বাংলাদেশিসহ বিশ্বের অনেক দেশের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য পছন্দের অন্যতম দেশ জাপান। এর অন্যতম কারণ পড়ালেখার মান। দেশটিও পকেটর অর্থ খরচের পাশাপাশি স্কলারশিপে পড়াশোনার সুযোগ আছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন স্কলারশিপ দেয়। এর একটি হলো মেক্সট স্কলারশিপ।

আবেদন বা ভর্তি হতেও কোনো ফি লাগে না। মাসিক উপবৃত্তি, বিমানে যাতায়াত খরচসহ নানা সুযোগ-সুবিধা মেলে এ বৃত্তি পেলে। আইইএলটিএস কিংবা টোয়েফল ছাড়াই করা যায় আবেদন। তবে এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি হতে হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এ স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

‘মেক্সট’ কী

জাপানে পড়াশোনার জন্য অন্যতম একটি বৃত্তি হলো ‘মেক্সট’/ MEXT। এটি আসলে MECSST। শব্দটি প্রকৃতপক্ষে Ministry of Education, Culture, Sports, Science and Technology। বড়সড় শব্দটির সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ‘মেক্সট’। ১৯৫৪ সাল থেকে শুরু করে বিশ্বের প্রায় ১৬০টির মতো দেশ থেকে আসা ছাত্রদের জন্য এ বৃত্তি দেয় জাপান সরকার। জাপান সরকার প্রদত্ত বৃত্তিগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে খ্যাতনামা আর সবচেয়ে সম্মানিত। এ বৃত্তির জন্য ভিসা পেলে ভিসাতে লেখা থাকে ‘Govt.

Scholar’। জাপানের গবেষণার মাধ্যমে বৃত্তিপ্রাপ্তির দেশ এবং জাপানের মধ্যে বন্ধুত্বের সেতু হয়ে ওঠা মানবসম্পদকে উৎসাহিত করা এবং উভয় দেশ ও বৃহত্তর বিশ্বের উন্নয়নে অবদান রাখার লক্ষ্যেই দেওয়া হয় এ বৃত্তি।

জাপান সরকারের সেই মেক্সট বৃত্তির জন্য আবেদন গ্রহণ চলছে। ২০২৫ সালে জাপানে গবেষণা (স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি), স্নাতক, কলেজ অব টেকনোলজি এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং প্রোগ্রামে যুক্ত হতে চাইলে আবেদন করতে পারেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গত ৩০ এপ্রিল প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গবেষণা পর্যায়ে (মাস্টার্স ও পিএইচডি) ৩০ জন, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে ২৫ জন, কলেজ অব টেকনোলজি প্রোগ্রামের জন্য ১৫ জন এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং কলেজের জন্য ৫ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হবে। নির্বাচিতদের জাপান দূতাবাসে অনুষ্ঠেয় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের জন্য কিছু শর্তের কথা উল্লেখ আছে।

বৃত্তিপ্রাপ্তদের নিজ নিজ দেশ থেকে জাপানে আসার জন্য ও ঠিক সময়ে ডিগ্রি শেষে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য বিমানভাড়া মেক্সট বহন করে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো রকম টিউশন ফি, পরীক্ষার ফি বা অন্যান্য কোনো ফি দিতে হয় না। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর যাবতীয় ফি মওকুফ এবং পাবলিক বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি ও অন্যান্য ব্যয়ভার বহন করে দেশটি।

মাস্টার্স ও পিএইচডিতে ৩০ জন, আন্ডারগ্র্যাজুয়েটে ২৫ জন, কলেজ অব টেকনোলজি প্রোগ্রামে ১৫ জন এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং কলেজের জন্য ৫ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হবে।ছবি: সংগৃহীত

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইন্দোনেশিয়ায় বৃত্তিতে স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডিতে পড়াশোনার সুযোগ

ভ্রমণের কারণে এবং মুসলিম বিশ্বের দেশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া আমাদের অনেকের কাছে পরিচিত। এই দেশটির উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলো নানা বৃত্তি দেয় প্রতিবছর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটাস সেবেলাস মারেট (ইউএনএস) বৃত্তির ঘোষণা দিয়েছে। পূর্ণ এবং আংশিক দুই স্কলারশিপে অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচডিতে পড়াশোনার সুযোগ আছে। তবে সব বিষয়ে বৃত্তির ব্যবস্থা থাকলেও মেডিকেল অনুষদে বৃত্তির সংখ্যা কম বা আসন সীমিত।

২০২৬ সালের আগস্ট সেশনের জন্য এখন আবেদন চলছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা স্নাতক, মাস্টার্স এবং পিএইচডি পর্যায়ে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। বৃত্তির পাশাপাশি নিজ খরচেও শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারবেন। আবেদনের আগে সব নিয়ম এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে।

বৃত্তির ধরন—

১. পূর্ণ বৃত্তি (Full Scholarship)

*সম্পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ

*মাসিক ভাতা: স্নাতক পর্যায়ে ১৫ লাখ রুপিয়া, মাস্টার্সে ১৭ লাখ ৫০ হাজার রুপিয়া এবং পিএইচডি পর্যায়ে ২২ লাখ ৫০ হাজার রুপিয়া পাবেন শিক্ষার্থীরা।

*বিনা মূল্যে ইন্দোনেশিয়ার ভাষা শিক্ষার কোর্স

*স্বাস্থ্যবিমা

২. আংশিক বৃত্তি (Partial Scholarship)

*টিউশন ফি মওকুফ

*বিনা মূল্যে ইন্দোনেশিয়ান ভাষা শিক্ষার কোর্স

*স্বাস্থ্যবিমা

আবেদনের যোগ্যতা—

*আবেদনকারীকে ইন্দোনেশিয়ার বাইরের দেশের নাগরিক হতে হবে

*স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনার জন্য আবেদনকারীর বয়স ২৪ বছরের কম হতে হবে

*অপরাধমূলক মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বা শরণার্থী নয় এমন শিক্ষার্থী হতে হবে

*ইংরেজিতে দক্ষতা থাকতে হবে। টোয়েফলে কমপক্ষে ৪৫০ (বিজ্ঞান)/৫০০ (সমাজবিজ্ঞান) বা সমান স্কোর থাকতে হবে

*ইউএনএস-এ পড়ার ব্যাপারে আগ্রহ থাকতে হবে

*অনলাইন সাক্ষাৎকারে ইচ্ছুক হতে হবে

*সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে

আরও পড়ুনহার্ভার্ডসহ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমানের, বাবা–মা’র তিন সূত্রেই বাজিমাত০৬ আগস্ট ২০২৫

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট—

*সদ্য তোলা ছবি (জেপিজি/পিএনজি, সর্বোচ্চ ৩০০ কেবি)

*পাসপোর্ট (কমপক্ষে ১৮ মাসের মেয়াদসহ)

*সনদপত্র ও ট্রান্সক্রিপ্ট (ইংরেজি বা ইন্দোনেশিয়ান)

*সাম্প্রতিক সময়ে নেওয়া স্বাস্থ্য সনদ

*জীবনবৃত্তান্ত (বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম্যাটে)

*আর্থিক বিবরণী (বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম্যাটে)

*পার্সোনাল স্টেটমেন্ট (বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম্যাটে)

*ইংরেজি দক্ষতার সনদ

*ইন্দোনেশিয়ান ভাষার সনদ (যদি থাকে)

*দুটি রেফারেন্স লেটার (শুধু মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য)

*গবেষণা প্রস্তাব (শুধু পিএইচডির জন্য)

*ফরম্যাট লিংক

আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের দিল সুখবর, অগ্রাধিকারে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া২২ ঘণ্টা আগে

বৃত্তির মেয়াদ—

*স্নাতক: ৮ সেমিস্টার

*মাস্টার্স: ৪ সেমিস্টার

*পিএইচডি: ৬ সেমিস্টার

জিপিএ রাখতে হবে কমপক্ষে: সমাজবিজ্ঞান: ৩ এবং প্রকৌশল ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে ২ দশমিক ৭৫।

আবেদনের পদ্ধতি—

১. Letter of Offer ডাউনলোড করুন

২. কোর্স তালিকা ঘুরে দেখুন

৩. নিজ দেশের ইন্দোনেশিয়ান দূতাবাস/কনস্যুলেটে যোগাযোগ করে রিকমেন্ডেশন লেটার নিন।

৪. অনলাইন আবেদন করুন

আবেদনের শেষ সময়: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য ঢুঁ মারুন

আরও পড়ুনকমনওয়েলথ ফেলোশিপে আবেদনের সুযোগ, মাসে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকার সঙ্গে নানা সুবিধা৩০ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইন্দোনেশিয়ায় বৃত্তিতে স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডিতে পড়াশোনার সুযোগ
  • বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ: ‘রিকমেন্ডেশন’ লেটার কেন ‘তদবির’ হয়ে ওঠে