এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বাণিজ্যের বিকাশে বাধা
Published: 17th, May 2025 GMT
উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, ভারতের মূল ভূখণ্ড ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর স্থলবন্দর ব্যবহার করে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য আমদানিতে কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে ফলের রস, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী ও তৈরি পোশাক (আরএমজি)। এ ধরনের অশুল্ক প্রতিবন্ধকতা বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের জন্য জটিলতা তৈরি করবে। আমি মনে করি, এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বাণিজ্যের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করবে।
নিয়ন্ত্রণমূলক তদারকি একটি দেশের সার্বভৌম অধিকার, তবে এ ধরনের হঠাৎ ও বেছে বেছে কিছু বন্দরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা—বিশেষ করে স্থলপথে—বাণিজ্যের খরচ বাড়িয়ে দেয় এবং অনিশ্চয়তা তৈরি করে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের পণ্যের জন্য প্রাকৃতিক ও গুরুত্বপূর্ণ বাজার, এবং সেখানে প্রবেশাধিকার সীমিত করা এই অঞ্চলের সীমান্তবর্তী বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল ব্যবসাগুলোর দক্ষতা ও প্রতিযোগিতা ক্ষুণ্ন করবে।
বিশেষ করে, তৈরি পোশাক রপ্তানি—যা বাংলাদেশের প্রধান খাত—দূরবর্তী সমুদ্রবন্দর যেমন কলকাতা ও নাহাভা শেভাতে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে বলে এই পণ্য রপ্তানিতে বিলম্ব ও অতিরিক্ত ব্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে। এতে উভয় দেশের জন্য উপকারী— এমন বাণিজ্যের সম্ভাবনা ক্ষুণ্ন হবে, এবং যে সরবরাহ শৃঙ্খলা বহু বছর ধরে গড়ে উঠেছে, তা চাপের মুখে পড়বে।
আমি আশা করি, দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক সহযোগিতার চেতনায় এসব অশুল্ক বাধা পুনর্বিবেচনা করা হবে। গঠনমূলক সংলাপ ও বাণিজ্য সহজীকরণে আরও ভালো সমন্বয় উভয় দেশের জন্যই মসৃণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উৎসাহিত করতে সহায়ক হবে।
সেলিম রায়হান: নির্বাহী পরিচালক, সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং( সানেম)।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন
সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।
প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট।
ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”
স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান
সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”
ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”
জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।
ডা. জয়নব
তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।
ঢাকা/শান্ত