রূপগঞ্জের ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আদালত পাড়ায় মানববন্ধন
Published: 7th, May 2025 GMT
রূপগঞ্জে কায়েতপাড়া ইউনিয়নে আবাসন প্রকল্পের নামে জমি ক্রয় না করে সম্পূর্ণ বেআইনী ও অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু ফেলে ফসলী জমি, খেলার মাঠ, রাস্তাঘাট ভরাট করে ফেলার বিরুদ্ধে
প্রতিবাদে ৯ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকার জমি মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার (৭ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জজ কোর্ট প্রাঙ্গনে ভুক্তভোগীরা মানববন্ধনে এ দাবি জানান।
এসময় ভুক্তভোগীরা জানান, রূপগঞ্জ থানার কায়েতপাড়া ইউনিয়নে আবাসন প্রকল্পের নামে কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠী জমি ক্রয় না করে এবং জমির মালিককে না জানিয়ে তাকে কোন ক্ষতিপূরণ না দিয়ে জমিতে লাল নিশান উড়িয়ে সম্পূর্ণ বেআইনী ও অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু ফেলে ফসলী জমি, খেলার মাঠ, রাস্তাঘাট ভরে ফেলছে।
এমনকি জমির মালিকদের কাঁচা ধান পাকার সুযোগ না দিয়ে মালিকপক্ষকে ফসলের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে তাদের জমির মধ্য দিয়ে অত্যাধুনিক মেশিন ভেকু লাগিয়ে দ্রুততার সাথে প্রশস্ত পাকা রাস্তা নির্মান করা হচ্ছে যা বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধান বিরোধী।
ফলে কায়েতপাড়ার সর্বস্তরের জনগন অতিসত্বর বালু ভরাট বন্ধের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের ডিসি ও অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের নিকট দাবী জানাই। জমি ক্রয় না করে অবৈধভাবে বালু ভরাট বা রাস্তাঘাট নির্মান করা যাবে না।
জমি না কিনে ইতিমধ্যেই অবৈধভাবে বালি ভরাটকৃত জমির ন্যায্যমূল্য সহ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ জমির মালিককে প্রদান করতে হবে। আবাসন প্রকল্প অবশ্যই বসত বাড়ির বাইরে থাকতে হবে। অবিলম্বে আবাসন প্রকল্পের উঊগঅজঈঅঞওঙঘ/সীমানা নির্ধারন করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী আবাসন প্রকল্প নির্মান করতে হবে।
প্রকল্প এলাকায় আবাসন প্রকল্পের ম্যাপ টানিয়ে রাখতে হবে। বসতবাড়ি থেকে কমপক্ষে ১০০০ ফিট দূরে আবাসন প্রকল্পের সীমানা বা ইঙটঘউঅজণ থাকতে হবে।
আবাসন প্রকল্পের কোন রাস্তা করতে হলে বসতবাড়ির মধ্য দিয়ে করা যাবে না। একান্ত প্রয়োজনে বসতবাড়ির মধ্য দিয়ে করতে হলে অবশ্যই বাড়ির মালিককে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ সহ তাকে প্রকল্পের মধ্য থেকে একটি প্লট বরাদ্ধ করতে হবে।
আর যদি ফসলি জমির মধ্য দিয়ে রাস্তা করা হয় তবে অবশ্যই রাস্তা নির্মানের জন্য জমির ন্যায্যমূল্য এবং ফসলের ক্ষতিপূরণ অবশ্যই জমির মালিককে প্রদান করতে হবে।
ক্ষতিপূরণ দেয়ার আগে কোনভাবেই বাড়ির মালিককে উচ্ছেদ করা যাবেনা। জমির প্রকৃত মালিক ও দখলে থাকা ব্যক্তির নিকট থেকে জমি ক্রয় করতে হবে।
ওয়ারিশ এর নিকট থেকে জমি ক্রয়ের নামে কমমূল্যে জমি ক্রয় করে জমির প্রকৃত মালিক ও দখলদারকে উচ্ছেদকরা যাবে না।বসতবাড়ির চেয়ে উঁচু করে বালু ভরাট করা যাবে না।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ বসতব ড় ন করত
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রামের নারীদের মানববন্ধন, পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হয়রানির অভিযোগ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এক মাসের বেশি সময় ধরে পুরো গ্রাম প্রায় ‘পুরুষশূন্য’ বলে দাবি করেছেন নারীরা। আজ মঙ্গলবার কড়ইবাড়ি গ্রামের শতাধিক নারী এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে অভিযোগ করেন, তাঁদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হয়রানি করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রামের বেশির ভাগ পুরুষ এলাকাছাড়া। দীর্ঘ সময় তাঁরা এলাকাছাড়া থাকায় তাঁদের সংসারে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কড়ইবাড়ি স্ট্যান্ড এলাকায় কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন নারীরা।
গত ৩ জুলাই সকালে উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে ‘মব’ সৃষ্টি করে মা, মেয়ে, ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়। তাঁরা হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২৯)। হত্যাকাণ্ডের পরদিন ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা করেন রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার।
মামলায় ইতিমধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আলোচিত তিন খুনের এক মাস পেরিয়ে গেলেও প্রধান আসামি স্থানীয় আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ এখনো গ্রেপ্তার হননি।
আজ দুপুরে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া গ্রামের বাসিন্দা জামিলা আক্তার বলেন, তিন খুনের ঘটনায় প্রকৃত অপরাধী ছাড়াও নিরীহ গ্রামবাসীকে হয়রানি করা হচ্ছে। এতে আতঙ্কে গত এক মাসের বেশি ধরে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে পুরো কড়ইবাড়ি গ্রাম। এ ছাড়া ঘটনাটি নিয়ে একটি পক্ষ ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। যার কারণে গ্রামের পুরুষেরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকায় ফিরে আসছেন না।
জায়েদা বেগম নামের আরেক নারী বলেন, ‘আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি বিনা অপরাধে বাড়িছাড়া। এতে পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমরা চাই যারা প্রকৃত অপরাধী, তাদের বিচার হোক। কিন্তু গ্রামের সবাইকে যেন হয়রানি না করা হয়।’
সালমা বেগম বলেন, এক মাসের বেশি সময় ধরে গ্রাম পুরুষশূন্য থাকায় চুরি-ডাকাতিরও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে গ্রামের সবার মধ্যে। সব মিলিয়ে গ্রামের নারীরা আতঙ্কে আছেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত নিরীহ একজন মানুষকেও হয়রানি করা হয়নি। তাঁরা শুরু থেকেই মামলাটি নিয়ে সতর্ক। গ্রামবাসীর আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়, তাদের গ্রামে ফিরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া প্রসঙ্গে নয়ন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই যারা ঘটনায় জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করছি না।’