স্তালিনগ্রাদের লড়াই কি হিটলারের পতন ডেকে এনেছিল
Published: 9th, May 2025 GMT
অ্যাডলফ হিটলার। জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর। নাৎসিবাদী রাজনীতি করে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। সাম্রাজ্যবাদী আকাঙ্ক্ষা মেটাতে প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডে আক্রমণ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধিয়ে দেন। পাঁচ বছর ধরে চলে সেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। শেষ পর্যন্ত পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে সপরিবারে আত্মহত্যা করেন হিটলার। এতে তাঁর নাৎসি বাহিনীর মনোবল ভেঙে যায়। দিনটি ছিল ১৯৪৫ সালের ৭ মে। ইতিহাসের এই দিনে হিটলারের নাৎসি বাহিনী আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয়। এর মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
হিটলারের উত্থানঅ্যাডলফ হিটলার ১৮৮৯ সালে অস্ট্রিয়ার ব্রাউনাউ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। চিত্রশিল্পী হওয়ার জন্য ভিয়েনার আর্ট কলেজে ভর্তি হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দুবার আবেদন করেও ব্যর্থ হন। মাঝখানে কয়েকটি বছর কেটে যায়।
এরপর ১৯১৩ সালে জার্মানির মিউনিখে চলে যান হিটলার। পরের বছর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে জার্মান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কৃতিত্বের জন্য একাধিক পদকও পান।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ‘জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টি’ আলোচনায় আসে। দলটির ওপর নজরদারি করতে হিটলারকে মিউনিখে পাঠানো হয়। হিটলার দলটির কিছু সভায় অংশ নেন। তাদের অনেক চিন্তাভাবনার সঙ্গে একমত হন। ১৯১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি সেই দলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
নাৎসি পার্টির ইতিহাস১৯২০ সালে দলটির নাম পরিবর্তন করে ‘ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টি’ করা হয়, যা পরে নাৎসি পার্টি নামে পরিচিতি পায়। ১৯২১ সালে নাৎসি পার্টির নেতৃত্বে আসেন হিটলার।
১৯২৩ সাল নাগাদ নাৎসি পার্টির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। মাঝখানে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯৩২ সালনাগাদ জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলে পরিণত হয় নাৎসি পার্টি।১৯২৩ সাল নাগাদ নাৎসি পার্টির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। মাঝখানে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯৩২ সাল নাগাদ জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলে পরিণত হয় নাৎসি পার্টি।
হিটলারকে চ্যান্সেলরের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট পল ফন হিন্ডেনবার্গ। ১৯৩৩ সালের ৩০ জানুয়ারি চ্যান্সেলর হন হিটলার।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধচ্যান্সেলর হয়ে পার্লামেন্টে আইন পাস করিয়ে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হন হিটলার। ১৯৩৪ সালের আগস্টে হিন্ডেনবার্গ মারা যান। এরপর চ্যান্সেলর ও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব একাই পালন করতে শুরু করেন হিটলার। নিজেকে জার্মানির ‘ফুয়েরার বা সর্বোচ্চ নেতা’ ঘোষণা করেন।
অ্যাডলফ হিটলার ও ইভা ব্রাউন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জনপ র য়
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ‘৮টি বিমান’ ভূপাতিত করা হয়েছে: ট্রাম্পের নতুন দাবি
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বুধবার আবার দাবি করেছেন, গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত তিনিই থামিয়েছিলেন। তবে তিনি এবার সংঘাতে যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার সংখ্যায় বদল এনেছেন। ///এবার তিনি বলেছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের ভারতে হামলার সময় ‘আটটি বিমান’ গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বিশ্বের সব যুদ্ধ ও সংঘাত বন্ধে তাঁর করা বাণিজ্য চুক্তি ও শুল্কের হুমকি হচ্ছে বড় হাতিয়ার।
গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামির ‘আমেরিকান বিজনেস ফোরামে’ বক্তৃতাকালে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন শক্তির মাধ্যমে সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করছে। কারণ, কেউ তাদের সঙ্গে ‘ঝামেলা করতে আসবে না’।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যেসব বাণিজ্য চুক্তি করেছে, সেগুলোর উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, তাঁর প্রশাসন চীন, জাপান ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে। এরপর তিনি আবারও দাবি করেন, তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের আট মাসে তিনি ‘আটটি যুদ্ধ’শেষ করেছেন।
ভারত ও পাকিস্তানের ‘সংঘাতের অবসান’ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, তিনি যখন দিল্লি ও ইসলামাবাদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সই করার প্রায় মাঝামাঝি সময়ে ছিলেন তখনই তিনি শুনতে পান, এই দুটি প্রতিবেশী দেশ ‘যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে’। তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, তারা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তাঁর প্রশাসন কোনো দেশের সঙ্গেই কোনো চুক্তি করবে না।
বিজনেস ফোরামের অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি দুই দেশের সঙ্গেই বাণিজ্য চুক্তি করার মাঝামাঝি জায়গায় ছিলাম। তখনই আমি একটি নির্দিষ্ট খবরের কাগজের প্রথম পাতায় পড়লাম, তারা যুদ্ধ করতে যাচ্ছে। সাত বা আটটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। মূলত আটটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল।’
ট্রাম্পের এই সংখ্যা তাঁর আগের দাবির সংখ্যার থেকে ভিন্ন। প্রথমে তিনি বলেছিলেন তিনটি বিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। এরপর জুলাই মাসে তিনি সংখ্যাটি বাড়িয়ে পাঁচ করেন। পরে আগস্টে সংখ্যাটি আরও বাড়িয়ে সাত করা হয়। আর এখন, ট্রাম্পের কাছে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় গুলি করে নামানো বিমানের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ‘৮-এ’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বন্ধের হুমকি দেওয়ার পরই ‘আমি একটি ফোন কল পেলাম, তারা শান্তি চায়। তারা থেমে গেল। আমি বললাম ধন্যবাদ, চলুন ব্যবসা করি। এটা দারুণ না?’
ট্রাম্প এর আগেও বারবার দাবি করেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘পুরোপুরি ও দ্রুত’ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার কৃতিত্ব তাঁর প্রশাসনের।
তবে ভারত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারত জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইসলামাবাদের সঙ্গে উত্তেজনা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কোনো ধরনের মধ্যস্থতার জন্য তৃতীয় পক্ষের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।