নতুন মডেলের হাইব্রিড সোলার আইপিএস আনল ওয়ালটন
Published: 27th, March 2025 GMT
দেশের বাজারে আর্ক ব্র্যান্ডের নতুন ১৩টি মডেলের হাইব্রিড সোলার আইপিএস এনেছে ওয়ালটন। দীর্ঘ সময় ব্যাটারি ব্যাকআপ সুবিধা থাকায় সোলার প্যানেলযুক্ত আইপিএসগুলোর মাধ্যমে কম খরচে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবহার করা সম্ভব। আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়ালটন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১ হাজার ২০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ ভোল্ট-অ্যাম্পিয়ার সুবিধার বিভিন্ন মডেলের হাইব্রিড সোলার আইপিএসগুলো বাসা থেকে শুরু করে শিল্প ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা যায়। কৃষি খাতের পাশাপাশি ছোট, মাঝারি ও বৃহৎ কারখানায় পরিবেশবান্ধব সাশ্রয়ী বিদ্যুতের জন্যও এই হাইব্রিড সোলার আইপিএসগুলো সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।
হাইব্রিড সোলার আইপিএসগুলোর প্রতিটি মডেলেই এআরসি মনো আরটিএম২০১০এম এবং আরসি মনো আরটি৭১-৪৫০এম মডেলের সোলার প্যানেল থাকায় ব্যাটারি দ্রুত চার্জ করা যায়। বিদ্যুৎ–বিভ্রাট বা ভোল্টেজ ওঠানামার সময়েও নিরবচ্ছিন্ন শক্তি সরবরাহ করতে পারে আইপিএসগুলো। শুধু তা–ই নয়, নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী আইপিএসগুলোর সক্ষমতা পরিবর্তন করেও কেনা যাবে। ৭৯ হাজার ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকার কেনা যাবে আইপিএসগুলো।
ওয়ালটনের কম্পিউটারের চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘সাশ্রয়ী, নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ–সুবিধা নিশ্চিত করতে আমরা নতুন হাইব্রিড সোলার আইপিএস সলিউশন নিয়ে এসেছি। হাইব্রিড এই সিস্টেম একই সঙ্গে সৌরশক্তি এবং গ্রিড বিদ্যুৎ থেকে স্মার্ট ইনভার্টারের মাধ্যমে ব্যাটারি চার্জ করতে পারে। এর ফলে বিদ্যুৎ খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যাকআপ সুবিধা পাওয়া যাবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চুক্তি নিকটেই বলছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া চায় মৌলিক পরিবর্তন
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একটি চুক্তির ‘খুব কাছাকাছি’ পৌঁছানো গেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এই যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে ওয়াশিংটন ও কিয়েভের মধ্যে আলোচনা বড় কোনো অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হয়েছে। আর মস্কোর ভাষ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে প্রস্তাবকে চুক্তির ভিত্তি হিসেবে ধরা হচ্ছে, তাতে বড় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছানোর তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ। আগামী জানুয়ারিতে এই পদ থেকে সরে যাচ্ছেন তিনি। গতকাল শনিবার ক্যালিফোর্নিয়ায় রেগ্যান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোরামে কেলগ বলেন, সংঘাতের সমাধান করার প্রচেষ্টা ‘শেষ ১০ মিটার দূরে রয়েছে।’ এই শেষ সময়টা সবচেয়ে কঠিন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য আর দুটি বাধা অতিক্রম করতে হবে বলে জানান কেলগ। এর একটি হলো ভূখণ্ডবিষয়ক—বিশেষ করে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে দনবাস নিয়ে। অপরটি হলো ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র। ইউরোপের সবচেয়ে বড় এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বর্তমানে রাশিয়ার দখলে রয়েছে। কেলগ বলেন, এই দুটি বিষয়ের সমাধান হলে অন্য সমস্যাও কেটে যাবে।
এর আগে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওই বৈঠকের পর পুতিনের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান সহকারী ইউরি উশাকভ বলেছিলেন, ভূখণ্ড নিয়ে সমস্যাগুলো আলোচনা হয়েছে। যুদ্ধ বন্ধের চুক্তির জন্য ইউক্রেনে পুরো দনবাস অঞ্চল চায় মস্কো।
দনবাসের অন্তত ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার অঞ্চল এখনো ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ভাষ্যমতে, এই অঞ্চলগুলো রাশিয়ার হাতে তুলে দিলে সেখান থেকে ইউক্রেনের আরও গভীরে হামলা চালাতে পারবে মস্কো। আজ রোববার উশাকভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি প্রস্তাবে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। যদিও এ নিয়ে বিস্তারিত বলেননি তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন আলোচনা
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে তিন দিনের আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে। শনিবার ছিল আলোচনার শেষ দিন। এদিন জেলেনস্কি বলেন, আলোচনার তৃতীয় দিনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে ‘বাস্তবসম্মত ও গঠনমূলক’ আলোচনায় নিজ দেশে প্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনি যোগ দিয়েছিলেন।
বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, সত্যিকারের শান্তি আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সততার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইউক্রেন। ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার পরবর্তী ধাপ এবং কাঠামো সম্পর্কে একমত বিভিন্ন পক্ষ। জেলেনস্কি আরও বলেন, যেকোনো গঠনমূলক অগ্রগতির বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে মস্কোর ওপর।
এদিকে আগামীকাল সোমবার যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস ও জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে সেখানে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। মস্কো যেন শান্তির পথে ফিরে আসে, সে জন্য চাপও দেবেন তাঁরা।
৭০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
যুদ্ধ বন্ধে দফায় দফায় আলোচনা ও দর-কষাকষির মধ্যে ইউক্রেনে ৭০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ফ্লোরিডায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের শনিবারের আলোচনার আগে রাতভর এই হামলা চালানো হয়। ইউক্রেনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, জ্বালানি অবকাঠামো ও রেলসম্পদকে এ হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
হামলায় ইউক্রেনের হাজার হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ ও পানিসংকট দেখা দেয়। হামলার পর ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল আমাদের জ্বালানি অবকাঠামোগুলো। ইউক্রেনের লাখ লাখ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলাটাই রাশিয়ার লক্ষ্য।’ বিশাল এই হামলার কথা স্বীকার করেছে ক্রেমলিনও।
তবে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার কথা অস্বীকার করেছে মস্কো। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, তারা শুধু ইউক্রেনের সামরিক শিল্পসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থাপনা এবং জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা চালিয়েছে। সব লক্ষ্যবস্তুতেই সফলভাবে আঘাত হানতে পেরেছে তারা।