মৃত ঘোষণা করা নবজাতক ‘নড়ে ওঠে’ দাফনের আগে
Published: 10th, May 2025 GMT
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় জীবিত নবজাতককে মৃত ঘোষণা করার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। পরিবারের অভিযোগ, দাফনের সময় নড়ে উঠলে তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে জীবিত বলে জানান চিকিৎসক। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শুক্রবার নিয়ামতপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসক রুহুল আমিন অন্তঃসত্ত্বার সিজার করেন। নবজাতকের পরিবার এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গোপাল চক এলাকার পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগমের (২৮) রক্তক্ষরণ হলে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ক্লিনিকে ভর্তি হন।
ক্লিনিকের মালিক নাজমার গর্ভের সন্তান মারা গেছে জানিয়ে তাদের দ্রুত সিজারের পরামর্শ দেন। অন্যথায় প্রসূতিকে বাঁচানো যাবে না বলে তাড়াহুড়ো শুরু করেন। মেয়েকে বাঁচানোর জন্য সিজারের অনুমতি দেন বাবা-মা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক রুহুল আমিন বিকেল ৫টার দিকে তাঁকে অস্ত্রোপচার টেবিলে নেন।
সিজার শেষে রুহুল আমিন নবজাতককে মৃত বলে একটি কার্টনে ভরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে নবজাতকের আত্মীয়স্বজনের কাছে দেওয়ায় জন্য বলেন। ক্লিনিকের মালিক শরিফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে রাত ৮টার দিকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন। ভুলে প্যাকিং বক্সে অস্ত্রোপচারের কাঁচিও রেখে দেন।
বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যরা দাফনের প্রস্তুতির সময় নবজাতক নড়ে ওঠে বলে তারা জানান। তাদের ভাষ্য, দ্রুত তাকে নিয়ে উপজেলা সদরে এসে থানায় জানালে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেয় পুলিশ। সেখান থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক কায়সার রহমান শিশুটি জীবিত রয়েছে বলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসক ডা.
ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের তাড়াহুড়োর কারণে দ্রুত সিজার করা হয়েছে বলে অভিযোগ মা নাজমা বেগমের।
তিনি বলেন, ‘সন্তান মারা গেছে বলে আমাদের কাছে তুলে দেয়। দাফনের জন্য নিয়ে গেলে নড়ে ওঠে। আমরা খুব অসহায়, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
ক্লিনিকের মালিক শরিফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী পারমিতার দাবি, অন্তঃসত্ত্বা নারীর পরিবারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই সিজার করা হয়েছে। নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনাটি দুর্ঘটনা বলে দাবি তাদের। আর চিকিৎসক রুহুল আমিন বলেন, ‘সিজারের পর নবজাতক নড়াচড়া না করায় আমরা মৃত ধরে নিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণে রেখে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে বলে আমি চলে আসি।’
এ ধরনের রোগীর সিজার ক্লিনিকে করা ঠিক হয়নি বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফয়সাল নাহিদ। তিনি বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য নবজাতকের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নওগ র হ ল আম ন পর ব র র চ ক ৎসক র জন য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
২ কেজির ইলিশ বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়
সারাদেশে ইলিশের দাম নিয়ে যখন হইচই তখন জেলেরা ভুগছেন ইলিশ সংকটে আর ক্রেতারা হতাশ দাম নিয়ে। এ অবস্থায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জামাল মাতুব্বর নামের এক জেলের জালে ধরা পড়লো ২ কেজির এক ইলিশ যা বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়।
রোববার বিকেলে উপজেলার আশাখালী মাছ বাজারে ২ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশটিকে ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেন জেলে। মাছটি কেনেন বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম।
জেলে জামাল মাতুব্বর বলেন, গত কালকে সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমে আজকে আবহাওয়া খারাপ হওয়া তীরে চলে এসেছি৷ ইলিশ মাছ কম তবে একটি ইলিশ আমি ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেছি। যে কারণে কম মাছ পেলেও খুব ভালো লাগছে। এর চেয়েও বড় ইলিশ সমুদ্রে পাওয়া যায় তবে এখন দাম অনেক হওয়ায় যা দাম এসেছে তাতে পুষিয়ে যায় আমাদের।
বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, গত ১১ জুন ৬০ দিনের অবরোধ শেষ হওয়ার পর কয়েকবার আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় জেলেরা ঠিকমতো মাছ ধরতে পারছেন না। তবে আজকে জেলে জামাল একটি মাছ প্রায় ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এটা তার জন্য অনেক আনন্দের। মাছটি আমি কিনে ঢাকায় পাঠিয়েছি।
উপজেলার বেশ কয়েকটি মাছের বাজারে কথা বলে জানা যায়, ইলিশ সংকট হওয়ায় তার দাম আকাশচুম্বী। আজকে এক কেজির উপরের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে এক লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ৯৫ থেকে ৯৮ হাজার টাকায়, ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৭০ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকায়, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৬৫ থেকে ৬৮ হাজার টাকায়, ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ৬০ দিনের অবরোধ সঠিকভাবে পালন হওয়ায় সাগরে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় জেলেরা ঠিকমত মাছ ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তবে আবহাওয়া ঠিক হলে মাছের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে আর দামও নাগালে চলে আসবে।