জাতির বৃহৎ স্বার্থে বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ কাঙ্ক্ষিত, অভিমত হাইকোর্টের
Published: 15th, May 2025 GMT
‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ ২০২৫’–এর চারটি ধারার বৈধতা নিয়ে করা রিট পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশিত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার ১২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ আদেশটি প্রকাশ করা হয়। অভিমতে আদালত বলেছেন, জাতির বৃহৎ স্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ ২০২৫ কাঙ্ক্ষিত।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক নিয়োগের লক্ষ্যে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ–২০২৫ শিরোনামে অধ্যাদেশ গত ২১ জানুয়ারি গেজেট আকারে জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। অধ্যাদেশের ৩, ৪, ৬ ও ৯ ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.
সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগে সংবিধানের স্কিম প্রকৃতভাবে কার্যকরে কিছু ত্রুটি বা ফাঁকফোকর দেখা গেছে বলে আদেশে এসেছে। পূর্ণাঙ্গ আদেশে বলা হয়, এ ধারণা প্রচলিত রয়েছে যে, সুপ্রিম কোর্টে বিচারকদের নিয়োগে সব সময় যোগ্যতা প্রাধান্য পায়নি এবং রাজনৈতিক বা অন্যান্য কারণে হাইকোর্টে অনেক অসন্তোষজনক নিয়োগ হয়েছে; যার ফলে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়নি, যা দেশের বিচার বিভাগের ভাবমূর্তির ওপর খারাপ প্রভাব ফেলেছে। রাষ্ট্রপতি বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব বা যেকোনো রাজনৈতিক বা দলীয় বিবেচনার প্রভাব দূর করার লক্ষ্যে বর্তমান ব্যবস্থায় ফাঁকফোকরগুলো বন্ধ করতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ ২০২৫ নামে একটি অধ্যাদেশ জারি করেন।
অধ্যাদেশের চারটি ধারা নিয়ে ওই রিটটি করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৩ ধারায় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা, ৪ ধারায় কাউন্সিল সচিব, ৬ ধারায় কাউন্সিলের ক্ষমতা ও কার্যাবলি এবং ৯ ধারায় আপিল বিভাগের বিচারক নিয়োগবিষয়ক সুপারিশ সম্পর্কে বলা রয়েছে।
সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শ করে রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগদান করবেন। ৯৫(১) অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে পূর্ণাঙ্গ আদেশে বলা হয়, সে অনুযায়ী অধ্যাদেশের অধীন ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়নমেন্ট কাউন্সিল’ নামে একটি কাউন্সিল গঠিত হবে।…অধিকন্তু, কাউন্সিলের মাধ্যমে বিচারক পদের জন্য উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন এবং সুপারিশের প্রক্রিয়া শুধু বিচারকদের নিয়োগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ দূর করবে না; বরং কোনো প্রধান বিচারপতির ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ সামনে আনার সম্ভাবনা কম–বেশি দূর করবে। আদালত বলেন, অভিজ্ঞতা বলে যে ভুল নিয়োগ কেবল আদালতের ভাবমূর্তিকে প্রভাবিত করে না; বরং মামলাকারী, বার সদস্য (আইনজীবী সমিতির সদস্য) এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা ও শ্রদ্ধা খাটো করে।
পূর্ণাঙ্গ আদেশের অনুলিপি হাতে পেয়েছেন জানিয়ে রিট আবেদনকারী আইনজীবী মো. আজমল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স প র ম ক র ট র ব চ রক ন ব চ রক ন য় গ ব চ রক ন য র ষ ট রপত ক উন স ল আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
রিয়া মনির মামলায় জামিন পেলেন হিরো আলম
রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় হত্যাচেষ্টা, মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে সাবেক স্ত্রী রিয়া মনির করা মামলায় আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসান আজ শনিবার এই আদেশ দেন।
বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে হাতিরঝিল থানা থেকে হিরো আলমকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় তাঁকে সিএমএম আদালতের ৯তলার এজলাসে নেওয়া হয়।
হিরো আলমের পক্ষের আইনজীবীরা তাঁর জামিন চেয়ে শুনানি করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক ২০০ টাকা মুচলেকায় তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
এদিকে হিরো আলমের মামলার শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন এই মামলার বাদী রিয়া মনি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘হিরো আলমের একটা শিক্ষা হওয়া দরকার। আমাকে যেমন বিনা কারণে জেল খাটিয়েছে, তারও জেলে থাকা উচিত।’
এর আগে শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন এলাকা থেকে সাবেক স্ত্রী রিয়া মনির দায়ের করা মামলায় হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামানের আদালত হিরো আলম ও তাঁর সহযোগী আহসান হাবিব সেলিমের বিরুদ্ধে ১২ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই পরোয়ানা অনুসারেই হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৩ জুন হাতিরঝিল থানায় রিয়া মনি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি হিরো আলম ও বাদী রিয়া মনির মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। এরপর হিরো আলম বাদীকে তালাক দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন। গত ২১ জুন বাদীর পরিবারের সঙ্গে মীমাংসার কথা বলে হাতিরঝিল থানাধীন এলাকায় একটি বাসায় ডাকা হয়। ওই সময়ে হিরো আলমসহ ১০ থেকে ১২ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বাদী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পরে তাঁরা বাদীর বর্তমান বাসায় বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কাঠের লাঠি দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করেন। এতে বাদীর শরীরে জখম হয়। এ সময় তাঁর গলায় থাকা দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের হার চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুনরিয়া মনির মামলায় হিরো আলম গ্রেপ্তার২ ঘণ্টা আগে