কানসাটে ‘আম সম্মেলনে’ সারা দেশের আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের মিলনমেলা
Published: 6th, May 2025 GMT
দেশের বিভিন্ন জেলার আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘আম সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দেশের সবচেয়ে বড় আমের মোকাম শিবগঞ্জের কানসাটে এ সম্মেলনের আয়োজন করে তরুণ আমচাষি ও উদ্যোক্তাদের সংগঠন ম্যাঙ্গো ডেভেলপমেন্ট ফোরাম। এতে সারা দেশের নিবন্ধিত ৩৫০ জন আমচাষি ছাড়াও কৃষিবিদ, উদ্যানতত্ত্ববিদ ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
কানসাটের রাজবাড়ী মাঠে বেলা ১১টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আবদুস সামাদ। শিবগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌফিক আজিজের সভাপতিত্বে সম্মেলনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচারের উপপরিচালক মঞ্জুরে মাওলা, শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মিয়া, আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণাকেন্দ্রের (আম গবেষণাকেন্দ্র) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোর্শেদুল বারী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রীতি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুঞ্জের আলম, শিবগঞ্জ ম্যাঙ্গো ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক আহসান হাবীব প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আয়োজক সংগঠনের সদস্য আমচাষি ইসমাইল খান। আম–সংক্রান্ত গবেষণা নিয়ে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোর্শেদুল বারী। এতে তিনি রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনে কী কী মৌলিক বিষয় অনুসরণ করতে হবে, আম গবেষণাকেন্দ্র কী কাজ করছে, তা তুলে ধরেন। নিরাপদ ও রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনের কলাকৌশল উপস্থাপন করেন কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মিয়া। আমের প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্পর্কে ধারণা দেন কৃষি উদ্যোক্তা মুঞ্জের আলম।
সম্মেলনে আকর্ষণীয় বিষয় ছিল বিলুপ্তপ্রায় নানা জাতসহ ৫০ জাতের আমের প্রদর্শনী। আয়োজক সংগঠনের সদস্য ইসমাইল খান প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে আম উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণন ও রপ্তানি খাতের সব অংশীজনকে এক ছাতার নিচে এনে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও তথ্যের আদান–প্রদান নিশ্চিত করাই ফোরামের মূল কাজ।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আম বিক্রি করেন মো.
সিরাজগঞ্জ থেকে এসেছেন শাহীন আলম নামের আরেকজন বিক্রেতা। আম সম্মেলনের মাঠে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আম নিয়ে এত বড় সম্মেলন আগে দেখিনি। এখানে এসে আমচাষিদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। আম কীভাবে পরিচর্যা করা হয়, জানতে পারলাম। এত জাতের আম আছে, আগে জানতাম না। সত্যি, আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ। আমরা তরুণ উদ্যোক্তা। আমাদের এসব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সামনে আরও এগিয়ে যেতে পারব।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আম বিক্রেতা নাহিদ পারভেজ পাবনা থেকে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘আম সম্মেলন উপলক্ষে এখানে এসে অনেক উদ্যোক্তার সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। কীভাবে নিরাপদ আম উৎপাদন করা হয়, জানতে পেরেছি। সব মিলিয়ে খুব ভালো লাগল।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ইনব বগঞ জ প ল য টফর ম কর মকর ত শ বগঞ জ ব যবস স গঠন আমচ ষ
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ
বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।
দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।
পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।
বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’
সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসীসম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।
এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।
সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।
রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা