টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে বিরাট কোহলি যখন এক অধ্যায়ের ইতি টানলেন, তখন তার খেলোয়াড়ি সাফল্যের বাইরের একটি চিত্র আবারও সামনে চলে এসেছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এই ভারতীয় ক্রিকেটারের দশম শ্রেণির পরীক্ষার মার্কশিট। যেখানে উঠে এসেছে তার ছাত্রজীবনের এক ভিন্ন রূপ।
২০০৪ সালে সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই) আয়োজিত পরীক্ষায় অংশ নেন কোহলি। সেই পরীক্ষায় তিনি ৬০০ নম্বরের মধ্যে অর্জন করেছিলেন ৪১৯। বিষয়ভিত্তিক বিচারে তার ফলাফল ছিল মিশ্র। ইংরেজি (৮৩), সমাজবিজ্ঞান (৮১) ও হিন্দি (৭৫) বিষয়ে তার পারফরম্যান্স তুলনামূলক ভালো হলেও গণিত (৫১) ও বিজ্ঞান (৫৫) নম্বরে পিছিয়ে ছিলেন। আইটি বা প্রাথমিক তথ্যপ্রযুক্তিতে তিনি পেয়েছিলেন ৭৪ নম্বর।
এই মার্কশিট নতুন কিছু নয়। ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো এটি প্রকাশ্যে আসে এক আইএএস কর্মকর্তা জিতিন যাদবের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে। তখন তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘যদি শুধু নম্বরই সব হতো, তাহলে হয়তো আজ আমরা বিরাট কোহলিকে এভাবে জানতাম না।’’
আরো পড়ুন:
জাবি ও ঢাবির দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ
৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারল ‘এ’ দল
এ বছর, সিবিএসই-র নতুন ফল প্রকাশের সময়েই পুরোনো এই মার্কশিট আবারও ফিরে এসেছে আলোচনায়। বিশেষ করে কোহলির টেস্ট থেকে অবসরের প্রেক্ষাপটে। বহু সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী কোহলির এই ফলাফলকে সামনে এনে সাফল্যের আসল সংজ্ঞা নিয়ে মত প্রকাশ করেছেন। কারও মতে, ‘‘নম্বরের পেছনে নয়, মানুষের জেদ, নিষ্ঠা আর আত্মনিয়োগের জায়গায় মূল্যায়ন হওয়া উচিত।’’ কেউ আবার লিখেছেন, ‘‘গণিতে ৫১ পেয়েও যিনি বিশ্বজয় করেছেন, তার গল্প অনুপ্রেরণার পাঠ হয়ে ওঠে।’’
ক্রিকেটের বাইরেও এ ঘটনা যেন এক সামাজিক বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে— স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোরবোর্ড নয়; জীবনের মূল মঞ্চে দাঁড়িয়ে কে কতটা নিবেদিত সেটার ওপর নির্ভর করে শেষ পর্যন্ত মানুষকে মনে রাখে ইতিহাস।
কোহলির স্কুলের মার্কশিটের সংখ্যা যতটা না অবাক করে, তার জীবনপথ আরও বেশি করে বুঝিয়ে দেয় জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন স্বপ্নের প্রতি অবিচল বিশ্বাস ও কঠোর পরিশ্রম।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক হল ক হল র
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি চাকরির পরীক্ষা একদিনে কেন
বাংলাদেশে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটি হলো বেকারত্ব। বিগত সরকার এই সমস্যা মোকাবিলায় দৃশ্যমান কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বরং সরকারি চাকরির আবেদন ফি অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করে চাকরি প্রত্যাশীদের ওপর অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেয়। ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই আবেদন ফি প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনে, যা প্রশংসনীয়।
বাংলাদেশের জনশক্তি রিপোর্ট ২০২৪ অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ২৬ দশমিক ৪ লাখ বেকার রয়েছেন, তবে গবেষকদের মতে, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। প্রতিবছর নতুন গ্র্যাজুয়েট ও চাকরি প্রত্যাশীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকায়, সীমিতসংখ্যক পদে বিপুলসংখ্যক আবেদন জমা পড়ে, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব আরও সমস্যার সৃষ্টি করছে। এক দিনে ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে ১৩ থেকে ১৪টি বা তারও বেশি গুরুত্বপূর্ণ চাকরির পরীক্ষা আয়োজন করার ফলে চাকরি প্রত্যাশীরা একাধিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শুক্র ও শনিবার (সকাল-বিকেল) একই দিনে একাধিক সময় ভাগ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা সম্ভব হলেও তা যথাযথভাবে পরিকল্পনা না করায় অনাকাঙ্ক্ষিত বিড়ম্বনার সৃষ্টি হচ্ছে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় পরিকল্পিত ও সমন্বিতব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। চাকরি প্রত্যাশীদের ন্যায্য সুযোগ নিশ্চিত করতে এবং সরকারি নিয়োগ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনার লক্ষ্যে আমরা সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মো. ওয়াদুদ রহমান
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়