জাপানের মেক্সট বৃত্তি, মাসে ১ লাখ ১৭ হাজার ইয়েন, একাদশ উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদেরও সুযোগ
Published: 5th, May 2025 GMT
বাংলাদেশিসহ বিশ্বের অনেক দেশের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য পছন্দের অন্যতম দেশ জাপান। এর অন্যতম কারণ পড়ালেখার মান। দেশটিও পকেটর অর্থ খরচের পাশাপাশি স্কলারশিপে পড়াশোনার সুযোগ আছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন স্কলারশিপ দেয়। এর একটি হলো মেক্সট স্কলারশিপ।
আবেদন বা ভর্তি হতেও কোনো ফি লাগে না। মাসিক উপবৃত্তি, বিমানে যাতায়াত খরচসহ নানা সুযোগ-সুবিধা মেলে এ বৃত্তি পেলে। আইইএলটিএস কিংবা টোয়েফল ছাড়াই করা যায় আবেদন। তবে এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি হতে হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এ স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
‘মেক্সট’ কীজাপানে পড়াশোনার জন্য অন্যতম একটি বৃত্তি হলো ‘মেক্সট’/ MEXT। এটি আসলে MECSST। শব্দটি প্রকৃতপক্ষে Ministry of Education, Culture, Sports, Science and Technology। বড়সড় শব্দটির সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ‘মেক্সট’। ১৯৫৪ সাল থেকে শুরু করে বিশ্বের প্রায় ১৬০টির মতো দেশ থেকে আসা ছাত্রদের জন্য এ বৃত্তি দেয় জাপান সরকার। জাপান সরকার প্রদত্ত বৃত্তিগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে খ্যাতনামা আর সবচেয়ে সম্মানিত। এ বৃত্তির জন্য ভিসা পেলে ভিসাতে লেখা থাকে ‘Govt.
জাপান সরকারের সেই মেক্সট বৃত্তির জন্য আবেদন গ্রহণ চলছে। ২০২৫ সালে জাপানে গবেষণা (স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি), স্নাতক, কলেজ অব টেকনোলজি এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং প্রোগ্রামে যুক্ত হতে চাইলে আবেদন করতে পারেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গত ৩০ এপ্রিল প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গবেষণা পর্যায়ে (মাস্টার্স ও পিএইচডি) ৩০ জন, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে ২৫ জন, কলেজ অব টেকনোলজি প্রোগ্রামের জন্য ১৫ জন এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং কলেজের জন্য ৫ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হবে। নির্বাচিতদের জাপান দূতাবাসে অনুষ্ঠেয় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের জন্য কিছু শর্তের কথা উল্লেখ আছে।
বৃত্তিপ্রাপ্তদের নিজ নিজ দেশ থেকে জাপানে আসার জন্য ও ঠিক সময়ে ডিগ্রি শেষে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য বিমানভাড়া মেক্সট বহন করে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো রকম টিউশন ফি, পরীক্ষার ফি বা অন্যান্য কোনো ফি দিতে হয় না। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর যাবতীয় ফি মওকুফ এবং পাবলিক বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি ও অন্যান্য ব্যয়ভার বহন করে দেশটি।
মাস্টার্স ও পিএইচডিতে ৩০ জন, আন্ডারগ্র্যাজুয়েটে ২৫ জন, কলেজ অব টেকনোলজি প্রোগ্রামে ১৫ জন এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং কলেজের জন্য ৫ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হবে।ছবি: সংগৃহীতউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরির প্রস্তুতি: নোবেল পুরস্কার ২০২৫ সংক্রান্ত যত তথ্য
চাকরির পরীক্ষায় নানা প্রশ্নই আসে। নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে সম্প্রতি। প্রায় সব পরীক্ষাতেই নোবেল পুরস্কার নিয়ে এক বা একাধিক প্রশ্ন আসে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক ২০২৫ সালের নোবেল পুরস্কার ও বিজয়ীদের সম্পর্কে জরুরি কিছু তথ্য।
নোবেল পুরস্কার প্রচলন হয় ১৯০১ সালে। এ বছর ১২৫তম নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। ৬টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়েছেন ৯টি দেশের ১৪ জন।
অর্থনীতি মূল নোবেল পুরস্কারের অন্তর্ভুক্ত নয়। ১৯৬৯ সালে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোবেল পুরস্কারের প্রতিষ্ঠাতা আলফ্রেড নোবেলের স্মরণে এই পুরস্কার চালু করে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৫৭ জন এই পুরস্কার পেয়েছেন। আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অর্থনীতিতে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুরস্কার—এটাই এই পুরস্কারের কেতাবি নাম। তবে এটি নোবেল পুরস্কার হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।
আর্থিক সম্মাননা
নোবেল বিজয়ীরা আর্থিক সম্মাননা হিসেবে পান ১১ মিলিয়ন বা ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (প্রায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন বা ১২ লাখ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১৪ কোটি টাকা)। কোনো শাখায় একাধিক ব্যক্তি মনোনীত হলে আর্থিক পুরস্কার তাঁদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনমেট্রোরেল সম্পর্কে জেনে নিন ৩৫টি প্রশ্ন০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫পদার্থবিজ্ঞান
অবদান: ম্যাক্রোস্কোপিক কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং এবং ইলেকট্রিক সার্কিটে এনার্জি কোয়ান্টাইজেশন তাঁদের গবেষণার বিষয়। কোয়ান্টাম মেকানিকসের ক্ষুদ্রাতীত কণার আচরণ কীভাবে আমাদের পরিচিত বড় আকারের মানবসৃষ্ট বস্তু বা অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে সফলভাবে প্রয়োগ করেছেন তাঁরা। এটিকে বিভিন্ন কোয়ান্টাম প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা যাবে। এর মাধ্যমে কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করা সম্ভব।
১. জন ক্লার্ক (ব্রিটেন)
পিএইচডি: কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৬৮
বর্তমান কর্মস্থল: যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
২. মিশেল এইচ দ্যভোরে (ফ্রান্স)
পিএইচডি: প্যারিস-সুড বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৮২
বর্তমান কর্মস্থল: যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
৩. জন এম মার্টিনিস (যুক্তরাষ্ট্র)
পিএইচডি: ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৮৭ (জন ক্লার্ক এর অধীনে)
বর্তমান কর্মস্থল: ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। এ ছাড়া তিনি কিউল্যাব এর চিফ টেকনোলজি অফিসার।
আরও পড়ুনতিন প্রশ্নেই মাপা হয় মেধার ঝলক২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫রসায়ন
অবদান: ‘ধাতব-জৈব কাঠামো’ বা ‘মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে নতুন একধরনের আণবিক কাঠামো আবিষ্কারের জন্য তাঁদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে মরুভূমির বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ, কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ, বিষাক্ত গ্যাস সংরক্ষণ বা রাসায়নিক বিক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যায়।
১. সুসুমু কিতাগাওয়া (জাপান)
পিএইচডি: জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৭৯
বর্তমান কর্মস্থল: কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
২. রিচার্ড রবসন (যুক্তরাজ্য)
পিএইচডি: যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৬২
বর্তমান কর্মস্থল: অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
৩. ওমর এম ইয়াঘি (জর্ডান)
ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারের সন্তান। জর্ডান ছাড়াও তিনি সৌদি আরব ও মার্কিন নাগরিক। তাঁকে রেটিকুলার কেমিস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
পিএইচডি: ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯০
বর্তমান কর্মস্থল: ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
চিকিৎসা
অবদান: পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স তথা শরীরের রোগপ্রতিরোধক কোষ জীবাণুদের আক্রমণ করতে গিয়ে যেন নিজের টিস্যু বা অঙ্গকে আক্রমণ না করে, সেই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁরা এমন কোষ খুঁজে বের করেছেন, যাকে ‘রেগুলেটরি টি সেল’ বলা হয়, যা দেহের নিজস্ব কোষে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার আক্রমণ রোধ করে।
আরও পড়ুনকোন চাকরি সত্যিই ভালো—যাচাই করুন ৫ মানদণ্ডে২১ অক্টোবর ২০২৫১. ম্যারি ই. ব্রুনকো (যুক্তরাষ্ট্র)
বর্তমান কর্মস্থল: যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের ইনস্টিটিউট ফর সিস্টেমস বায়োলজির সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার।
২. ফ্রেড রামসডেল (যুক্তরাষ্ট্র):
বর্তমান কর্মস্থল: সান ফ্রান্সিসকোর সোনোমা বায়োথেরাপিউটিকসের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা।
৩. শিমন সাকাগুচি (জাপান)
বর্তমান কর্মস্থল: জাপানের ওসাকা ইউনিভার্সিটির ইমিউনোলজি ফ্রন্টিয়ার রিসার্চ সেন্টারের অধ্যাপক।
সাহিত্য
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই (হাঙ্গেরি)
সংক্ষিপ্ত জীবনী: জন্ম ৫ জানুয়ারি ১৯৫৪। বর্তমান বয়স ৭১ বছর। তিনি হাঙ্গেরির নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত দ্বিতীয় সাহিত্যিক। পাঁচটি উপন্যাস লিখেছেন। ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (পটভূমি অনুরূপ এক প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকা)। তাঁর ফিকশনের বিষয়ে বলা হয়, মানুষের জীবনে কঠোরভাবে রক্ষিত থাকে যেসব গোপনীয়তা, সেসব তিনি তুলে ধরেন তাঁর লেখায়।
অবদান: ভয় ও ধ্বংসের সময়েও শিল্পের শক্তিকে মনে করিয়ে দেওয়া তাঁর অনুপ্রেরণামূলক ও দূরদর্শী কাজের জন্য।
শান্তি
মারিয়া কোরিনা মাচাদো (ভেনেজুয়েলা)
সংক্ষিপ্ত জীবনী: জন্ম ৭ অক্টোবর ১৯৬৭। তিনি একজন রাজনীতিবিদ ও শিল্প প্রকৌশলী। তাঁর রাজনৈতিক দলের নাম ভেনতে ভেনেজুয়েলা। ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ২০১২ সালে।
অবদান: ভেনেজুয়েলার জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার জন্য।
অর্থনীতি
অবদান: উদ্ভাবননির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাখ্যা। ঐতিহাসিক উপাত্ত ও দলিল ব্যবহার করে মোকির দেখিয়েছেন, কীভাবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও উদ্ভাবন একসময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে নিয়মিত বিষয়ে পরিণত করেছে। আগিয়োঁ ও হাউইট সেই প্রবৃদ্ধির অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন।
আর্থিক সম্মাননার অর্ধেক পেয়েছেন জোয়েল মোকির। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধির পূর্বশর্তগুলো শনাক্ত করার জন্য তিনি পুরস্কার পেয়েছেন। ‘সৃজনশীল বিনাশ’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধির তত্ত্ব দেওয়ার জন্য বাকি অর্ধেক সম্মাননা যৌথভাবে পেয়েছেন ফিলিপ আগিয়োঁ ও পিটার হাউইট।
রয়টার্স