বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএসই’র সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি
Published: 19th, May 2025 GMT
কিছু অসাধু চক্র ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির কাছ থেকে প্রাপ্য অর্থ অথবা তালিকাভুক্ত ইস্যুয়ার কোম্পানি কর্তৃক ঘোষণাকৃত ও অবন্টনকৃত লভ্যাংশ প্রদানের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রলোভন দিয়ে প্রতারণ করছে। তাই এ বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকার জন্য সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ।
ডিএসই’র ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে ডিএসই কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছে যে, কিছু অসাধু চক্র ডিএসই’র নাম ব্যবহার করে, ডিএসই কর্তৃক সাময়িকভাবে লেনদেন স্থগিতকৃত ট্রেকহোল্ডার কোম্পানি অথবা লভ্যাংশ ঘোষণাকারী তালিকাভুক্ত ইস্যুয়ার কোম্পানির সম্মানীত বিনিয়োগকারীগণকে ফোন, ই-মেইল বা টেক্সট মেসেজ করে উক্ত বিনিয়োগকারীগণকে ওই সমস্ত ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির নিকট তাদের প্রাপ্য বাকী অর্থ অথবা তালিকাভুক্ত ইস্যুয়ার কোম্পানি কর্তৃক ঘোষণাকৃত ও অবন্টনকৃত লভ্যাংশ ঘুষের বিনিময়ে প্রদান করা হবে মর্মে তাদের ব্যবহারকৃত বিকাশ, নগদ বা অন্যান্য পেমেন্ট গেটওয়ের ওটিপি নম্বর অথবা তাদের এনআইডি নম্বর, বিওআইডি নম্বর, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর অথবা জন্ম সাল জানতে চাচ্ছে, যা ডিএসই কর্তৃপক্ষের কর্মপরিপন্থি। অতএব, সম্মানীত বিনিয়োগকারীগণকে ওই সমস্ত ফোনকল, ই-মেইল বা টেক্সট মেসেজ এড়িয়ে চলার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে জরুরি সাক্ষাৎ, কী ঘটছে বিএসইসির চেয়ারম্যানের ভাগ্যে?
সরকার পুঁজিবাজারের সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছে: ড.
প্রয়োজনে: ০১৭১৩-২৭৬৪১৫, ০১৭১৩-৩৬৯৩৬৩, ০১৭১৩-৪২৫৮৩১, ০১৭৩০৩৩১৮৬৬ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হলো।
ঢাকা/এনটি/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পরাবাস্তবতার আবেদন কি ফুরিয়েছে
অবচেতনের মানচিত্র ধরে এক অন্তহীন অভিযাত্রা কবি–সাহিত্যিকেরা যুগ যুগ ধরে করে আসছেন। সাহিত্যের দীর্ঘ যাত্রাপথে এমন কিছু বাঁক আসে, যা তার গতিপথকে চিরতরে বদলে দেয়। পরাবাস্তবতা বা সুররিয়ালিজম ছিল এমনই এক যুগান্তকারী আন্দোলন, যা কেবল শিল্পের আঙ্গিক নয়; বরং শিল্পীর বিশ্ববীক্ষা এবং আত্মবীক্ষণকে সম্পূর্ণ নতুন এক দর্শন দান করেছিল। এটি ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ। এর মূল লক্ষ্য ছিল মানব মনের সেই গভীরে প্রবেশ করা, যেখানে যুক্তির আলো পৌঁছায় না; সেই অবচেতনের অন্ধকার মহাসাগর থেকে তুলে আনা বিস্মৃত স্বপ্ন, অবদমিত ইচ্ছা আর আদিম প্রবৃত্তির মণি–মুক্তা। পরাবাস্তবতা তাই কেবল একটি শিল্পরীতি নয়, এটি চেতনার শৃঙ্খলমুক্তির এক দুঃসাহসী ইশতেহার।
১৯২৪ সালে ফরাসি কবি ও লেখক আঁদ্রে ব্রেটন তাঁর ‘পরাবাস্তবতার প্রথম ইশতেহার’ (ম্যানিফেস্টো অব সুররিয়ালিজম) প্রকাশের মাধ্যমে এই আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। ব্রেটনের সংজ্ঞায়, পরাবাস্তবতা হলো, ‘বিশুদ্ধ মানসিক স্বয়ংক্রিয়তা, যার মাধ্যমে মুখ বা লেখনী দিয়ে অথবা অন্য যেকোনো উপায়ে চিন্তার আসল কার্যকারিতাকে প্রকাশ করার ইচ্ছা পোষণ করা হয়। এটি যুক্তির সমস্ত নিয়ন্ত্রণ থেকে এবং সকল প্রকার নান্দনিক ও নৈতিক উদ্দেশ্য থেকে বিযুক্ত চিন্তার এক শ্রুতলিখন।’
এই দর্শনের প্রধান পাথেয় ছিল ভিয়েনার মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েডের যুগান্তকারী মনঃসমীক্ষণ তত্ত্ব। ফ্রয়েড দেখিয়েছিলেন যে মানুষের সচেতন মনের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক বিশাল অবচেতন জগৎ, যা তার আচরণ, স্বপ্ন ও ব্যক্তিত্বকে নিয়ন্ত্রণ করে। পরাবাস্তববাদীরা ফ্রয়েডের এই তত্ত্বকে লুফে নিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে শিল্পসৃষ্টির উদ্দেশ্যই ছিল যুক্তির সেন্সরশিপকে ফাঁকি দিয়ে অবচেতন মনের এই লুকানো জগৎকে উন্মোচিত করা। তাঁরা চেয়েছিলেন, স্বপ্ন ও বাস্তবতাকে একীভূত করে এক ‘পরম বাস্তবতা’ বা ‘সুররিয়ালিটি’ তৈরি করতে।
পরাবাস্তবতা ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ।পরাবাস্তবতার পদযাত্রা প্যারিসের শৈল্পিক পরিমণ্ডল থেকে শুরু হলেও এর ঢেউ খুব দ্রুতই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। আঁদ্রে ব্রেটন ছিলেন এই আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা, কিন্তু তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় সমবেত হয়েছিলেন বহু প্রতিভাবান স্রষ্টা, যাঁরা নিজ নিজ ভাষায় ও সংস্কৃতিতে পরাবাস্তবতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।
আঁদ্রে ব্রেটন (জন্ম: ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৬—মৃত্যু: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬৬)