রাজধানীতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে শিক্ষার্থীসহ ২ যুবক খুন
Published: 16th, May 2025 GMT
রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে শিক্ষার্থীসহ দুই যুবক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে এ দুটি ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে হাজারীবাগের জিগাতলা এলাকায় খুন হয়েছেন শিক্ষার্থী সামিউর রহমান আলভী (২৭)। এ ঘটনায় আশরাফুল ইসলাম নামে আরেক যুবকসহ চারজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদ পুলপাড় এলাকায় ফটোগ্রাফার নূর ইসলামকে (২৫) খুন করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে খুনের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনের সূত্রে জানা যায়, ধানমন্ডির ড.
নিহত শিক্ষার্থীর মামী মাহী বেগম হাসপাতালে জানান, রাত ৯টার দিকে চিকিৎসক আলভীকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত আশরাফুলের চিকিৎসা চলছে। তার বাবার নাম মোহাম্মদ মাসুদ। তারাও বিজিবি পাঁচ নম্বর গেট এলাকায় থাকেন। আহত অপর তিনজনের ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি। কী কারণে এই হামলা স্বজনরা বুঝতে পারছেন না। তবে আহতদের দাবি, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। তবে কী কারণে হামলা তা বলতে পারেননি তারা।
হাজারীবাগ থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, একটি দল আড্ডা দেওয়ার সময় আরেকটি দল এসে তাদের ওপর হামলা করে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। কী কারণে এই হামলা তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
এদিকে জাফরাবাদ পুলপাড় এলাকার দুর্গা মন্দির গলিতে ৩২৭/১ নম্বর ভবনের সামনে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে প্রাণ হারান নূর ইসলাম। তার বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পূর্ব সুজন কাঠি গ্রামে। বাবার নাম আবুল ফকির। ধানমন্ডির শংকর বাসস্ট্যান্ডের পাশে ভাই ওসমান গনির সঙ্গে থাকতেন নূর।
ওসমান গনি জানান, বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছবি তোলার কাজ করতেন নূর। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে তিনি দুর্গা মন্দির গলিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন হঠাৎ দুর্বৃত্তরা এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথা ও দুই হাতে কোপায়। খবর পেয়ে প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনরা। পরে তাকে নেওয়া হয় ঢামেক হাসপাতালে। সেখানে রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নূরের সঙ্গে থাকা দুটি ক্যামেরা দুর্বৃত্তরা নিয়ে গেছে বলে জানা যায়।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, দুজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে পটিয়ার পর নগরেও সড়ক অবরোধ বৈষম্যবিরোধী ও এনসিপির নেতা-কর্মীদের
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহারসহ দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সংগঠন দুটির নেতা–কর্মীরা এই কর্মসূচি পালন করছেন। আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে নগরের খুলশী এলাকায় অবস্থিত ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত জাকির হোসেন সড়ক অবরোধ শুরু করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতা–কর্মীরা। বিকেল সোয়া চারটায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত অবরোধ অব্যাহত রয়েছে।
বেলা সোয়া তিনটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতা–কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। কার্যালয়ের সামনে পুলিশ সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা সামনে থাকা পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে ডিআইজিকে তাঁদের সামনে এসে কথা বলার আহ্বান জানান। ডিআইজি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব সাজ্জাদ হোসাইন ঘটনাস্থলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পটিয়ার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়নি। গত জুলাইয়ে তাঁরা আমাদের ওপর যেভাবে জুলুম চালিয়েছেন, একইভাবে গতকাল মঙ্গলবার পটিয়ায় জুলুম চালানো হয়েছে। আমরা জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা সরাসরি ডিআইজির সঙ্গে কথা বলতে চাই।’
গতকাল রাত সাড়ে ৯টা ও সাড়ে ১১টায় পটিয়া থানার পুলিশের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীদের দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ১৯ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করে উভয় পক্ষ। প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাত ৯টার দিকে পটিয়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। পরে তাঁকে পটিয়া থানা চত্বরে নিয়ে আসা হয়। তবে ওই ছাত্রলীগ নেতার নামে কোনো মামলা না থাকায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চায়নি। এ নিয়ে আন্দোলনকারী নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের উত্তেজনা দেখা দেয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশের উদ্দেশে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ওই ছাত্রলীগ নেতাকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকাল সাড়ে ৯টায় পটিয়া থানা ঘেরাও করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেখান থেকে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কও অবরোধ করা হয়।