উপদেষ্টা পরিষদের আজকের বৈঠকেই আ.লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে ফয়সালা হতে হবে: ইসলামী আন্দোলন
Published: 10th, May 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের আজকের জরুরি বৈঠক থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ফয়সালা চায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে চলমান গণজমায়েত কর্মসূচিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, ‘এই বৈঠক (উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক) থেকে যেন সব ফয়সালা হয়ে যায়। আমাদের যেন আর পথে নামতে না হয়।’ তিনি সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এরপর যদি মাঠে নামতে হয়, তাঁরা নতুন সরকারের জন্য মাঠে নামবেন। অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেবেন।’
আজ বেলা তিনটার পর থেকে শাহবাগ মোড়ে গণজমায়েত শুরু হয়েছে। সাড়ে তিনটা থেকে শাহবাগ মোড়ের ডিজিটাল স্ক্রিনের নিচে সিঁড়ির ওপর অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। চারটার দিকে সেখানে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজপথে নামতে হবে, এটা আমরা ভাবিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা নয়। কারণ, ৫ আগস্ট মানুষ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এখন এই সরকারের দায়িত্ব হলো গেজেট প্রকাশ করা।’ তিনি বলেন, ৮ আগস্ট ক্ষমতা নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ ছিল প্রথমেই গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট শক্তিকে নিষিদ্ধ করা।
আজকে সন্ধ্যায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের খবর পেয়েছেন উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘এই বৈঠক থেকে যেন সব ফয়সালা হয়ে যায়। আমাদের যেন আর পথে নামতে না হয়। এরপর যদি আমাদের মাঠে নামতে হয়, আমরা কিন্তু নতুন সরকারের জন্য নামব। আপনাদের পেছন থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেব। আমাদের কথা পরিষ্কার, আজকে সন্ধ্যায় আমরা ফয়সালা চাই।’
অনেক পক্ষ জুলাই চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করার চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেন গাজী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ‘ভিন্ন দল, মত, আদর্শ আমাদের থাকতে পারে, কিন্তু জুলাই প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। জুলাইয়ের চেতনা থেকে কেউ যেন আমাদের বিচ্যুত করতে না পারে। শুধু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে নয়, আগামীতে যাতে নতুন কোনো ফ্যাসিবাদ মাথা উঁচু করে না দাঁড়াতে পারে, সে জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
গাজী আতাউর রহমানের পরই বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমাদ। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটা খুনি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, টাকা পাচারকারী দল। তাদের কাছে দেশ নিরাপদ ছিল না। তাদের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। আওয়ামী লীগ পরিচয়ে বাংলাদেশে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন যাঁরা করতে চান, তাদের এই বিশ্বাসঘাতকতা কেউ মেনে নেবে না।’
ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর শাখার নেতা-কর্মীরা ছাড়াও দলের সহযোগী সংগঠন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা শাহবাগের গণজমায়েতে যোগ দিয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর উপদ ষ ট সরক র র আম দ র শ হব গ আওয় ম ইসল ম ফয়স ল
এছাড়াও পড়ুন:
শনিবার সারাদেশে গণজমায়েত: হাসনাত আবদুল্লাহ
আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করাসহ তিন দফা দাবিতে আগামীকাল শনিবার সারাদেশে গণজমায়েত কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। কেন্দ্রীয়ভাবে বিকেল তিনটায় শাহবাগ মোড়ে গণজমায়েত হবে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবরোধ কর্মসূচিতে হাসনাত আবদুল্লাহ এ ঘোষণা দেন। এছাড়া দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানানো হয়।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আগামীকাল বিকেল তিনটায় গণজমায়েত, সারা ঢাকায় ফ্যাসিবাদ বিরোধী জনতা গণজমায়েতে যুক্ত হবেন। সারাদেশে জুলাইয়ের আন্দোলনের পয়েন্টে গণজমায়েত হবে। এই লড়াই ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পন্থীদের লড়াই। পাঁচ আগস্ট জনগণ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার আইনি ভিত্তি দেওয়ার লড়াই।’
হাসনাত বলেন, ‘আমাদের অবস্থানের ২৫ ঘণ্টা পার হয়েছে। আমরা জানি না আর কতক্ষণ থাকতে হবে। আমরা তিন দফা দাবি আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবস্থান চলবে।’
কর্মসূচিতে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক রাজনীতি করেনি। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেব না। শাপলা, পিলখানা, জুলাইসহ সবগুলো হত্যাকাণ্ড তারা ব্যক্তিগত নয়, দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে গণহত্যা চালিয়েছে। তাদেরকে অবশ্যই দলগত বিচার করতে হবে। আইসিটি আইনে দলের বিচারের ধারা যুক্ত করতে হবে।’
আখতার আরও বলেন, ‘কোনো দলের ডাকে নয় জুলাইয়ের ডাকে আমরা এখানে এসেছি। এ আন্দোলন কোনো দলের নয়, এটা গোটা জুলাই জনতার আন্দোলন। এখনও যারা আসেননি, তারা আসুন। জুলাইয়ে আমরা যেভাবে একত্র হয়েছিলাম, জুলাই ফিরে এসেছে। অবজ্ঞা করবেন না, জুলাই জনতার পাশে এসে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করুন।’
কর্মসূচিতে তিন দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জুলাই ঐক্যের এবি জুবায়ের। এ ছাড়া রাত সাড়ে ১১টায় ইনকিলাব মঞ্চ জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী করেছে।