রংপুরে নতুন রাডার স্টেশন চালু, মিলবে দুর্যোগের আগাম তথ্য
Published: 11th, May 2025 GMT
রংপুরে নবনির্মিত ডপলার রাডার স্টেশনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে রংপুর আবহাওয়া, রাডার ও ভূকম্পন পর্যবেক্ষণাগারে স্থাপিত ডপলার রাডার স্টেশনটির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আবহাওয়া বিভাগের পরিচালক মো. মোমেনুল ইসলাম।
মোমেনুল ইসলাম বলেন, নতুন রাডার স্টেশনের মাধ্যমে মেঘের অবস্থান, গতি, দিক, তাপমাত্রা জানা ও বজ্রপাতের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে। রেড জোনে অবস্থিত রংপুরে ভূমিকম্প, বড় ধরনের বন্যা ও আগাম বৃষ্টিপাতের তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে কৃষকদের ফসলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করা যাবে। রংপুরের আবহাওয়ার অবস্থা ও পরিবর্তনের কারণগুলো গবেষণা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক আবহাওয়া পরামর্শদাতা ইয়োশিহিসা উচিদা ও বাংলাদেশ আবহাওয়া বিভাগের উপপরিচালক আহমেদ আরিফ রশিদ। সভাপতিত্ব করেন রংপুর আবহাওয়া, রাডার ও ভূকম্পন পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান।
রংপুর আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরের কলেজ রোড মাস্টারপাড়া এলাকায় ১৯৭৭-৭৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের অধীনে আবহাওয়া, রাডার ও ভূকম্পন পর্যবেক্ষণাগার স্থাপন করা হয়। আড়াই একর জমির ওপর নির্মিত এ কেন্দ্রে জাপান সরকারের অর্থায়নে ১৯৯৯ সালে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কনভেনশনাল রাডার স্থাপন করা হয়। রাডারটির আয়ুষ্কাল ছিল ১০ বছর। কিন্তু ২০০৭ সালে রাডারে ত্রুটি ধরা পড়ে। ২০১২ সালে এটি পুরোপুরি বিকল হয়ে যায়।
২০১৬ সালে ডপলার রাডার স্টেশন স্থাপনে কার্যক্রম শুরুর কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে যায়। রাডার স্থাপনের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের মার্চে। জাপান সরকারের অনুদানে প্রায় ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করার কথা থাকলেও পরে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে ১৫০ কোটি টাকায়। যার বেশির ভাগ অংশই দিয়েছে জাপানের দাতা সংস্থা জাইকা। ডপলার রাডার স্থাপনের কাজটি তত্ত্বাবধান করছে জাপানের সিমিজু করপোরেশন। এই রাডার স্টেশনের সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মারুবিনি করপোরেশন।
আন্তর্জাতিক আবহাওয়া পরামর্শদাতা ইয়োশিহিসা উচিদা বলেন, ডপলার রাডার কৃষিনির্ভর উত্তরাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি গ্রেপ্তার
ঢাকার পিলখানায় ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে হত্যাকাণ্ডের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম রেজাউল করিম। আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার ফোর সিজন এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব-৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) এ আর এম মোজাফফর হোসেন আজ প্রথম আলোকে বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে খবর পেয়ে পিলখানা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব।
আদালত সূত্র জানায়, ১৬ বছর আগে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের (বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ—বিজিবি) সদর দপ্তর ঢাকার পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। এতে বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে তখন পিলখানায় নিহত হন ৭৪ জন। সেদিন পিলখানায় থাকা সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরাও নৃশংসতার শিকার হয়েছেন।
পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক মামলা হয়। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় ৮৫০ জনকে আসামি করা হয়। দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটিই সবচেয়ে বড় মামলা। বিচারিক আদালত ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এ মামলার রায় দেন। রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে খালাস পান ২৭৮ জন। রায় ঘোষণার আগে চার আসামি মারা যান।