চুয়াডাঙ্গায় এবার জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম দিন (১৫ মে) থেকে আম বাজারজাতকরণ শুরু হচ্ছে। পরিপক্ব আঁটি, গুটি ও বোম্বাই আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হবে। মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে কৃষি বিভাগ, আমচাষি ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সময়সীমা বেঁধে দেয় জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে যৌথ সভায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার, অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষ্ণ রায়, কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো.
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে পরিপক্ব আম সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণে চুয়াডাঙ্গা জেলার ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ প্রণয়ন করা হয়। চাষিদের অনুরোধে এবার আম সংগ্রহের সময় জাতভেদে এক থেকে তিন দিন করে এগিয়ে আনা হয়েছে। গত বছর ১৬ মে আম সংগ্রহ শুরু হয়েছিল। এবার ১৫ মে সকালে জেলা ফল ও আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রফাতুল্লাহ মহলদারের বাগানে আঁটি, গুটি ও বোম্বাই আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আম সংগ্রহ করা হবে।
এ ছাড়া ২২ মে থেকে হিমসাগর, ২৮ মে থেকে ল্যাংড়া, ৫ জুন থেকে আম্রপালি (বারি আম-৩), ১৫ জুন থেকে ফজলি এবং ২৮ জুন থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ সংগ্রহ ও বাজারজাত শুরু হবে। গত বছর ২৪ মে থেকে হিমসাগর, ৩০ মে থেকে ল্যাংড়া, ৭ জুন থেকে আম্রপালি ও ১ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ সংগ্রহ শুরু হয়েছিল।
খুলনা বিভাগের অন্যতম আম উৎপাদনকারী জেলা সাতক্ষীরায় ইতিমধ্যে আম সংগ্রহ ও বাজারজাত শুরু হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় আবহাওয়া ও উৎপাদিত আমের বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে এ সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এতে পরিপক্ব আম বিক্রি করে চাষিরা ন্যায্যমূল্য পাওয়ার পাশাপাশি ক্রেতারা ভালো মানের আমের স্বাদ নিতে পারবেন।
সভায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গার উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ভালো ফলনের আশা করা হচ্ছে। জেলায় ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান আছে। হেক্টরপ্রতি ১৫ মেট্রিক টন হিসাবে এবার ৩৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, স্বাদে-গন্ধে চুয়াডাঙ্গার আমের দেশজুড়ে সুনাম আছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলো। উল্লিখিত সময়কাল অনুসরণ করে আম সংগ্রহ করতে হবে; কোনো অবস্থাতেই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে অপরিপক্ব আম পাড়া যাবে না। আম পাকানো বা সংরক্ষণের জন্য কোনো রাসায়নিক ব্যবহার করা যাবে না। অবৈধ প্রক্রিয়ায় আম পাকানো হলে বা পাকানোর উদ্দেশ্যে মজুত করা হলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ ও নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা ফল ও আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রফাতুল্লাহ মহলদার বলেন, প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়কাল অনুযায়ী তাঁরা আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করবেন। তিনি প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে নিতে সবাইকে উৎসাহিত করবেন বলেও জানান।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
সিপিবির ১৩তম কংগ্রেস ১৯-২২ সেপ্টেম্বর, ঠিক হবে ‘রণকৌশল’
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ১৩তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৯ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর। ১৯ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) বেলা তিনটায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কংগ্রেসের উদ্বোধনী অধিবেশন হবে। উদ্বোধনী পর্ব শেষে বিএমএ মিলনায়তনে শুরু হবে কাউন্সিল অধিবেশন। এবারের কংগ্রেস থেকে ১৭ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সিপিবির রণকৌশল নির্ধারণ ও ভবিষ্যতের লড়াই-সংগ্রামের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
সিপিবির কংগ্রেস সামনে রেখে আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সিপিবির কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান আবু সাইদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন সিপিবির ১৩তম কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মিহির ঘোষ। বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমও। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন।
সিপিবির নেতারা বলেন, সমাজবদলের লক্ষ্যে শোষণ-বৈষম্যবিরোধী বাম গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে সিপিবির ত্রয়োদশ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে সারা দেশে দলের শাখা, থানা, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। জেলা সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন মোট ৫২৫ জন প্রতিনিধি। এ ছাড়া ২৬ জন পর্যবেক্ষক কংগ্রেসে অংশ নেবেন। দেড় শতাধিক ভেটেরান (অভিজ্ঞ) সদস্যকে কংগ্রেসে সম্মাননা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নানা বাস্তবতায় সিপিবির এবারের কংগ্রেসে বিদেশি সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা যোগদান করছেন না। তবে ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে সিপিবির কংগ্রেস উপলক্ষে শুভেচ্ছাবার্তা আসতে শুরু করেছে। এবারের কংগ্রেস থেকে ১৭ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে সিপিবির আগামী দিনের সংগ্রাম, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সিপিবির রণনীতি-রণকৌশল নির্ধারণসহ ভবিষ্যতের লড়াই-সংগ্রামের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। সাংগঠনিক সক্ষমতা জোরদার করার লক্ষ্যে সিপিবির এই কংগ্রেস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সিপিবির ১৩তম কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির মিডিয়া উপপরিষদের আহ্বায়ক লাকী আক্তার সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য, সম্পাদক, সদস্য এবং কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির বিভিন্ন উপপরিষদের নেতারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।