‘মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ লেখা চিরকুটে আরও যা ছিল
Published: 7th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা র্যাব কর্মকর্তা পলাশ সাহার (৩৭) মরদেহের পাশেই পড়ে ছিল একটি চিরকুট। সেটির শুরুর লাইনেই নিজের মৃত্যুর দায় নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। সংক্ষিপ্ত চিরকুটটি মূলত পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশেই লেখা। আজ বুধবার দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সেটি ঘুরে বেড়িয়েছে। তরুণ র্যাব কর্মকর্তা কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন, এ নিয়ে ছিল আলোচনা। মেধাবী এই পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।
গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা পলাশ সাহা ৩৭তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন। র্যাবে তিনি সহকারী পুলিশ কমিশনার পদে কর্মরত ছিলেন। আজ বুধবার দুপুরে নগরের চান্দগাঁও ক্যাম্পে অভিযানের প্রস্তুতি চলছিল। এ জন্য নিজের কক্ষে যান তিনি। এ সময় সহকর্মীরা গুলির শব্দ শুনে ছুটে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান তাঁকে। নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পলাশ আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে র্যাব কর্তৃপক্ষ। তাঁর রক্তাক্ত মরদেহের পাশেই পড়ে ছিল চিরকুটটি। কী লেখা ছিল সেই চিরকুটে? র্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশেই শেষ কথাগুলো বলে গেছেন তিনি।
চিরকুটে নিজের স্ত্রী ও মাকে সম্বোধন করে কিছু কথা বলেছেন তিনি। তার আগে নিজের মৃত্যুর দায় নিজেই নিয়েছেন। ভাই ও বোনকে অনুরোধ করেন মাকে দেখে রাখার। চিরকুটের হস্তাক্ষর পলাশ সাহার বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেছে র্যাব।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার উত্তর জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থলে পলাশ সাহার পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। সকালে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মুঠোফোনে তিনি কথাও বলেছেন। এরপরই এমন ঘটনা ঘটল। প্রাথমিকভাবে ধারণ করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরেই তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন। নিহত র্যাব কর্মকর্তার লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ব কর মকর ত পল শ স হ
এছাড়াও পড়ুন:
বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠায় আইন মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট
সারা দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠাসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্ট থেকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
প্রস্তাবে জেলা জজদের মধ্য থেকে বাণিজ্যিক আদালতের বিচারক নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়টি উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি কর্তৃক হাইকোর্ট বিভাগে বাণিজ্যিক আপিল বেঞ্চ গঠনের বিষয়টিও প্রস্তাবে উঠে এসেছে। প্রস্তাবে মামলা দায়েরের আগে মধ্যস্থতাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে মামলা দায়েরের আগেই অনেক বিরোধ আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি হবে এবং আদালতের ওপর মামলার ক্রমবর্ধমান চাপ অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোনো বাণিজ্যিক মামলা বা আবেদনের মূল্যমান ৫০ লাখ টাকা হলে তা বাণিজ্যিক আদালতে বিচার্য হবে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার সময়ে সময়ে এই নির্ধারিত মূল্যমান সীমা পুনর্নির্ধারণ করতে পারবে।
সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ব্যবসায়ী, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বণিকদের সাধারণ লেনদেন থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, বিমান ও নৌপরিবহন, নির্মাণ ও অবকাঠামোগত প্রকল্প, ফ্র্যাঞ্চাইজ চুক্তি, বিতরণ ও লাইসেন্সিং, প্রযুক্তি উন্নয়ন, ট্রেডমার্ক, কপিরাইট, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ডোমেইন নাম, ভৌগোলিক নির্দেশক, বিমা এবং অংশীদারত্ব চুক্তি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পরিষেবা খাত এবং শেয়ারহোল্ডার বা যৌথ উদ্যোগ–সম্পর্কিত বিরোধকে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালতের এখতিয়ারভুক্ত করার কথা প্রস্তাবে বলা হয়েছে। এর ফলে আধুনিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ–সম্পর্কিত প্রায় সব ধরনের বিরোধ একটি বিশেষায়িত আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা যায়।
বিচারপ্রক্রিয়াকে দ্রুত ও কার্যকর করার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ করার বিষয়ে প্রস্তাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চূড়ান্ত শুনানি অবশ্যই ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব এড়াতে সংক্ষিপ্ত বিচারের সুযোগও প্রস্তাবে রাখা হয়েছে।
প্রস্তাবে আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আর বলা হয়, বাণিজ্যিক আপিল আদালত ছয় মাসের মধ্যে এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। প্রস্তাবে বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা ও কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন, বিচারক ও আইনজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণ এবং ধারাবাহিক পেশাগত উন্নয়নের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।