নূর খান ঘাঁটিতে ভারতীয় হামলা মার্কিন হস্তক্ষেপের কারণ: এনওয়াইটি
Published: 12th, May 2025 GMT
পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে অবস্থিত নূর খান বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হওয়ার কারণে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা প্রশমনে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে বলে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস (এনওয়াইটি)। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।
নূর খান হলো পাকিস্তানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি। এখান থেকে বিমানবাহিনীর অপারেশন ও ভিআইপি পরিবহনের উড়ান যাতায়াত করে।
গত ৮ মে ফক্স নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স প্রথমে বলেছিলেন যে, “এই সংঘাত (ভারত-পাকিস্তান) আমাদের কোনো বিষয় না।” তবে পাকিস্তানি ও ভারতীয় বিমান বাহিনী আকাশ যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার পর মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দ্রুত পরিবর্তিত হয়।
আরো পড়ুন:
পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেনি: আইএসপিআর প্রধান
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে কার কেমন ক্ষতি হলো?
এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা সিএনএনকে বলেছিলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের সময় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগজনক গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছিল, যার ফলে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা জোড়ালো করতে বাধ্য হন।
টানা কয়েকদিন ধরে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও সংঘাতের ফলে পারমাণবিক অস্ত্রধারী ভারত ও পাকিস্তান পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েছিল, এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, উভয় দেশ ‘তাৎক্ষণিক ও পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্যের প্রকৃতি স্পর্শকাতর হওয়ায় তা প্রকাশ না করে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলসসহ একটি শীর্ষ মার্কিন প্রশাসনিক দল পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
তবে, সবচেয়ে উদ্বেগজনক ঘটনাটি ঘটে ৯ মে রাতে, যখন রাওয়ালপিন্ডিতে অবস্থিত নূর খান বিমান ঘাঁটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। ঘাঁটিটি পাকিস্তান বিমান বাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন এবং জ্বালানি সরবরাহ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। এছাড়া এটি পাকিস্তানের স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানস ডিভিশন থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, এই ডিভিশন পাকিস্তানের আনুমানিক ১৭০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড তত্ত্বাবধান করে।
পাকিস্তানের পারমাণবিক অবস্থানের সঙ্গে পরিচিত সাবেক একজন মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, ইসলামাবাদের দীর্ঘদিনের ভয় হলো তার পারমাণবিক কমান্ড অবকাঠামোর ওপর একটি ভয়াবহ হামলা। নূর খান সামরিক ঘাঁটির ওপর ভারতীয় হামলাকে এমন একটি সম্ভাব্য প্রচেষ্টার সংকেত হিসেবে দেখা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে পাকিস্তানের একজন শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ফোনালাপ উভয় পক্ষকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে সাহায্য করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
পাকিস্তানের কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তান নূর খান সামরিক ঘাঁটির ওপর হামলাকে একটি লাল রেখা হিসেবে দেখেছে, বিশেষ করে দেশের পারমাণবিক অবকাঠামোর কাছাকাছি থাকার কারণে।
গোয়েন্দা সূত্রটি বলেছে, “উভয় পক্ষকে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য মার্কিন হস্তক্ষেপ প্রয়োজন ছিল।” তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, “চূড়ান্ত পদক্ষেপটি প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে এসেছে।”
শনিবার (১০ মে), মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ভারত এবং পাকিস্তান তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
মৃত্যু যেখানে রমরমা ব্যবসা হয়ে উঠছে
দক্ষিণ কোরিয়ার বন্দর নগরী বুসানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে কফিন। দেশটিতে ভবিষ্যতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পরিচালকদের প্রশিক্ষণের জন্য এগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপক জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের ফলে মৃত্যুর ব্যবসায় ক্রমবর্ধমান সংখ্যক লোক কাজ খুঁজে পাচ্ছে। কারণ দেশটিতে জন্মহার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম এবং জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বয়স ৫০ বা তার বেশি।
বুসান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা ঐতিহ্যবাহী কোরিয়ান অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কাপড়ে সাবধানে একটি পুতুল জড়িয়ে, কাপড়টিকে আসল চামড়ার উপর মসৃণ করে, তারপর আলতো করে কফিনে নামিয়ে দিচ্ছিল।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া প্রশাসনের শিক্ষার্থী ২৭ বছর বয়সী জ্যাং জিন-ইয়ং বলেন, “আমাদের সমাজের বয়স বাড়ার সাথে সাথে, আমি ভেবেছিলাম এই ধরণের কাজের চাহিদা আরো বাড়বে।”
আরেক ছাত্র, ২৩ বছর বয়সী ইম সে-জিন তার দাদীর মৃত্যুর পর মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, “তার (দাদীর) অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় আমি দেখেছি পরিচালকরা তাকে শেষ বিদায়ের জন্য কতটা সুন্দরভাবে প্রস্তুত করেছেন। আমি গভীর কৃতজ্ঞ বোধ করছি।”
দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ ক্রমশ একাকী জীবনযাপন করছে এবং নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যাচ্ছে। এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির প্রায় ৪২ শতাংশ এখন একাকী জীবনযাপন করে।
এই পরিসংখ্যান দেশটিতে একটি নতুন পেশার আবির্ভাবকে প্রতিফলিত করছে।
উন্নত দেশগুলির মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। এই ‘একাকী মৃত্যু’-তে সেইসব ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত যারা আত্মহত্যা করেছেন।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ব্যবসায়ের একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি কিম ডু-নিয়ন বলেন, তার ২০ বছর বয়সী ক্রমবর্ধমান সংখ্যক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মী রয়েছে।
তিনি বলেন, “মানুষ যখন একসাথে থাকে, তখন তারা জিনিসপত্র ভাগ করে নেয়... এমনকি যদি একজন ব্যক্তি মারা যায়, সেই জিনিসপত্রগুলি থেকে যায়। কিন্তু যখন কেউ একা মারা যায়, তখন সবকিছু পরিষ্কার করতে হবে।”
তবে নিজের পেশা নিয়ে ভয়ও পান কিম।
তিনি বলেন, “আমি ভয় পাচ্ছি। আপনি যতই প্রস্তুতি নিন না কেন, একজন মৃত ব্যক্তির মুখোমুখি হওয়া ভীতিকর।”
ঢাকা/শাহেদ