উপকূলীয় জনপদ সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সুপেয় পানির দাবিতে ব্যতিক্রমধর্মী এক ম্যারাথন হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল আটটার দিকে ম্যারাথন শ্যামনগরের গ্যারেজ বাজার থেকে শুরু হয়ে বুড়িগোয়ালিনীর আকাশনীলা ইকো ট্যুরিজম চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

শ্যামনগর শরুব ইয়ুথ টিমের আয়োজনে ‘রান ফর ওয়াটার’ শীর্ষক এই ম্যারাথনে ১০২ জন স্থানীয় বাসিন্দা, তরুণ-তরুণী ও পরিবেশকর্মী অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীরা ‘সরকারি সেবার আওতায় সুপেয় পানি চাই’ দাবি নিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ম্যারাথনে যৌথভাবে প্রথম স্থান অধিকার করেন মো.

আতিক হাসান, কিংকর মণ্ডল ও মো. ইব্রাহিম খলিল।

অনুষ্ঠান শেষে আকাশনীলা চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা হয়। বক্তব্য দেন তনুশ্রী মণ্ডল, এস এম রাশিদুল ইসলাম, মাসুদ রানা, অর্পিতা মণ্ডল, হালিমা খাতুন, বিশ্বজিৎ মণ্ডল, রাজীব বৈদ্য, হাবিবুর রহমান প্রমুখ। বক্তারা বলেন, নিরাপদ পানির দাবি মানুষের একটি মৌলিক মানবাধিকার। পানির অপর নাম জীবন। অথচ উপকূলীয় মানুষ যুগ যুগ ধরে খাওয়ার পানি থেকে বঞ্চিত। তাঁরা তাঁদের চাহিদামতো খাওয়ার পানি পান না। এ জন্য খাওয়ার পানি তাঁদের হিসাব করে খেতে হয়। তাঁরা দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

শ্যামনগর শরুব ইয়ুথ টিমের পরিচালক এস এম জান্নাতুল নাঈম বলেন, উপকূলীয় এই অঞ্চলে খাওয়ার পানির তীব্র সংকট দীর্ঘদিনের। লবণাক্ততা, ঘূর্ণিঝড় ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নিরাপদ পানি পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠেছে। স্থানীয় নারীদের কয়েক কিলোমিটার হেঁটে খাওয়ার পানি সংগ্রহ করতে হয়। এ জন্য তাঁদের দিনের একটা বড় সময় ব্যয় করতে হয়। আবার অনেকে পানি কিনে খান। এ সংকট তুলে ধরতেই এই ব্যতিক্রমী ম্যারাথনের আয়োজন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ য মনগর উপক ল য়

এছাড়াও পড়ুন:

মিয়ানমারকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

অবশেষে অপেক্ষার অবসান! মিয়ানমারের মাটিতে লাল-সবুজের কন্যারা লিখে ফেলেছে এক অনন্য গৌরবগাথা। ৭৩ ধাপে এগিয়ে থাকা প্রতিপক্ষ, অতীত পরিসংখ্যানে যারা অনেক এগিয়ে, সেই মিয়ানমারকে তাদেরই ঘরের মাঠে হারিয়ে এএফসি এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেওয়ার স্বপ্ন এখন আরও স্পষ্ট বাংলাদেশের সামনে।

এ যেন এক প্রতিশোধের জয়। ২০১৭ সালে ইয়াঙ্গুনে অলিম্পিক বাছাইয়ে মিয়ানমারের মেয়েরা যখন বাংলাদেশের জালে পাঁচ-পাঁচটি গোল দিয়েছিল। তখনও হয়তো কেউ ভাবেনি এই একই শহরে কখনো এমন জয়গাথা লেখা হবে। আজ ঠিক তাই হয়েছে।

ঋতুপর্ণা চাকমা— এই একটি নামই যেন বদলে দিলো ম্যাচের চেহারা। দুই অর্ধে তার দুটি দুর্দান্ত গোল শুধু স্কোরলাইন বদলায়নি, বদলে দিয়েছে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস আর সামর্থ্যের সংজ্ঞাও।

আরো পড়ুন:

মন্টেরেইকে হারিয়ে শেষ আটে বরুশিয়া

শেষ নৃত্যের অপেক্ষায় থাকা নেইমার ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে যা জানালেন

ম্যাচের ১৮ মিনিটে তহুরা খাতুনকে ফাউল করার পর বাঁ দিকের কর্নার থেকে ফ্রি-কিক পায় বাংলাদেশ। ঋতুপর্ণার নেওয়া প্রথম শট মানবদেয়ালে আটকালেও ফিরতি বল থেকে বা পায়ের অনবদ্য শটে বল জড়িয়ে যায় পোস্টের কোণায়। যা গোলকিপার শুধুই দেখতে পারেন, ঠেকাতে নয়।

ম্যাচে আরও একবার ঋতুপর্ণার বানানো সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ব্যবধান তখনই দ্বিগুণ হতে পারত। কিন্তু জুনিয়র শামসুন্নাহার ঠিকঠাক পৌঁছাতে পারেননি বলের কাছে। শেষমেশ সেই দ্বিগুণ ব্যবধান আসে ৭১ মিনিটে। বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে ঋতুপর্ণা বাঁ পায়ের চোখজুড়ানো কোনাকুনি শটে করেন নিজের দ্বিতীয় এবং দলের দ্বিতীয় গোলটি। গোলটি যেন নিখুঁত এক শিল্পকর্ম। যেটা শুধু স্কোরবোর্ডে যোগ হয়নি, বসেছে দর্শকদের মনের আয়নায়।

৮৯ মিনিটে অবশ্য কিছুটা দুশ্চিন্তার ছায়া নেমে আসে। যখন মিয়ানমারের উইন উইন গোল করে ব্যবধান ২-১-এ নামিয়ে আনেন। কিন্তু এরপর বাংলাদেশ ডিফেন্স আর কোনো ভুল করেনি। শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গেই উদযাপনের বিস্ফোরণ, ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত!

এই জয়ে গ্রুপ শীর্ষে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ তুর্কমেনিস্তান। যদি এই ম্যাচেও জয় আসে, তাহলে নিশ্চিত হয়ে যাবে একটি ঐতিহাসিক টিকিট। প্রথমবারের মতো নারী ফুটবলে বাংলাদেশ পা রাখতে পারে এশিয়ার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ মঞ্চে; এএফসি এশিয়ান কাপের মূল পর্বে। 

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ