প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে দুদকের করা পৃথক দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৫ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।

আজ সোমবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালতে আসামিদের গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিল না করায় বিচারক নতুন এই দিন ধার্য করেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ১৫ এপ্রিল ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.

জাকির হোসেন গালিব মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও তার ছেলে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ চার্জশিটভুক্ত ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৯ এপ্রিল দিন ধার্য করেন আদালত।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ১৪ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ তদন্তে প্রাপ্ত আরও চারজনসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।

শেখ হাসিনা ছাড়া এ মামলায় অপর ১১ আসামি হলেন- জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য শফি উল হক, খুরশীদ আলম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তপ্রাপ্ত জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার ও সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ১৪ জানুয়ারি সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ তদন্তে প্রাপ্ত আরও দুইজনসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।

শেখ হাসিনা-জয় ছাড়াও এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত অপর ১৫ আসামি হলেন- জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক কামরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সদস্য মো. নুরুল ইসলাম, তদন্ত প্রাপ্ত আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জন র ব র দ ধ কর মকর ত ম হ ম মদ ল ইসল ম র সহক র ত মন ত র চ লক মন ত র সরক র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি জায়গা বন্দোবস্তে সীমা ছাড়িয়েছে ‘সীমান্তিক’

সিলেটকেন্দ্রিক এনজিও ‘সীমান্তিক’। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে নিজের এই এনজিওকে কাজে লাগিয়ে একচেটিয়া দেশি-বিদেশি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির। যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যও তিনি। আত্মীয়তার কারণে কবিরের ছায়া হয়ে ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও তাঁর ভাই সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের সময়কালে সরকারি জায়গা বন্দোবস্তে সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন ড. কবির। তাঁর এনজিও সীমান্তিক সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় জায়গা বন্দোবস্ত নিয়ে সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। সিলেট নগরীতেই ১৩০ শতক জায়গা বন্দোবস্ত নিয়ে দাঁড় করানো হয়েছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, নার্সিং ইনস্টিটিউট, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এ এলাকায় সীমান্তিকের এখন অন্তত ২০টি ক্লিনিক ও হাসপাতাল রয়েছে।
জানা গেছে, সীমান্তিকের প্রতিষ্ঠাতা ড. কবিরের গ্রামের বাড়ি জকিগঞ্জের কালীগঞ্জে। মন্ত্রীর আত্মীয়তার সুযোগে ২০০৯ সালে রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পান তিনি। কয়েক বছর আগে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যও হন। 

গত সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৫ আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছিলেন কবির। নির্বাচনী হলফনামায় আহমদ আল কবির তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন ৭ কোটি ৭৯ লাখ ৬ হাজার ৩২৯ টাকার। বার্ষিক আয় দেখান ৪৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা। তাঁর স্ত্রীর সম্পদ দেখান ৩ কোটি ৫৬ লাখ ১৫ হাজার ৬৮৭ টাকার। নগরীর উপশহরে একাধিক বাড়িসহ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। 
সরকারি জায়গা বন্দোবস্ত নিয়ে নীতিমালার তোয়াক্কা না করে গড়ে তোলেন একের পর এক প্রতিষ্ঠান। ২০১০ সালে ড. কবির নগরীর পূর্ব শাহি ঈদগাহ এলাকায় ৩৩ শতক জায়গা বন্দোবস্ত নেন আরটিএম ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষা ও মানবসম্পদ কেন্দ্রের নামে। দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত নিয়ে সেখানে ৯ তলা ভবন করেন। তৎকালীন মন্ত্রী আবুল মাল মুহিতের নাম ভাঙিয়ে জায়গা বাগিয়ে নেন ড. কবির। 
সরেজমিন দেখা গেছে, ওই ভবনে আরটিএম ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষা ও মানবসম্পদ কেন্দ্রের পাশাপাশি আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি, আরটিএম ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মা ও শিশু স্বাস্থ্য ক্লিনিক, সিলেট সদর উপজেলা ডায়াবেটিক সমিতি, আরটিএম নার্সিং কলেজ, আরটিএম ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড পুনর্বাসন কেন্দ্র, আরটিএমআই ম্যাটস ও আইএইচটি নামে প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে একটি ব্যাংকিং সেবা প্রতিষ্ঠানও। স্বাস্থ্যসহ জনগণের সেবার কথা বলে বন্দোবস্ত নেওয়া হলেও করা হয়েছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। নিয়মে না থাকলেও দেওয়া হয়েছে ভাড়া। 
পূর্ব শাহি ঈদগাহের মতো নগরীর মাছিমপুর এলাকায় সিলেট ল’ কলেজের পাশে একইভাবে ড. কবির এনজিও সংস্থার নামে বন্দোবস্ত নেন ৯৭ শতক জমি। জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, ২০১২ সালে ৯৭ শতক জায়গা ৯৯ বছরের জন্য সীমান্তিকের নামে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। পরে ওই জায়গায় গড়ে তোলা হয় সীমান্তিক হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, সীমান্তিক আইডিয়াল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটউট এবং সীমান্তিক মহিলা ডিগ্রি কলেজ। 

সরেজমিন দেখা গেছে, সেখানে চারটি ভবন আছে। ২০১৯ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) থেকে ছয় তলার অনুমোদন নিয়ে ভবন করা হয়েছে আট তলা পর্যন্ত। বিষয়টি নজরে এসেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান। 
২০০৭ সাল থেকে সিটি করপোরেশনের মাতৃসদন বিনোদিনী হাসপাতালটি সীমান্তিক পরিচালনা করে আসছে। পরিবার পরিকল্পনাসহ সিটি করপোরেশনের অধিকাংশ স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়ন করে এই এনজিও। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে সীমান্তিকের চেয়ারপারসন শফি মিয়া সমকালকে বলেন, ঢাকা ও সিলেটে তাদের  সম্পদ রয়েছে। ভবন অনুমোদনের বাইরে করা হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি। ইউএসআইডির ফান্ড নেই দাবি করে শফি মিয়া জানান, আগামী জুনে তাদের সব প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।  
 ড. আহমদ আল কবির দাবি করেন, সীমান্তিক আইন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। নিয়ম মেনে বন্দোবস্ত ও ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে সিআইসিজি প্রধানের সাক্ষাৎ
  • চীনের নানজিং ইউনিভার্সিটির সঙ্গে ঢাবির সমঝোতা
  • কানাইঘাট উপজেলা বিএনপি সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
  • ‘আমাদের শাহবাগে গিয়ে কথা বলতে হবে কেন’, প্রশ্ন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের
  • ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বন্ধে ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি
  • ফেনীতে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও সেনা ব্রিগেড দাবি
  • ভারতে ৬ টিভির ইউটিউব চ্যানেল বন্ধ: ব্যাখ্যা না পেলে পাল্টা পদক্ষেপ নেবে সরকার
  • আরও দুই টিভির ইউটিউব চ্যানেল ভারতে বন্ধ, ব্যাখ্যা না পেলে পাল্টা পদক্ষেপের কথা বললেন বিশেষ সহকারী
  • সরকারি জায়গা বন্দোবস্তে সীমা ছাড়িয়েছে ‘সীমান্তিক’