যুক্তরাষ্ট্র–চীন আলোচনায় বড় অগ্রগতি, ৯০ দিনের জন্য শুল্ক কমাতে ঐকমত্য
Published: 12th, May 2025 GMT
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনায় বড় অগ্রগতি হয়েছে। দেশ দুটি পরস্পরের পণ্যে যে বিপুল হারে শুল্ক আরোপ করেছিল, প্রাথমিকভাবে তারা ৯০ দিনের জন্য সেই শুল্ক অনেকাংশে কমিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে। ফলে বিশ্ববাজারে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।
আজ সোমবার এক যৌথ ঘোষণায় মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এর আগে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্বের বৃহত্তম এই দুই অর্থনীতির প্রতিনিধিদের মধ্যে সপ্তাহজুড়ে টানা আলোচনা হয়েছে। এই সময় উভয় পক্ষ জানিয়েছে, আলোচনায় ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে।
যৌথ বিবৃতি অনুযায়ী, ১৪ মে থেকে যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যে আরোপিত ১৪৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ৩০ শতাংশে নিয়ে আসবে, এবং চীনও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, উভয় পক্ষ ‘অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা চলমান রাখতে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া গড়ে তুলতে একমত হয়েছে। আলোচনায় চীনের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন দেশটির সহকারী প্রধানমন্ত্রী হি লিফেং এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে দেশটির অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, চুক্তিভুক্ত উভয় পক্ষের সম্মতিতে এই আলোচনা পর্যায়ক্রমে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রে অথবা অন্য কোনো তৃতীয় দেশে অনুষ্ঠিত হতে পারে। প্রয়োজন অনুযায়ী উভয় পক্ষ প্রাসঙ্গিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়গুলোতে বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শক পর্যায়ের বৈঠক করবে; অর্থাৎ সমস্যা সমাধানে আরও বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে দেশ দুটি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ: আগামী সপ্তাহে দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনায় বসবে ঐকমত্য কমিশন
জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনায় বসবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আলোচনার দিনক্ষণ আজ মঙ্গলবার ঠিক করা হতে পারে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া চূড়ান্ত করা হলেও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। এ কারণে আটকে আছে জুলাই সনদ।
বাস্তবায়নের উপায় ঠিক করতে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তিন দিন আলোচনা হলেও এখনো ঐকমত্য হয়নি। আপাতত আলোচনা মুলতবি রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা কমিশনকে ইতিমধ্যে বলেছেন, সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন টেকসই করতে হলে গণভোট বা গণপরিষদের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করা হবে সবচেয়ে ভালো বিকল্প।গতকাল সোমবার কমিশন সূত্র জানায়, আজ মঙ্গলবার কমিশনে নিজেদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করার কথা রয়েছে। সেখানে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হতে পারে। আগামী ৪ বা ৫ অক্টোবর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনা করার পরিকল্পনা আছে। কমিশনের লক্ষ্য হলো আর এক দিন আলোচনা করে বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করা। আগামী ১৫ অক্টোবর ঐকমত্য কমিশনের বর্ধিত মেয়াদ শেষ হবে। এর মধ্যেই কমিশন জুলাই জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করতে চায়।
আরও পড়ুনঐকমত্য কমিশন ব্যর্থ হলে, ব্যর্থতা সবার: আলী রীয়াজ১৫ জুলাই ২০২৫বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা অব্যাহত আছে। সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে সংবিধান আদেশ জারি ও পরবর্তী সময়ে এর ভিত্তিতে গণভোট, গণপরিষদ গঠন, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়াসহ একাধিক বিকল্প পদ্ধতি আলোচনায় আছে। এগুলো নানাভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি জুলাই সনদের অংশ হবে না। এ বিষয়ে সরকারকে একাধিক সুপারিশ দেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।বিশেষজ্ঞরা কমিশনকে ইতিমধ্যে বলেছেন, সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন টেকসই করতে হলে গণভোট বা গণপরিষদের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করা হবে সবচেয়ে ভালো বিকল্প।
সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি জুলাই সনদের অংশ হবে না। এ বিষয়ে সরকারকে একাধিক সুপারিশ দেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আরও পড়ুনজুলাই সনদ কার্যকর হলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কার অধীনে২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা রয়েছে। বিএনপি আগামী সংসদের মাধ্যমে সংবিধান–সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের পক্ষে। এর বাইরে অন্য কোনোভাবে সংবিধান সংস্কার সম্ভব কি না, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়া যেতে পারে বলে মনে করে দলটি।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলনসহ আরও কোনো কোনো দল এ ধরনের সংবিধান সংস্কার সভা গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছে। এর বাইরে কিছু দল সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়ার পক্ষে।জামায়াতে ইসলামী চায় সংবিধান আদেশ জারি এবং গণভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন। আর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চায় গণপরিষদ। দলটি মনে করে, গণপরিষদ একই সঙ্গে নিয়মিত সংসদ হিসেবেও কাজ করতে পারে। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলনসহ আরও কোনো কোনো দল এ ধরনের সংবিধান সংস্কার সভা গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছে। এর বাইরে কিছু দল সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়ার পক্ষে।
জাতীয় ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার পরিকল্পনা রয়েছে। এর আগে ও পরে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কমিশনের আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হবে।