সন্ধ্যা হলেই ক্যাম্পাসে বসছে মাদকের আসর, ঘটছে র্যাগিং
Published: 19th, May 2025 GMT
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) বাড়ছে মাদক সেবন। সন্ধ্যা হলেই ক্যাম্পাসের খেলার মাঠ, গবেষণা মাঠ, আবাসিক হলের ছাদে প্রতিদিন বসছে মাদকের আসর। সেই সঙ্গে ঘটছে র্যাগিংয়ের ঘটনা। রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আতঙ্ক বাড়ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথাযথ তদারকি ও বিচারহীনতাই এ জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্র-শিক্ষকরা। তাদের অভিযোগ, গত কয়েক মাসে একাধিক ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন কোনো শক্ত পদক্ষেপ নেয়নি।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাদ, কক্ষ, খেলার মাঠ ও গবেষণা মাঠে নিয়মিত বসছে মাদকের আসর। এতে অস্বস্তিতে পড়ছেন সাধারণ শিক্ষার্থী। এ প্রসঙ্গে জুলাই আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য তৌহিদ আহমেদ আশিক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘ক্যাম্পাসে সন্ধ্যার পর মাঠে সিদ্ধি সেবন হচ্ছে। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ও গবেষণা মাঠে গাজার মোহনীয় সুবাসের (ব্যঙ্গাত্মক) তীব্রতা অন্ধকার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে।’
এর আগে অভিযান চালিয়ে বহিরাগতসহ মাদক সেবন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসন স্বপ্রণোদিত হয়ে কখনও অভিযান চালায় না। কেবল আমরা ফোনে খবর দিলেই তারা আসে। অনেক সময় খবর পেয়েও আসে না। আবার হাতেনাতে ধরলেও সবসময় ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
গত ৯ মে রাতে ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি, পাল্টাপাল্টি মিছিল ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এক পক্ষ এটাকে ‘বোমাবাজি’, অপর পক্ষ ‘ককটেল বিস্ফোরণ’ বলে দাবি করে। বিস্ফোরণটি খোলা মাঠে হলেও আতঙ্ক ছড়ায় আশপাশে অবস্থানরত শিক্ষার্থী ও মাঠ-সংলগ্ন হলগুলোয়। তবে এ নিয়ে এখনও কোনো তদন্ত কমিটি গঠন বা পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে র্যাগিং চলাকালে শিক্ষার্থীরা প্রক্টরকে ফোনে না পেয়ে সরাসরি উপাচার্যকে অবহিত করেন। রাত পৌনে ২টার দিকে উপাচার্য গিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করেন। এর প্রায় দুই মাস পর গত ২১ এপ্রিল এগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট অনুষদের এক শ্রেণিকক্ষে জুনিয়রদের ফোন বন্ধ করে সিনিয়ররা র্যাগিং দিচ্ছে– এমন অভিযোগ পেয়ে প্রক্টর ও ছাত্র পরামর্শক উপস্থিত হয়ে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় অনুষদভিত্তিক ছাত্র সংগঠন জড়িতদের বিচার দাবি করে বিবৃতিও দেয়। দুটি ঘটনাতেই তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কিন্তু একটি ঘটনায় তিন মাস ও অপরটির এক মাস পার হলেও কাউকে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিচারহীনতার কারণেই এসব ঘটনা বাড়ছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.
র্যাগিং বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তৈরি হচ্ছে। প্রতিবেদন হয়ে গেলে শৃঙ্খলা বোর্ডের মাধ্যমে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ফেনীতে শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক দোকানি গ্রেপ্তার
ফেনীর পরশুরামে পাঁচ বছরের এক কন্যাশিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক দোকানিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম নিজাম উদ্দিন (৫৫)। গতকাল রোববার বিকেলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ ও শিশুটির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে মুদিদোকানি নিজাম উদ্দিন ওই শিশুকে চকলেট খাওয়ানোর কথা বলে তাঁর দোকানে নিয়ে যান। এ সময় তিনি দোকানের শাটার অর্ধেক টেনে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। শিশুটি চিৎকার ও কান্নাকাটি শুরু করলে একপর্যায়ে নিজাম উদ্দিন শিশুটিকে ছেড়ে দেন। এ সময় পরিবারকে কিছু না বলার জন্য তাঁকে ভয় দেখান তিনি।
পরে শিশুটি বাড়িতে গিয়ে তার মাকে ঘটনাটি জানায়। পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। এরপর গতকাল দুপুরে শিশুটির মা বাদী হয়ে নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পরশুরাম মডেল থানায় মামলা করেন।
পরশুরাম মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাকসুদ আহাম্মদ বলেন, শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে নিজাম উদ্দিনকে গতকাল বিকেলে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।