বরিশাল নগরীতে জমি দখল করতে গিয়ে জনতার প্রতিরোধের মুখে মহানগর বিএনপির দুই যুগ্ম আহ্বায়ক এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কের (স্থগিত) পালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা আত্মগোপনে থাকা যুবলীগ নেতার পক্ষে জমি দখল করতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের মহানগর কলেজ এলাকায় এ ঘটনা হয়। ভুক্তভোগী জমি মালিকের ছেলে মেহেদি হাসান বিএনপির তিনজন ও যুবলীগ নেতার নাম উল্লেখ করে বিমানবন্দর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্তরা হলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন খান ও মাহফুজুর রহমান খান এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের পদ স্থগিত থাকা আহ্বায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু। অন্যজন হলেন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন।  

তবে বিএনপির তিনজনই সমকালের কাছে দাবি করেছেন, তারা ঘটনাস্থলে যাননি। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন। 

মেঘনার বালুমহাল ইজারা বাগাতে এক সেনা সদস্যকে আবাসিক হোটেলে আটকে মারধরের ঘটনায় গত ২৮ মার্চ মঞ্জুর আহ্বায়ক পদ স্থগিত করে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল।

মহানগর কলেজ সংলগ্ন হরিপাশার বিলে ১ একর ৪৮ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে খান মামুনের পরিবারের সঙ্গে সংলগ্ন ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ডেফুলিয়ার বাসিন্দা শওকত হোসেনের মামলা চলছে। খান মামুনের কাছ থেকে বায়নাসূত্রে মালিক দাবি করে এই জমি দখলের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের প্রধান আস্থাভাজন খান মামুন ৫ আগস্টের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন। 

শওকত হোসেনের ভাষ্য, খান মামুনের পিতা মরহুম এনামুল হকের সঙ্গে জমি নিয়ে মামলা শুরু হয়। আদালত তাঁর পক্ষে রায় দিলেও খান মামুন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলে রাখেন। ৫ আগস্টের পর তারা জমি দখলমুক্ত করেছেন। কয়েকদিন ধরে মঞ্জুর নেতৃত্বে এই জমি দখলের পাঁয়তারা চলছিল। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অর্ধশতাধিক লোক জড়ো করে বিএনপি নেতারা বালু ফেলা শুরু করেন। তখন আশপাশের লোক সংগঠিত হয়ে ধাওয়া দিয়ে তাদের প্রতিরোধ করে।

স্থানীয় বাসিন্দা মহানগর ছাত্রদলের সহসভাপতি আশিক হাওলাদার বলেন, শওকতের ছেলেও ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত। মামলার জমি দখল নিয়ে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। শুক্রবার রাতে মহানগর বিএনপির নেতা জসিম উদ্দিন, মাহফুজ ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মঞ্জুর নেতৃত্বে বালু ফেলা শুরু হলে কয়েকশ লোক জড়ো হয়ে তাদের ধাওয়া করে। 

তবে জসিম উদ্দিনের দাবি, তিনি এর সঙ্গে জড়িত নন। শুনেছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা বালু ফেলেছেন।

আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজ দাবি করেন, ওই জমি স্থানীয় ব্যবসায়ী মাসুদের বলে তিনি শুনেছেন। তাঁকে (মাহফুজ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ফাঁসানোর চক্রান্ত চলছে। একই বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক দলের মঞ্জুও। 

এ বিষয়ে দলের অবস্থান জানতে মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুককে কল দিলে তিনি ফোন ধরেননি। 

জেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, জমি দখলচেষ্টায় ভুক্তভোগী পরিবার বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। দলের কাছে অভিযোগ দিলে হাইকমান্ডে জানানো হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর শ ল ব এনপ য বল গ ব এনপ র র ব এনপ র জন ত য বল গ

এছাড়াও পড়ুন:

এ বছর লতিফুর রহমান পুরস্কার পেলেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন

প্রথম আলোর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মিডিয়াস্টার লিমিটেড ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের নামে চালু করা বর্ষসেরা সাংবাদিকতার পুরস্কার এ বছর পেয়েছেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন।

প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার রাজধানীর পাঁচ তারকা র‍্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে আয়োজিত সুধী সমাবেশে সাংবাদিক শওকত হোসেনের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। নানা শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনদের নিয়ে চলছে এই অনুষ্ঠান। সেখানে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কার হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়। শওকত হোসেনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রথম আলোর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মিডিয়াস্টার লিমিটেড ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমান এবং প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান।

সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সাল থেকে ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের নামে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এবার নিয়ে পঞ্চমবার এই পুরস্কার দেওয়া হলো। প্রথমবার এই পুরস্কার পেয়েছিলেন প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি রোজিনা ইসলাম। দ্বিতীয়বার প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, তৃতীয়বার প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি শিশির মোড়ল এবং গত বছর প্রথম আলোর উপসম্পাদক এ কে এম জাকারিয়া এ পুরস্কার পেয়েছিলেন।

এ বছর পুরস্কারজয়ী শওকত হোসেন ২০০৪ সাল থেকে প্রথম আলোতে কর্মরত। অর্থনীতিবিষয়ক স্বনামধন্য রিপোর্টার ও কলামিস্ট শওকত হোসেন এখন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রথম আলোর বার্তাকক্ষের ডিজিটাল রূপান্তরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। এসব কারণে তিনি এবার এই পুরস্কার পেলেন। এর আগে তিনি প্রথম আলোয় বাণিজ্য সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, হেড অব রিপোর্টিংসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।

শওকত হোসেন পুরস্কার পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমার ৩২ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে ২১ বছরের বেশি সময় কাটছে প্রথম আলোয়। এই লম্বা সময়ের মধ্যে আজকেই আমি সবচেয়ে বেশি সম্মানিত বোধ করছি লতিফুর রহমান বর্ষসেরা সাংবাদিকতার পুরস্কার পেয়ে। অনেক শ্রদ্ধা প্রয়াত চেয়ারম্যানের প্রতি, ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের পরিচালনা বোর্ডকে।’

স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্র তৈরিতে লতিফুর রহমানের অবদান তুলে ধরে শওকত হোসেন বলেন, ‘আর প্রথম আলোর সম্পাদক স্বাধীন, সৎ ও সুসাংবাদিকতার চর্চা করতে প্রতিনিয়তই শিখিয়ে যাচ্ছেন। আমার ও আমাদের অনেক সৌভাগ্য যে মতি ভাইয়ের (প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান) মতো একজন সম্পাদকের নেতৃত্বে কাজ করতে পারছি।’

সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানিয়ে শওকত হোসেন বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে থেকে আরও ভালো সাংবাদিকতা করে যেতে হবে, আজকের পুরস্কার আমাকে এই অনুপ্রেরণাই দিচ্ছে। স্বাধীন ও সৎ সাংবাদিকতা সহজ নয়। ধরনও প্রতিনিয়ত বদল হচ্ছে। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমরা সবাই এগিয়ে যাব, পুরস্কার হাতে নিয়ে এই প্রত্যয়ের কথাই জানালাম।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এ বছর লতিফুর রহমান পুরস্কার পেলেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন