জাতীয় বাজেটের ১৫% স্বাস্থ্যে রাখার প্রস্তাব কমিশনের
Published: 6th, May 2025 GMT
স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন বলেছে, জনমুখী, সহজলভ্য ও সর্বজনীন স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। নিম্ন আয়ের মানুষকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি সংবিধানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে আইনি অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিশন।
গতকাল সোমবার সকালে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এখনো একটি ন্যায্য, মানবিক ও টেকসই স্বাস্থ্যব্যবস্থা গঠনের পথে দৃশ্যমান বাধাগুলোকে কাটিয়ে উঠতে পারেনি। দুর্নীতি, সক্ষমতার ঘাটতি, ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এবং চিকিৎসাশিক্ষার নিম্নমান ভবিষ্যতের জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে উঠেছে। দেশের স্বাস্থ্য খাত আজ জটিল বাস্তবতার মুখোমুখি।
স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে সরকার বছরের পর বছর বরাদ্দ কম দিয়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলে আসছেন। গত এক দশকের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, জাতীয় বাজেটের গড়ে ৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয় স্বাস্থ্যে। অন্যদিকে জিডিপির অংশ ২ শতাংশ কখনো ছাড়ায়নি। স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন মনে করে, স্বাস্থ্যে জিডিপির অন্তত ৫ শতাংশ এবং জাতীয় বাজেটের ১৫ শতাংশ বরাদ্দ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
দুর্নীতি, সক্ষমতার ঘাটতি, ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এবং চিকিৎসাশিক্ষার নিম্নমান ভবিষ্যতের জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে উঠেছে। দেশের স্বাস্থ্য খাত আজ জটিল বাস্তবতার মুখোমুখি।গতকাল প্রধান উপদেষ্টাকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদন দেওয়ার পর স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্যরা ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তাঁরা প্রতিবেদনের নানা দিক সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। ওই অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রধান ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, কমিশন বাস্তব কিছু সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করা, স্বাস্থ্যসেবার জন্য পৃথক কমিশন করা, সেবা বিকেন্দ্রীকরণ করা—এই প্রস্তাবগুলো গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের ৩২২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তু ও সুপারিশ উপস্থাপন করেন কমিশনের সদস্য ও ক্যানসার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সৈয়দ আকরাম হোসেন। তিনি বলেন, প্রতিবেদন তৈরির জন্য বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে তাঁরা ৩২টি সভা করেছেন, ঢাকার বাইরে আটটি জেলা শহরে পরামর্শ সভা হয়েছে এবং কমিশনের ১২ জন সদস্য নিজেরা সভা করেছেন ৫১টি। পাশাপাশি অভিজ্ঞ ব্যক্তি, সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়েছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে দেশের আট বিভাগের ৮ হাজার ২৫৬ জন প্রাপ্তবয়স্কের মতামত জরিপ করা হয়। ওই জরিপের মতামতও কমিশন গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।
স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন মনে করে, স্বাস্থ্যে জিডিপির অন্তত ৫ শতাংশ এবং জাতীয় বাজেটের ১৫ শতাংশ বরাদ্দ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।টেকসই অর্থায়ন দরকারসংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্র বা সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় স্বাস্থ্য খাত নেই। বিগত ১৫ বছরের বাজেট বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বরাদ্দের দিক থেকে স্বাস্থ্য এখনো নিচের দিকে—৮ নম্বরে। এগিয়ে থাকা অন্য খাতগুলো হচ্ছে জনপ্রশান, শিক্ষা, পরিবহন ও যোগাযোগ, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন, প্রতিরক্ষা, কৃষি এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ।
প্রতিবদনের এই অংশ অর্থাৎ ‘স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়ন’ অধ্যায়টি লেখার মূল দায়িত্বে ছিলেন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) বিজ্ঞানী আহমদ এহসানূর রহমান। সংবাদ সম্মেলন শেষে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইনবিষয়ক কিছু সংস্কার ছাড়া বাকি প্রায় সব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে হলে অর্থ প্রয়োজন। বাজেট বরাদ্দ কম রেখে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি আমরা স্বাস্থ্য খাতে টেকসই অর্থায়নের কিছু সুপারিশও করেছি।’
সুপারিশে বলা আছে, সরকারকে এখনই স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে, সামগ্রিক জনস্বাস্থ্য ব্যয় জিডিপির অন্তত ৫ শতাংশ এবং মোট বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, এই বিনিয়োগের মাধ্যমে সেবা বিস্তৃত হবে, ব্যক্তিগত ব্যয় কমবে, জনগণের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য অবকাঠামো, জনবল ও আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী যেসব দেশ সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনে এগিয়ে আছে, তারা স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ বা তার বেশি ব্যয় করছে।
আইনবিষয়ক কিছু সংস্কার ছাড়া বাকি প্রায় সব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে হলে অর্থ প্রয়োজন। বাজেট বরাদ্দ কম রেখে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা সম্ভব না।আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী আহমদ এহসানূর রহমান‘স্বাস্থ্য অর্থায়ন সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নসহ প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতে টেকসই অর্থায়নের ব্যাপারে ৩৩টি সুপারিশ করা হয়েছে। তামাক, চিনিযুক্ত পানীয়, এনার্জি ড্রিংক, বুকের দুধের বিকল্প পণ্য, ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত প্যাকেটজাত খাবার, অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার বা এই ধরনের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধি করতে হবে এবং কর থেকে প্রাপ্ত অর্থের একটি অংশ স্বাস্থ্যের জন্য নির্ধারণ করতে হবে। একইভাবে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসবহুল পণ্যের ওপর কর চালু বা কর বাড়িয়ে অর্জিত আয়ের একটি অংশ স্বাস্থ্যের জন্য রাখতে হবে। করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা কাজে লাগিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা তহবিল, স্বাস্থ্য উন্নয়ন প্রবাসী বন্ড চালু, সামাজিক বিমা চালুর কথা সুপারিশে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ক্রয় ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়িয়ে অর্থের সাশ্রয় করার কথা প্রতিবেদনে বলা আছে।
তামাক, চিনিযুক্ত পানীয়, এনার্জি ড্রিংক, বুকের দুধের বিকল্প পণ্য, ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত প্যাকেটজাত খাবার, অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার বা এই ধরনের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধি করতে হবে এবং কর থেকে প্রাপ্ত অর্থের একটি অংশ স্বাস্থ্যের জন্য নির্ধারণ করতে হবে।সেবা বিনা মূল্যে ও আরও কিছুসংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন প্রস্তাব দিয়েছে, অতি দরিদ্র ২০ শতাংশ মানুষ বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা পাবে। এদের ১০ শতাংশ চিকিৎসাসেবা পাবে সরকারি হাসপাতাল থেকে এবং বাকি ১০ শতাংশ সেবা পাবে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে।
প্রতিবেদনে বলা আছে, যারা অতি দরিদ্র, তারা যেকোনো কাছাকাছি প্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে সব ধরনের সেবা পাবেন। প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে ১০ শতাংশ দরিদ্র রোগীকে বিনা মূল্যে অন্তর্বিভাগ ও বহির্বিভাগ পরিষেবা, ওষুধ ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা দিতে হবে। ১০ শতাংশ দরিদ্র রোগীকে একই সেবা বিনা মূল্যে দেবে বেসরকারি হাসপাতাল। তবে প্রতিবেদনে এ কথাও বলা আছে যে এটি নতুন কোনো শর্ত নয়। এটি ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতাল পরিচালনার প্রাথমিক শর্ত, যা রাজনৈতিক ও অন্য কোনো কারণে অতীতে বাস্তবায়িত হয়নি।
এ ব্যাপারে সংস্কার কমিশনের সদস্য আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই বিষয়টিকে যেন বাধ্যতামূলক করা হয়, সে জন্য আমরা প্রতিবেদনে রেখেছি।’
প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে ১০ শতাংশ দরিদ্র রোগীকে বিনা মূল্যে অন্তর্বিভাগ ও বহির্বিভাগ পরিষেবা, ওষুধ ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা দিতে হবে। ১০ শতাংশ দরিদ্র রোগীকে একই সেবা বিনা মূল্যে দেবে বেসরকারি হাসপাতাল।উন্নত সেবা পাওয়ার ব্যাপারে আরও কিছু সুপারিশ করেছে কমিশন। তারা বলেছে, একজন চিকিৎসক একজন রোগীকে কমপক্ষে ১০ মিনিট সময় দিয়ে দেখবেন, এই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য প্রতি সপ্তাহে চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র নমুনা যাচাই পদ্ধতি চালু করার কথা বলেছে কমিশন।
সরকারি হাসপাতালে সপ্তাহে সাত দিনে ২৪ ঘণ্টা ফার্মেসি চালু রাখার কথা বলা হয়েছে। সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রগুলোর দৈনিক কার্যক্রম সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত (পাঁচ দিন) বাড়াতে হবে। সময় বাড়ালে বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভরতা কমবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ওষুধশিল্প স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে, যা অভ্যন্তরীণ চাহিদার ৯৮ শতাংশ উৎপাদন করে। তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষ ওষুধ পায়। কমিশন ওষুধ গবেষণায় প্রণোদনার সুপারিশ করেছে।
সরকারি হাসপাতালে সপ্তাহে সাত দিনে ২৪ ঘণ্টা ফার্মেসি চালু রাখার কথা বলা হয়েছে। সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রগুলোর দৈনিক কার্যক্রম সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত (পাঁচ দিন) বাড়াতে হবে। সময় বাড়ালে বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভরতা কমবে।সবচেয়ে সহজ ও সবচেয়ে কঠিন প্রস্তাব কোনটিসংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকেরা জানতে চেয়েছিলেন, বাস্তবায়নের জন্য সবচেয়ে সহজ ও সবচেয়ে কঠিন প্রস্তাব কোনটি? এই প্রশ্নের উত্তর তিনজন কমিশন সদস্য তিন রকম দিয়েছেন।
কমিশনের সদস্য ও পথিকৃৎ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক লিয়াকত আলী বলেন, আইন সংস্কারের সুপারিশ প্রতিবেদনে বলা আছে। এটা সরকার চাইলেই করতে পারে। এখন অধ্যাদেশ জারি করে করা সম্ভব। এটা সহজ। সবচেয়ে কঠিন, মানসিকতার পরিবর্তন। এটা সাধারণ মানুষ ও নীতিনির্ধারক সবার জন্যই কঠিন।
কমিশনের আরেকজন সদস্য ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিস গঠনের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেটা বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। এটা করতে নানা বাধার মুখে পড়তে হবে। এ ছাড়া সমন্বয়ের যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নও কঠিন হবে।
কমিশন সদস্য ও আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী আহমদ এহসানূর রহমান বলেন, কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন করা কঠিন বা সহজ নয়। দেখতে হবে কোন সুপারিশ বা সুপারিশগুলো গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলোকে গুচ্ছ পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যকে পণ্য হিসেবে না দেখে কমিশন সদস্যরা স্বাস্থ্যকে সেবা হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। একটি জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রের সেটাই করা উচিত।’
জরুরি সেবা ও অ্যাম্বুলেন্সকে ভুললে চলবে নাসংবাদ সম্মেলনের প্রায় শেষ পর্যায়ে আইসিডিডিআরবির পরামর্শক ও কমিশন সদস্য আজহারুল ইসলাম খান বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, জরুরি চিকিৎসাসেবা এবং অ্যাস্বুলেন্স সেবা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়নি। তিনি বলেন, দেশে জরুরি সেবার অবস্থা খুবই করুণ। বেসরকারি খাতে কোনো জরুরি সেবা নেই। সরকারি খাতে যা আছে, তা পর্যাপ্ত নয়। একই অবস্থা অ্যাম্বুলেন্স সেবার ক্ষেত্রেও দেখা যায়। এই দুটি বিষয়ে সাংবাদিকদের সোচ্চার হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
নারীর জন্য পৃথক ইনস্টিটিউটসংস্কার কমিশন নারীর জন্য পৃথক ‘জাতীয় নারী স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে। এই প্রতিষ্ঠান নারীর বিশেষায়িত সেবা, রেফারেল ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশন সদস্য ও নারী স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সায়েবা আক্তার বলেন, নারীস্বাস্থ্যের বিষয়ে মাতৃ ও প্রজননস্বাস্থ্যের মধ্যেই আলোচনা আটকে থাকে। কিন্তু নারীর আরও বহুবিধ স্বাস্থ্য সমস্যা আছে। দেশে ২০–২২টা বিশেষায়িত হাসপাতাল আছে। কিন্তু নারীর স্বাস্থ্য সমস্যা দেখার, বোঝার কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। এটা এখন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ বক্তা ছিলেন কমিশনের সদস্য ছাত্র প্রতিনিধি ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী উমাইর আফিফ। তিনি বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান সংস্কার কমিশনগুলো তৈরির সুযোগ করে দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপট মনে রাখা উচিত।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব স থ য র জন য শ দর দ র র গ ক আইস ড ড আরব স প র শ কর ছ প রস ত ব দ র জন য প ব যবস থ ব সরক র সদস য ও এই প র বর দ দ র ওপর সবচ য় ট কসই
এছাড়াও পড়ুন:
কিশোরগঞ্জে আনন্দ মিছিলে বিএনপি নেতার মৃত্যু, অসুস্থ ৩
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আনন্দ মিছিলে অংশ নেওয়া এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়েছে। এসময় অসুস্থ হয়ে পড়েন আরো তিনজন। তারা পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
অতিরিক্ত গরমে স্ট্রোক করে বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসক।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরের দিকে উপজেলা সদরের পাটমহালে ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
রাজবাড়ীতে বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু
ফেরার কথা ছিল নতুন বউ নিয়ে, ফিরল নিথর দেহ
মারা যাওয়া আল আমিন ভূইয়া (৪৮) উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়নের কন্দরপদী গ্রামের হাজী রোকন উদ্দিনের ছেলে। তিনি পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য ছিলেন।
পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাভোকেট জালাল উদ্দীন জানান, পাকুন্দিয়া উপজেলা, পৌরসভা বিএনপি এবং সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ও পলায়ন দিবস পালন উপলক্ষে আনন্দ মিছিলের আয়োজন করা হয় আজ। বেলা পৌনে ১২টার দিকে বুরুদিয়া ইউনিয়ন থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে পাকুন্দিয়া বাজারের পাটমহালে অবস্থিত উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে যান।
তিনি আরো জানান, এসময় ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আল আমিন ভূইয়াসহ চারজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক আল আমিন ভূইয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদের জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনার পর আজকের আনন্দ মিছিল বাতিল করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নূর-এ-আলম খান জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত গরমে তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঢাকা/রুমন/মাসুদ