অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের আজকের জরুরি বৈঠক থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ফয়সালা চায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে চলমান গণজমায়েত কর্মসূচিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, ‘এই বৈঠক (উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক) থেকে যেন সব ফয়সালা হয়ে যায়। আমাদের যেন আর পথে নামতে না হয়।’ তিনি সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এরপর যদি মাঠে নামতে হয়, তাঁরা নতুন সরকারের জন্য মাঠে নামবেন। অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেবেন।’

আজ বেলা তিনটার পর থেকে শাহবাগ মোড়ে গণজমায়েত শুরু হয়েছে। সাড়ে তিনটা থেকে শাহবাগ মোড়ের ডিজিটাল স্ক্রিনের নিচে সিঁড়ির ওপর অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। চারটার দিকে সেখানে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান।

গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজপথে নামতে হবে, এটা আমরা ভাবিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা নয়। কারণ, ৫ আগস্ট মানুষ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এখন এই সরকারের দায়িত্ব হলো গেজেট প্রকাশ করা।’ তিনি বলেন, ৮ আগস্ট ক্ষমতা নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ ছিল প্রথমেই গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট শক্তিকে নিষিদ্ধ করা।

আজকে সন্ধ্যায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের খবর পেয়েছেন উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘এই বৈঠক থেকে যেন সব ফয়সালা হয়ে যায়। আমাদের যেন আর পথে নামতে না হয়। এরপর যদি আমাদের মাঠে নামতে হয়, আমরা কিন্তু নতুন সরকারের জন্য নামব। আপনাদের পেছন থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেব। আমাদের কথা পরিষ্কার, আজকে সন্ধ্যায় আমরা ফয়সালা চাই।’

অনেক পক্ষ জুলাই চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করার চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেন গাজী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ‘ভিন্ন দল, মত, আদর্শ আমাদের থাকতে পারে, কিন্তু জুলাই প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। জুলাইয়ের চেতনা থেকে কেউ যেন আমাদের বিচ্যুত করতে না পারে। শুধু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে নয়, আগামীতে যাতে নতুন কোনো ফ্যাসিবাদ মাথা উঁচু করে না দাঁড়াতে পারে, সে জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

গাজী আতাউর রহমানের পরই বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমাদ। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটা খুনি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, টাকা পাচারকারী দল। তাদের কাছে দেশ নিরাপদ ছিল না। তাদের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। আওয়ামী লীগ পরিচয়ে বাংলাদেশে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন যাঁরা করতে চান, তাদের এই বিশ্বাসঘাতকতা কেউ মেনে নেবে না।’

ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর শাখার নেতা-কর্মীরা ছাড়াও দলের সহযোগী সংগঠন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা শাহবাগের গণজমায়েতে যোগ দিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর উপদ ষ ট সরক র র আম দ র শ হব গ আওয় ম ইসল ম ফয়স ল

এছাড়াও পড়ুন:

শিমুলিয়ায় নৌবন্দর গড়ে তোলা হবে: নৌ উপদেষ্টা

নৌপরিবহন এবং কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শিমুলিয়ায় একটি নৌবন্দর প্রয়োজন। আগেই পরিকল্পনা ছিল, সেখানে একটি পূর্ণাঙ্গ নৌবন্দর করা হবে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। শিমুলিয়া নৌবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে নদীমাতৃক দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন গতি আসবে। সরকার স্থায়ীভাবে শিমুলিয়াতে একটি নৌবন্দর গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

বুধবার বিকেলে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ঘাট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মো. সলিম উল্লাহ, জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার গোসেন মোল্লা, পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াছমিন খাতুনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ফেরি সংকট কমাতে নতুন ফেরি যুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ছয়টি নতুন ফেরি বহরে যুক্ত করা হয়েছে। সারাদেশেই ফেরির সংকট রয়েছে। তবে দক্ষিণাঞ্চলের পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন। সেখানে কার্যকর নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় নেই বললেই চলে। ওই অঞ্চলের মানুষ এক প্রকার বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। তাই তাদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ফেরির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নৌ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমার মনে হয়েছে যেসব প্রকল্প এখন প্রয়োজন নেই, সেগুলো বাদ দিয়ে যেগুলো প্রয়োজন, সেগুলো দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি।

পরে তিনি আরিচা ঘাট ও বিআইডব্লিউটিএরর ড্রেজার বেজ পরিদর্শন করেন। এর পর তিনি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হন। এ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ