হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার স্নানঘাটে খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক। সেতু নির্মাণ না হওয়ায় কাঠের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে ক্লিনিকে যাতায়াত করছেন সেবাগ্রহীতারা। পুরোনো ও নড়বড়ে কাঠের সাঁকোতে যাতায়াতে যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।    
স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০২০ সালে স্নানঘাট বাজারসংলগ্ন খালের অপর পাশে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়। গত ৫ বছরেও সেখানে যাতায়াতের রাস্তা বা সেতু নির্মাণ করা হয়নি। কাঠের সাঁকোতে যাতায়াত করতে 
গিয়ে ভোগান্তির পাশাপাশি প্রায়ই দুর্ঘটনা শিকার হচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা। 
সরেজমিন দেখা যায়, পুরোনো হওয়ায় নড়বড়ে হয়ে পড়েছে সাঁকোটি। ঝুঁকি নিয়েই সাঁকো পার হয়ে ক্লিনিকে যাতায়াত করছেন রোগীরা। অনেক সেবাপ্রত্যাশীর সঙ্গে শিশুরা সেখানে যাতায়াত করছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা ভয় নিয়েই সাঁকো পার হচ্ছে। 
স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা সাফিয়া বেগম বলেন, ‘ডাক্তার দেখাতে ও ওষুধ নিতে প্রায়ই ক্লিনিকে আসি। কিন্তু  ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে, যা খুবই ভয় লাগে।’
খন্দকার পারভেজ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানালেন, ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে রোগীদের অনেক কষ্ট হয়। এমনকি খালে পড়ে অনেকেই আহত হয়েছেন।
রাবিয়া বেগম নামে এক সেবাপ্রত্যাশী বলেন, ‘ক্লিনিকে বাচ্চাদের নিয়ে আসতে ভয় হয়, কখন জানি এটা ভেঙে পড়ে।’
ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) বিজন সূত্রধর বলেন, এই ক্লিনিকে রোগীর সংখ্যা বেশি। ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো পার হয়ে রোগীকে ক্লিনিকে আসতে হচ্ছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের যাতায়াত করতে কষ্ট হয়। 
বিজন সূত্রধর জানান, দুইবার এ ক্লিনিকের সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়েছে। প্রথমবার কেন টেন্ডার বাতিল হয়েছে সেটা জানা নেই। দ্বিতীয়বার ক্লিনিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পিআইওর সঙ্গে সেতুর বিষয়ে আলাপ করলে তিনি জানান, ড্রয়িং ভুল হয়েছে। এ কারণে সেতুটি হচ্ছে না। 
জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক রাহিন বলেন, সেখানে যাতায়াতের জন্য একটি সেতুর অনুমোদন আছে। তবে ড্রয়িংয়ে বড় ধরনের ভুল ধরা পড়েছে।  ড্রয়িং অনুযায়ী সেতুটি নির্মাণ করা হলে ক্লিনিকের বেশকিছু অংশ ভাঙতে হবে। আবার ড্রয়িংয়ের ভুল সংশোধন করতে গেলে বরাদ্দ বাতিলও হতে পারে। এ কারণে কাজটা আটকে পড়েছে। শিগগিরই সেখানে সেতু না হলে ইউনিয়নের বরাদ্দ থেকে সেখানে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ত য় ত করত ন র ম ণ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ