শাবিতে নিয়োগে অনিয়ম, তবু অভিযুক্ত শিক্ষককে যোগদানের নির্দেশ
Published: 17th, May 2025 GMT
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) গত বছর শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল। তদন্তে তাজবিউল ইসলাম নামে এক প্রার্থীর নিয়োগে অনিয়মের বিষয়টি প্রমাণ হয়। এ নিয়ে খবরও প্রকাশ হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। কিন্তু তাজবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা তো নেওয়া হয়নি, উল্টো তাঁকে জ্বালানি ও খনিজ প্রকৌশল (পিএমই) বিভাগে প্রভাষক হিসেবে চাকরিতে যোগদানের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ১৪ মে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, তাজবিউল ইসলামের নিয়োগের বিরুদ্ধে শনিবার সকালে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ থেকে প্রভাষক তাজবিউলকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানানো হয়। পিএমই বিভাগের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটি এই শিক্ষকের বেতন-ভাতা বন্ধ করে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর সুপারিশ করেছে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাঁকে যোগদানের অনুরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদি তাঁর নিয়োগ বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।
বিকেলে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে পিএমই বিভাগের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনকারী আরেক শিক্ষার্থী সাদিক হাসান দীপ্ত বলেন, যতদিন পর্যন্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হচ্ছে, ততদিন আমরা বিভাগে তালা দিয়ে রাখব। আমরা চাই, দ্রুত তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
জানা গেছে, গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে পিএমই বিভাগে প্রভাষক পদে একজন নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদনে প্রার্থীর যোগ্যতা চাওয়া হয় স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরে সর্বনিম্ন ৩.
খবর প্রকাশের পরও তাজবিউল ইসলামকে তৎকালীন প্রশাসন প্রভাষক পদে নিয়োগের সুপারিশ করে, যা নিয়ে গত ২২ আগস্ট আবার সমকালে খবর ছাপা হয়। এ ঘটনায় সে সময় পিএমই বিভাগের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৮ অক্টোবর তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্তে তাজবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং কেন তাঁর বেতন-ভাতা বন্ধ করে চাকরিচ্যুত করা হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর সুপারিশ করা হয়। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন সেই সুপারিশ তোয়াক্কা না করে ১৪ মে তাজবিউলকে চাকরিতে যোগদানের নির্দেশ দেয়।
অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও তাজবিউল ইসলামকে যোগদানের নির্দেশের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছালিম মোহাম্মদ আবদুল কাদির জানান, তাঁকে নিয়োগের ব্যাপারে সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে উপ-উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
পিএমই বিভাগের প্রধান ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্ত কমিটি অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে এবং যে সুপারিশগুলো করেছে, তা বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ আমরা দেখিনি। আমরা চাই তাজবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এই নিয়োগের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আনা হোক শাস্তির আওতায়। আর যদি এ নিয়োগ বহাল থাকে, তাহলে আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি অনিয়মের নজির হয়ে থাকবে।’
অনিয়ম ও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রভাষক তাজবিউল ইসলামের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প এমই ব ভ গ র ব যবস থ প রক শ তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
হত্যা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন সাত দিনের রিমান্ডে
যুবদলের কর্মী আরিফ সিকদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বুধবার বিকেলে রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক।
পিপি আজিজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা যুবদল কর্মী আরিফ সিকদার হত্যা মামলায় সুব্রত বাইনকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তাঁর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২৮ মে হাতিরঝিল থানায় করা অস্ত্র আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সুব্রত বাইনের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
২৭ মে কুষ্টিয়া থেকে সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজধানী থেকে সহযোগী শুটার আরাফাত ও শরীফকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযানের সময় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩টি গুলি ও একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করতেন বলে জানিয়েছে অভিযানসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।