রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী ছিল বৃহস্পতিবার। এ উপলক্ষে দেশব্যাপী তিন দিনের অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়েছে। সংগীত, নৃত্য, কবিতা ও আলোচনার মাধ্যমে স্মরণ করা হচ্ছে কবিকে।

জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান চলছে কবির স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহের কুঠিবাড়ীতে। আজ সকালে এর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে শিল্পকলা একাডেমি। একই সঙ্গে শিলাইদহে গ্রামীণ মেলার আয়োজন করেছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভার্চুয়াল বক্তব্যে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক হীনমন্যতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফরহাদ সিদ্দিক। স্মারক বক্তব্য রাখেন ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক মনসুর মুসা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.

মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।

সরেজমিন দেখা যায়, ব্যানার, ফেস্টুন ও আল্পনার মাধ্যমে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে শিলাইদহের কুঠিবাড়ী। সামনে উন্মুক্ত মঞ্চে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দূরদূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন রবীন্দ্রভক্তরা। কুঠিবাড়ীর বাইরে আমবাগানে বসেছে গ্রামীণ মেলা।

এদিকে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার পতিসরে আলোচনা সভা, রবীন্দ্রসংগীত, কবিতা পাঠ, নাট্য মঞ্চায়ন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ। তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাসঙ্গিকতা কখনও পুরোনো হয় না।’ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়ালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার। আলোচক ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, বগুড়া সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসেন, নওগাঁ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম প্রমুখ।

অন্যদিকে, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে জন্মবার্ষিকী আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এর উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল খালেক। আব্দুল খালেক বলেন, ‘এ অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে তাঁর ছিল মানবিক সম্পর্ক।’ এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নিসা। আলোচনা করেন সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রাফাত আলম। আলোচনা শেষে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা এবং আবৃত্তি পরিবেশন করেন বর্ণমালা, অক্ষর ও উচ্চারণ আবৃত্তি সংগঠনের শিল্পীরা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স স ক ত ব ষয়ক ম হ ম মদ অন ষ ঠ ন রব ন দ র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষিত শিশুর স্বজনের সঙ্গে অশালীন আচরণ করা চিকিৎসক বরখাস্ত

চিকিৎসাধীন ধর্ষণের শিকার এক শিশুর স্বজনের সঙ্গে অশালীন আচরণের ভিডিও ভাইরালের পর পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবুল কাশেমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের পার-৩ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বরখাস্তের তথ্য জানানো হয়।

আরো পড়ুন:

নোয়াখালী হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান, ৭ দালালের কারাদণ্ড

জলবায়ু পরিবর্তনে বদলাচ্ছে রোগের চিত্র, বাড়ছে বিরল সংক্রমণ 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘‘তার আচরণ ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য করে তাকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন তিনি প্রচলিত নিয়মে খোরপোশ ভাতা পাবেন।’’

পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, “বরখাস্তের আদেশ আমরা পেয়েছি। এখন পর্যন্ত তার পরিবর্তে স্থায়ীভাবে কাউকে দেওয়া হয়নি। যেহেতু তিনি আবাসিক মেডিকেল অফিসার ছিলেন, তাই গত শুক্রবার থেকে তাকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ডা. রাহিমুল।”

গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ধর্ষণের শিকার এক শিশুর স্বজনদের সঙ্গে ডা. আবুল কাশেমের অশালীন আচরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়ভাবে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকেও তাকে শোকজ করা হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ফেসবুক পোস্টে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ কপি শেয়ার করে লিখেছেন, “পঞ্চগড় জেলার একমাত্র সদর হাসপাতালকে আমরা জনগণের আস্থার জায়গা হিসেবে দেখতে চাই, যেখানে সেবা হবে মুখ্য। আমরা ডাক্তারদের পাশে থাকতে চাই, তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সেগুলো সমাধান করতে চাই। রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে সক্ষমতার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করতে চাই। কিন্তু কোনো পদবী বা পেশাকে অপব্যবহার করে কেউ যদি জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, সাধারণ মানুষের ন্যূনতম আত্মসম্মানকে মূল্য না দেয়, তাহলে আমরা নির্দ্বিধায় সাধারণ মানুষের কণ্ঠ হয়ে কাজ করব। অন্যায় করে আর কেউ পার পেয়ে যাবে না ইনশাআল্লাহ।”

ঢাকা/নাঈম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ