কৃষকলীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার খানম এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব আশরাফ সিদ্দিকী বিটুকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
শনিবার (১০ মে) সন্ধ্যায় ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, কৃষকলীগ নেত্রী ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার খানম এবং শেখ হাসিনার সহকারী প্রেস সচিব আশরাফ সিদ্দিকী বিটুকে রাজধানীর ঝিগাতলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি।
আরো পড়ুন:
এসএসসি পরীক্ষার্থীকে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জে রিভলবারসহ যুবক গ্রেপ্তার
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিনামূল্যে ৩৬ কোটি টাকার বাতের ইনজেকশন পেল রামেক হাসপাতাল
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল এবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ডিরেক্ট রিলিফ থেকে বিনামূল্যে উচ্চ মূল্যের আধুনিক ইনজেকশন পেয়েছে। বাতসহ বিভিন্ন অটোইমিউন রোগে ব্যবহৃত হয় অ্যাডালিমুমাব নামের এই বায়োলজিক ওষুধ। রামেক হাসপাতাল ৯০০ পিস ইনজেকশন পেয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। প্রতিটি ইনজেকশনের দাম প্রায় ৪ লাখ টাকা হলেও রোগীরা তা পাবেন বিনামূল্যেই।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অ্যাডালিমুমাব মূলত রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস, অ্যাংকাইলোজিং স্পন্ডাইলাইটিস, জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থ্রাইটিসসহ কয়েক রকম অটোইমিউন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। সাধারণ ওষুধে যাদের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আসে না, তাদের জন্য এই ইনজেকশন কার্যকর। একজন রোগীর একাধিক ডোজ নেওয়ারও প্রয়োজন হতে পারে। বায়োলজিক হওয়ায় ওষুধটির উল্লেখযোগ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
রামেকের সঙ্গে ডিরেক্ট রিলিফের যোগাযোগ শুরু হয় কলেজের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শীর্ষ শ্রেয়ানের হাত ধরে। গত জুলাইয়ে এমবিবিএস শেষ করা শীর্ষ বর্তমানে রামেক হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক। পঞ্চম বর্ষে পড়ার সময় তিনি ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএসও) গবেষকদলে যুক্ত হন। তাদের যৌথ গবেষণা আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয় এবং ২০২৪ সালের অক্টোবরে সেরা গবেষণার স্বীকৃতি পায়।
ডিরেক্ট রিলিফের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক গর্ডন উইলকক গবেষণাপত্রটি দেখে শীর্ষকে গত মার্চে ই-মেইল করেন। তিনি জানান, সংস্থাটি রামেককে স্ট্রোক চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যাল্টেপ্লেস দিতে চায়। শীর্ষ বিষয়টি জানালে এতে যুক্ত হন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. আজিজুল হক আযাদ এবং পরে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ।
এ উদ্যোগে গত ২৫ আগস্ট রামেকে পৌঁছায় আড়াই হাজার ভায়াল অ্যাল্টেপ্লেস, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৭ কোটি টাকা। স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ফলে জমাট বাঁধা রক্ত গলাতে ব্যবহৃত এই ওষুধের প্রায় ৬০ শতাংশ ইতোমধ্যেই রোগীদের প্রয়োগ করা হয়েছে রামেক হাসপাতালে।
এ সফলতার পর বাতের ওষুধ আনার উদ্যোগ নেন অধ্যাপক ডা. আজিজুল হক আযাদ। দুই মাস আগে তিনি ডিরেক্ট রিলিফের কাছে আধুনিক বায়োলজিক ইনজেকশন সরবরাহের অনুরোধ করেন। সংস্থাটি দ্রুত সাড়া দেয়। ওষুধটি আনতে প্রয়োজন হয় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুমোদনের ব্যবস্থা করেন।
এরপর গত বুধবার (২৬ নভেম্বর) ওষুধগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় পৌঁছায়। কাস্টমস প্রক্রিয়া শেষ করে শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকালে ৯০০ পিস ইনজেকশন রামেক হাসপাতালে আনা হয়। ইনজেকশনগুলোর মেয়াদ আগামী বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। এই সময়সীমার মধ্যেই রোগীদের দেওয়া হবে।
অধ্যাপক ডা. আজিজুল হক আযাদ বলেন, “বাংলাদেশে অ্যাডালিমুমাবের কপি সংস্করণ আছে। এটাও খুব দামি। গরিব মানুষের নাগালের বাইরে। ডিরেক্ট রিলিফের এই অনুদানের ফলে অনেক রোগী দীর্ঘ সময় ব্যথামুক্ত থাকতে পারবেন।”
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ জানিয়েছেন, এর আগে পাওয়া ১৭ কোটি টাকার স্ট্রোক ও হৃদরোগের ওষুধ এখনো বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। নতুন যোগ হওয়া বাতের ইনজেকশন অসচ্ছল রোগীদের জন্য আশীর্বাদ হবে। কোন রোগী ইনজেকশন পাবেন, তা মেডিসিন ইউনিট-৫-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. আজিজুল হক আযাদ নির্ধারণ করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকা/কেয়া/রফিক