বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনার মামলায় আসামি গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে, ঢাকা মহানগর পুলিশের এমন সিদ্ধান্ত (অফিস আদেশ) স্থগিত করে দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ১৯ মে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক আজ বুধবার এ আদেশ দেন।

গত ২৩ এপ্রিল হাইকোর্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনার মামলায় আসামি গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এমন সিদ্ধান্তের (অফিস আদেশ) কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সেদিন হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ গত সপ্তাহে আপিল বিভাগে আবেদন করে। আবেদনটি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের আজকের কার্যতালিকায় ১৬৩ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ শুনানি করেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো.

রুহুল কুদ্দুস, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন।

এর আগে গত ৯ এপ্রিল ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় করা মামলায় আসামি গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে অফিস আদেশ জারি করা হয়। এর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন গত ২০ এপ্রিল রিটটি করেন। গত ২৩ এপ্রিল শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দিয়ে ওই অফিস আদেশের কার্যক্রম স্থগিত করেন। রুলে ৯ এপ্রিলের সিদ্ধান্ত (অফিস আদেশ) কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের সদর দপ্তর থেকে কমিশনারের পক্ষে ৯ এপ্রিল ‘অফিস আদেশ’ জারি করেন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন। অফিস আদেশের ভাষ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-সংক্রান্ত মামলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা অধিক। এসব মামলার এজাহারভুক্ত কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণসহ অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গ্রেপ্তার করতে হবে। উপযুক্ত প্রমাণ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলার এজাহারভুক্ত কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ষ ট রপক ষ আপ ল ব ভ গ

এছাড়াও পড়ুন:

ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। 

এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল। 

পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।

অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”

তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”

ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”

ঢাকা/শাহীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণ আদায়ে লাগবে ৩৩৩ বছর
  • ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ