। একই সঙ্গে গাজা পুনর্গঠনে কাজ শুরুর বিষয়ে জোর দিয়েছে তারা। গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি এ আহ্বান জানানো হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে হামাস। তাতে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য দুই বছর ধরে মিসর, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতার প্রশংসা করেছে হামাস।

গত ১০ সেপ্টেম্বর গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শুরু হয়। যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী গাজার নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত সেনা সরিয়ে নিয়েছে ইসরায়েল। দুই পক্ষের মধ্যে বন্দিবিনিময়ও হয়েছে। তবে মৃত জিম্মিদের সবার মরদেহ ফেরত দিতে পারেনি হামাস। একে যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন উল্লেখ করে গাজায় নির্দিষ্ট ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল।

ত্রাণ প্রবেশ ও গাজাবাসীর নির্বিঘ্ন যাতায়াতের জন্য গত বুধবার থেকে গাজা-মিসর সীমান্তে রাফা ক্রসিং খুলে দেওয়ার কথা ছিল ইসরায়েলের। তবে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি দিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাফা সীমান্ত খুলে দেওয়ার কথা বলা হয়নি। তাই সীমান্তটি বন্ধ থাকবে। গাজায় সব ত্রাণ প্রবেশ করবে ইসরায়েলের কারেম আবু সালেম সীমান্ত দিয়ে।

যদিও ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেয়ন সারের বরাতে ইতালির বার্তা সংস্থা এএনএসএর খবরে বলা হয়েছে, আগামী রোববার রাফা সীমান্ত খুলে দেওয়া হতে পারে। তবে এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

এদিকে রাফা সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ ব্যাহত হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করতে দিতে হবে। তবে এখন প্রবেশ করতে পারছে ৩০০ ট্রাকের কম। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় ত্রাণ সরবরাহের জন্য সব সীমান্ত খুলে দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) মুখপাত্র আবির ইতেফা।

এদিকে রাফা সীমান্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কাছে কৌশল খাটানোর একটি উপাদান বলে মনে করেন রোমের আমেরিকান ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক আন্দ্রিয়া দেসি। তিনি বলেন, আপাতত ইসরায়েল এই ক্রসিং খুলে দেবে বলে মনে হয় না। তবে ত্রাণ প্রবেশ ও আহত ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসা দিতে গাজার বাইরে নেওয়ার জন্য সীমান্তটি খুলে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ফলে সীমান্তটি খুলতে ইসরায়েল যে বাধা দিচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ