পুঁজিবাজারে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির শেয়ার অধিগ্রহণ, সীমান্ত ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তির বিপরীতে রক্ষিত জামানত এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরই ধারাবাহিকতায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটিকে বেশ কিছু শর্ত নির্ধারণ করে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

তদন্তের বিষয়টি তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা রাইজিংবিডি ডটকমকে এই তথ্য দিয়েছেন। কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আল মাসুম মৃধা, সহকারী পরিচালক শরিফুল ইসলাম ও নাভিদ হাসান খান।

আরো পড়ুন:

রেনাটার ৯ মাসে মুনাফা কমেছে ৩০ শতাংশ

বিবিএস কেবলসের ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়

বিএসইসির তদন্তের আদেশ

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে, পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির শেয়ার অধিগ্রহণ, সীমান্ত ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তির বিপরীতে রক্ষিত জামানত এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো তদন্ত পরিচালনা করে দেখা প্রয়োজন।

তাই, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ নং XVII) এর সেকশন ২১ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন আলোচ্য বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। উক্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য বিএসইসির তিন জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন এবং কমিশনে একটি প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যেসব বিষয় খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি

পুঁজিবাজার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে বেশি কিছু শর্ত বা বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য গঠিত তদন্ত কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএসইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, তৌফিকা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড কীভাবে তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিমের অতিরিক্ত ১ কোটি ১৫ লাখ সাধারণ শেয়ার অধিগ্রহণ করেছে এবং এক্ষেত্রে শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব কীভাবে করা হয়েছিল সেসব বিষয় খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।

এদিকে, তৌফিকা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের অতিরিক্ত শেয়ার অধিগ্রহণের বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএএস) ২৪ এর আইন অনুসারে কোম্পানির সেই সময়ের আর্থিক প্রতিবেদনে নিজেদের মধ্যে লেনদেনের কোনো তথ্য যথাযথভাবে প্রকাশ করেছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে।

এছাড়া চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সীমান্ত ব্যাংকের পাঠানো চিঠি অনুযায়ী, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ধারা ২০ এর অধীনে তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম এবং সংশ্লিষ্ট স্টক ব্রোকারেজ হাউস লাভেলো আইসক্রিমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.

একরামুল হকের ৫০ লাখ শেয়ার সীমান্ত ব্যাংকের ঋণের চুক্তির বিপরীতে জামানত রাখা হয়। এই ঋণের চুক্তির বিপরীতে জামানতের বিষয়টি খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি। পাশাপাশি এ সংক্রান্ত অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে।

সর্বশেষ আর্থিক অবস্থা

সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে, ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ।

এদিকে, সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১.৪৩ টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ১.২৪ টাকা। ২০২৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৩.৩৭ টাকা।

শেয়ার ধারণ পরিস্থিতি

তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০২১ সালে। ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির মোট পরিশোধিত মূলধন ৯৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৩৫ লাখ।

চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোম্পানিটির উদ্যোক্তাদের হাতে ৪০.০৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২১.৩৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩৮.৫৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। রবিবার (৪ মে) কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৮৩.৪০ টাকায়।

ঢাকা/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ক ত র ব পর ত ব এসইস র তদন ত ক জ ম নত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

হোন্ডা ব্র্যান্ডের সব মডেলের মোটরসাইকেল আনবে এটলাস বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড (এবিএল) আবারও জাপানের বিশ্বখ্যাত হোন্ডা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল আনবে। এখন থেকে এবিএল এককভাবে সরবরাহ সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে (ডিপিএম) হোন্ডা কোম্পানির মোটরসাইকেল এনে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও সংস্থাগুলোতে তাদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করবে।

এ ব্যাপারে এটলাস বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের (বিএইচএল) মধ্যে গত বুধবার একটি চুক্তি হয়েছে। ঢাকায় বিএসইসির সম্মেলনকক্ষে এ চুক্তি সই হয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএসইসির চেয়ারম্যান এম এ কামাল বিল্লাহ; অর্থ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, বাণিজ্যিক, উৎপাদন ও প্রকৌশল পরিচালক; সচিব এবং এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের (এবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিবর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বিএইচএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও সুসুমু মরিসাওয়া, প্রধান বিপণন কর্মকর্তা শাহ মুহাম্মদ আশেকুর রহমান, বিক্রয় ও বিপণন মহাব্যবস্থাপক হিরোনরি কিজিমা এবং জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক আহমেদ নাফিস আল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান এম এ কামাল বিল্লাহ বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার সময় থেকে এবিএল বিশ্ববিখ্যাত জাপানি ব্র্যান্ড হোন্ডার সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করেছিল। মাঝে স্বল্প বিরতির পরে আবারও হোন্ডাকে এবিএলের সঙ্গে যুক্ত করতে পেরেছি। এ জন্য আমরা আনন্দিত। এই চুক্তির ফলে দেশের সব সরকারি দপ্তর/সংস্থা, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) অধীন সব পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এবং সরকারি তহবিলে পরিচালিত এনজিওগুলো এবিএলের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে (ডিপিএম) হোন্ডা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল নিতে পারবে। এর ফলে দেশীয় শিল্পের যেমন বিকাশ ঘটবে তেমনি বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে।’

বিএইচএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও সুসুমু মরিসাওয়া বলেন, হোন্ডা যুক্তিসংগত মূল্যে সর্বোচ্চ মানের পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে সমাজে গতিশীলতার আনন্দ ও স্বাধীনতা ছড়িয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ চুক্তির ফলে উভয় পক্ষই লাভবান হবে।

এবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিবর রহমান বলেন, এ চুক্তির ফলে হোন্ডা ব্র্যান্ডের সব মডেলের মোটরসাইকেল ডিপিএম প্রক্রিয়ায় এককভাবে এটলাস বাংলাদেশ সরবরাহ করবে। সব সরকারি দপ্তর ও সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী শতভাগ হোন্ডা ব্রান্ডের মোটরসাইকেল সরবরাহ করা হবে। এতে এবিএল ও বিএইচএল উভয় প্রতিষ্ঠানই ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেড়েছে শেয়ার দর ও সূচক
  • শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে না ন্যাশনাল ব্যাংক
  • কুমারখালীতে আইসক্রিমে ক্ষতিকর রং-কেমিক্যাল
  • পিএফআই সিকিউরিটিজ পর্ষদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, দুদকে অভিযোগ
  • হোন্ডা ব্র্যান্ডের সব মডেলের মোটরসাইকেল আনবে এটলাস বাংলাদেশ