চিকিৎসা ভিসায় ভারতে যাওয়ার সময় ইডেন কলেজের ছাত্রলীগ নেত্রী ভাইসহ গ্রেপ্তার
Published: 13th, January 2025 GMT
চিকিৎসা ভিসায় ভারতে যাওয়ার সময় যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশনে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ইডেন কলেজ শাখার নেত্রী সুস্মিতা পাণ্ডেকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁর ছোট ভাই সত্যজিত পাণ্ডেকেও আটক করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁদের আটক করে। বিকেলে তাঁদের বেনাপোল বন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
আটক সুস্মিতা পাণ্ডে ও সত্যজিত পাণ্ডে মাগুরা সদরের ঢাকা রোড এলাকার স্বপন পাণ্ডের সন্তান। সুস্মিতা পাণ্ডে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। সুস্মিতা পাণ্ডে এবং তাঁর ভাই সত্যজিত পাণ্ডের বিরুদ্ধে ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মো.
বেনাপোল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল মিয়া বলেন, ভারতে যাওয়ার পথে ইমিগ্রেশন পুলিশ সুস্মিতা পাণ্ডে এবং তাঁর ভাই সত্যজিত পাণ্ডেকে আটক করে বন্দর থানায় হস্তান্তর করেছে। তাঁরা দুজনে ঢাকার নিউমার্কেট এলাকার একটি হত্যা মামলার আসামি। নিউমার্কেট থানায় খবর দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে পুলিশ বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। রাতেই তাঁদের ঢাকার নিউমার্কেট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে যক্ষ্মা না থাকলেও রোগী, কফের নমুনায় জালিয়াতি
দিনাজপুর জেলায় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে অনিয়ম ধরা পড়েছে। সেখানে ভুয়া যক্ষ্মারোগী তৈরি ও কফের নমুনা জালিয়াতি করা হয়। ওষুধ বিতরণেও আছে অনিয়ম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো দিনাজপুর জেলার সিভিল সার্জনের প্রতিবেদনে এই অনিয়মের কথা বলা হয়েছে। গত বুধবার দিনাজপুরের সিভিল সার্জন মো. আসিফ ফেরদৌস স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালককে (এমবিডিসি) এ প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।
১ ডিসেম্বর দিনাজপুর শহরে ব্র্যাকের যক্ষ্মানির্ণয় কেন্দ্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালায়। আদালত ব্র্যাকের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির জেলা ব্যবস্থাপক মো. রেজাউল কবিরকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ওই দিন ঠিক কী ঘটেছিল, তা সিভিল সার্জনের কাছে জানতে চায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেন সিভিল সার্জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযানের পর থেকে দিনাজপুরের সব উপজেলা ও মাঠপর্যায়ে ব্র্যাক নিজ উদ্যোগে সব ধরনের সেবা বন্ধ রেখেছে। দিনাজপুরের সিভিল সার্জন মো. আসিফ ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্র্যাকের স্থানীয় দু-একজন কর্মকর্তা ও কর্মী অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। আমার মনে হয় না ব্র্যাকের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে জড়িত বা তাঁরা এসব বিষয়ে অবগত আছেন।’
যে মানুষের যক্ষ্মা নেই, তাঁকে যক্ষ্মারোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা। এই কাজ করতে গিয়ে কফের নমুনায় জালিয়াতি করা হয়। অর্থাৎ যক্ষ্মা আছে, এমন রোগীর কফ সুস্থ মানুষের কফের সঙ্গে মিশিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং সুস্থ মানুষকে যক্ষ্মারোগী হিসেবে তালিকাবদ্ধ করা হয়।কী অনিয়ম জানা গেল
সিভিল সার্জনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্ভাব্য যক্ষ্মারোগী নির্বাচনে অসততা আছে। এর অর্থ হচ্ছে, যে মানুষের যক্ষ্মা নেই, তাঁকে যক্ষ্মারোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা। এই কাজ করতে গিয়ে কফের নমুনায় জালিয়াতি করা হয়। অর্থাৎ যক্ষ্মা আছে, এমন রোগীর কফ সুস্থ মানুষের কফের সঙ্গে মিশিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং সুস্থ মানুষকে যক্ষ্মারোগী হিসেবে তালিকাবদ্ধ করা হয়।
সিভিল সার্জন আসিফ ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, রোগীর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য এটা করা হচ্ছে। যাঁর যক্ষ্মা হয়নি, তাঁকে যক্ষ্মার ওষুধ খাওয়ানো হয়। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। এটি অপরাধ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযানের সময় ব্র্যাক ভবনের বিভিন্ন তলা থেকে পরিত্যক্ত ওষুধ ও ওষুধের পাত্র উদ্ধার করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। দিনভর পরিচালিত এ অভিযানে ভুয়া রোগী তৈরি, নিয়মবহির্ভূত ওষুধ মজুত, ওষুধের স্টক লেজার ঘষামাজা, তদন্তে অসহযোগিতা, আক্রমণাত্মক আচরণ—সবকিছুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমলে নেন।
সিভিল সার্জন আসিফ ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, রোগীর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য এটা করা হচ্ছে। যাঁর যক্ষ্মা হয়নি, তাঁকে যক্ষ্মার ওষুধ খাওয়ানো হয়। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। এটি অপরাধ।কেন এই অভিযান
যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে মাঠপর্যায়ে কাজ করে ব্র্যাকের নেতৃত্বে বেশ কিছু এনজিও। দিনাজপুরের সিভিল সার্জন তাঁর প্রতিবেদনে বলেছেন, যক্ষ্মা কার্যক্রমে অস্বচ্ছতা, তথ্যগত অসংগতি দেখা দেওয়ায় সিভিল সার্জন কার্যালয় বিষয়টি নজরদারিতে নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।
কর্মীদের নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা রক্ষায় কয়েকটি এলাকায় আমাদের কিছু কার্যক্রম সাময়িকভাবে সীমিত করা হয়েছে, তবে প্রয়োজনীয় সব পরিষেবা অব্যাহত আছে।ব্র্যাকের স্বাস্থ্য কর্মসূচির ঊর্ধ্বতন পরিচালক আকরামুল ইসলামব্র্যাকের স্বাস্থ্য কর্মসূচির ঊর্ধ্বতন পরিচালক আকরামুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দিনাজপুরে ব্র্যাকের যক্ষ্মানির্ণয় কেন্দ্রের ঘটনাটি সম্পর্কে তাঁরা অবগত। এ ঘটনায় ব্র্যাকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলমান। কেউ অনিয়ম করে থাকলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ‘কর্মীদের নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা রক্ষায় কয়েকটি এলাকায় আমাদের কিছু কার্যক্রম সাময়িকভাবে সীমিত করা হয়েছে, তবে প্রয়োজনীয় সব পরিষেবা অব্যাহত আছে।’