যশোরে বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের একটি মামলা থেকে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ৬৭ নেতা-কর্মীকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। সোমবার বিকেলে মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লস্কর সোহেল রানা এ আদেশ দেন।

মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, জেলা জামায়াতের তৎকালীন আমির আবদুর রশিদ, জেলা জামায়াতের বর্তমান আমির গোলাম রসুল, যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলাম, গোলাম রেজা, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম, যুবদলের তৎকালীন সভাপতি এহসানুল হক, রিপন চৌধুরী, তৎকালীন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন, জামায়াত নেতা নূর ই আলী আল মামুন ও বিএনপি নেতা আবদুল সালাম আজাদ।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে সদর পুলিশ ফাঁড়ির টিএসআই রফিকুল ইসলাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, জামায়াত-বিএনপি জোটের নেতা-কর্মীরা শহরের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (আরএন) সড়কে নাশকতার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছেন। তাৎক্ষণিক পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে শাকিল হোসেন ও সিরাজুল ইসলামকে আটক করে। এ সময় উদ্ধার করা হয় দুটি পেট্রলবোমা, অবিস্ফোরিত ছয়টি ককটেল, বিস্ফোরিত ককটেলের অংশবিশেষ ও কয়েকটি লাঠি। এ ঘটনায় সদর পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন টিএসআই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে জামায়াত-বিএনপির ৫১ নেতা-কর্মীকে আসামি করে নাশকতার পরিকল্পনা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

এ মামলার তদন্ত শেষে এসআই সোয়েব উদ্দিন আহম্মেদ বিস্ফোরক ও নাশকতার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকায় জামায়াত-বিএনপির ৬৭ নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে আলাদা অভিযোগপত্র জমা দেন। পরবর্তী সময়ে মামলার বিস্ফোরকের অংশ জেলা ও দায়রা জজ এবং নাশকতার পরিকল্পার অংশ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্থানান্তর করা হয়। সোমবার জুডিশিয়াল আদালতে বিচারাধীন এ মামলার অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য ছিল। আসামিরা আইনজীবীর মাধ্যমে আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিতে উভয় পক্ষের বক্তব্য শেষে বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে মামলা থেকে তাঁদের অব্যাহতির আদেশ দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, এই মামলার অব্যাহতি থেকে বোঝা যায়, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে বিচারব্যবস্থা কেমন ছিল। এখন বিচারব্যবস্থা স্বাধীন বলেই বিচারক মামলার সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ না থাকায় মামলা থেকে সব আসামিকে অব্যাহতি দিয়েছেন। বিগত সরকার এভাবে বিরোধীদলীয় নেতাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করেছে। এই মামলা থেকে নেতা-কর্মীরা অব্যাহতি পাওয়ায় তাঁরা খুশি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: তৎক ল ন ব এনপ র ন শকত র ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই প্রত্যাহার

সন্ত্রাসীদের নিয়ে গভীর রাতে চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকির অভিযোগে কলাবাগান থানার ওসিসহ এক এসআইকে সাময়িক প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল রোববার তাদের প্রত্যাহার করা হয়। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- ওসি মোক্তারুজ্জামান ও এসআই বেলাল হোসেন।

আজ সোমবার ডিএমপির মুখপাত্র উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কোন অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের সাময়িক প্রত্যাহার করা হলো এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশাসনিক কারণে কলাবাগান থানার ওসিসহ এক এসআইকে সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট ড. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, সন্ত্রাসীদের নিয়ে গভীর রাতে কলাবাগান থানার ওসির চাঁদাবাজি, অর্থ আদায়, ভাঙচুর, লুটপাট ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকির অভিযোগের সঠিক তদন্ত ও যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত ২৯ এপ্রিল রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে কলাবাগান থানার এসআই বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য ও ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসী আমার বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়ে। আমার ম্যানেজার ৯৯৯ এ ফোন করলে এক গাড়ি পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিমের দুটি গাড়ি এসে বাড়ির সংলগ্ন মেইন রাস্তায় থামে। ম্যানেজার দেখতে পান কলাবাগান থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান নিউমার্কেট ও শাহবাগের টহল টিমকে চলে যেতে বলেন। শাহবাগ ও নিউ মার্কেটের টহল টিমকে সংবাদ দেওয়ার জন্য আমার এক ষাটোর্ধ্ব ভাড়াটিয়া লাল মিয়া ও নাইট গার্ড লুৎফরকে কলাবাগান থানার ওসি পুলিশের গাড়িতে তুলতে নির্দেশ দেন। যা আমার বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে।

তিনি বলেন, বাসার ভেতর ঢুকে মান্নান নামের একজন পুলিশ সদস্য আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে এক কোটি টাকা দিতে পারলে আমার থানায় যেতে হবে না। বাড়িতে রেখে যাবে। কী মামলা হয়েছে জানতে চাইলে তারা জানায় কোনো মামলা হয়নি, তারা টাকার জন্য এসেছে।

যদি টাকা না দেই আমার বিরুদ্ধে ১০টা মামলা হবে। অনেক দেন দরবার করার পর আমি দুই লাখ টাকা পুলিশ সদস্য বেলাল ও মান্নানের হাতে তুলে দেই। ব্যাংকিং আওয়ারের মধ্যে বাকি টাকা দেওয়ার শর্তে তিনজন সিভিল ড্রেস পরা ব্যক্তিকে আমার পাহারায় রেখে যায়। তারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দেয়।

ভুক্তভোগী ড. আব্দুল ওয়াদুদ আরও বলেন, এ ঘটনায় ২ মে ডিএমপি কমিশনার বরার একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাঁদাবাজি ও মামলায় ফাঁসানোর হুমকি, কলাবাগান থানার ওসিসহ বরখাস্ত ৩
  • চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি, কলাবাগান থানার ওসিসহ বরখাস্ত ৩
  • চাঁদাবাজি-লুটপাটের অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই সাময়িক বরখাস্ত
  • কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই প্রত্যাহার
  • কুষ্টিয়ায় দুই পুলিশ সদস্যকে আসামির হাতুড়িপেটা