ছয় সপ্তাহ আগের কথা। আয়াক্সের ৩৭তম ডাচ লিগের শিরোপা জয় তখন শুধুই সময়ের ব্যাপার বলে মনে হচ্ছিল। বিশেষ করে ৩০ মার্চ সে সময় দ্বিতীয় স্থানে থাকা পিএসভি আইন্দহফেনের বিপক্ষে ২–০ গোলের জয়ের পর অনেকে আয়াক্সের হাতে ট্রফিও তুলে দিয়েছিলেন। ৩৪ ম্যাচের লিগে কোনো দল যদি ২৭তম ম্যাচশেষে ৯ পয়েন্টে এগিয়ে থাকে, তখন সে দলকে ট্রফি তুলে দেওয়া ছাড়া আর উপায় কী!

এমনকি লিগ শিরোপা হারানোর বিষয়টি মেনে নিয়েছিল দুই নম্বরে থাকা পিএসভি অধিনায়ক লুক দে জংও। আয়াক্সের কাছে হারের পর তিনি বলেছিলেন, ‘৯ পয়েন্ট অনেক বেশি। আমার মনে হয় না, আমরা এই ব্যবধান মেটাতে পারব। আমরা চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা করার জন্য দুই নম্বরে থাকার ওপর জোর দিচ্ছি।’

প্রতিদ্বন্দ্বীও যখন হার মেনে নেয়, তখন তো শিরোপা–উৎসবের প্রস্তুতিই শেষ কথা। কিন্তু ভোজবাজির মতো সব বদলাতে সময় লাগেনি। অনেকটা আকস্মিকভাবেই অসম্ভব এক পতনের দিকে যাত্রা শুরু করে আয়াক্স। আর উল্টোরথে পিএসভি যাত্রা করে অবিশ্বাস্য এক উত্থানের দিকে, যা শেষ হয়েছে গতকাল পিএসভির শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে।

আরও পড়ুনইন্টার মায়ামি কেমন, এবার বুঝতে পারবেন মেসি৪ ঘণ্টা আগে

টুয়েন্টের বিপক্ষে নিজেদের শেষ লিগ ম্যাচে আয়াক্স জিতেছে ২–০ গোলে। তবে একই সময়ে স্পার্টা রটেরডামকে ৩–১ গোলে হারিয়ে ১ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শিরোপা জিতেছে পিএসভি। মাঝে যা ঘটেছে, তা রীতিমতো ব্যাখ্যাতীত।

পিএসভি–আয়াক্সের সেই ম্যাচে পর দুই দলের সামনে ছিল ৭ ম্যাচ। সেই সাত ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই পয়েন্ট হারিয়েছে আয়াক্স। হাতে থাকা ২১ পয়েন্টের মধ্যে আয়াক্স পায় ১১ পয়েন্ট। অন্যদিকে পরের ৭ ম্যাচের প্রতিটিতে জিতে পিএসভি পায় ২১ পয়েন্টের সবটাই। অর্থাৎ পরের ৭ ম্যাচে ৯ পয়েন্টের পার্থক্য মিটিয়ে উল্টো ১ পয়েন্টের লিড নিয়ে নেয় পিএসভি। যার ফলে চ্যাম্পিয়নের মুকুটও শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পেরেছে তারা।

নাটক অবশ্য শুধু এটুকুতেই শেষ নয়; এফসি গ্রোনিনগেনের বিপক্ষে ম্যাচটিতে পয়েন্ট হারানোর দুঃখ আয়াক্সকে নিশ্চিতভাবে আরও অনেক দিন তাড়া করবে। সেটি ছিল লিগের ৩৩তম ম্যাচ। সেদিন নির্ধারিত সময়ের পর যোগ করা সময়েও ২–১ ব্যবধানে জয়ের পথে ছিল আয়াক্স। কিন্তু ৯৯ মিনিটে থেইমান ব্লকজেইলের গোলে হৃদয় ভাঙে আয়াক্সের। ম্যাচটা ২–২ ব্যবধানে ড্র করে ২ পয়েন্ট হারায় ৩৬ বারের চ্যাম্পিয়নরা। ১ পয়েন্টে এগিয়ে যায় পিএসভি। মৌসুমের শেষ লিগ ম্যাচে ২ পয়েন্টের জন্যই আর শিরোপা জেতা হলো না আয়াক্সের।

আরও পড়ুনঅবশেষে হচ্ছে আর্জেন্টিনা–স্পেন ফিনালিসিমা, জানা গেল সম্ভাব্য দিন–তারিখ ১৯ ঘণ্টা আগে

অবিশ্বাস্যভাবে শিরোপা হাতছাড়া করার বিষয়টি যেন মানতেই পারছেন না আয়াক্সের ৩৬ বছর বয়সী কোচ ফ্রান্সেসকো ফারিওলি। গতকাল ম্যাচ শেষে অঝোরে কাঁদতে দেখা গেছে তাঁকে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সময় একাধিকবার কথা জড়িয়ে গেছে তাঁর, নিজেকে সামলাতে চুপও থেকেছেন। যেটুকু বলতে পেরেছেন, তাতে অবশ্য শক্ত মানসিকতারই পরিচয় দিয়েছেন, ‘এটা একটা ভীষণ কঠিন শিক্ষা। আর যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। আমার কোনো ধরনের আফসোস নেই।’

এমন পতন কে কবে কে দেখেছিল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আয় ক স র ব যবধ ন প এসভ

এছাড়াও পড়ুন:

৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে

ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মাত্র ১২৭ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আরও কম, ১২৫ রানে। কিন্তু রোববার (০২ নভেম্বর) তারা চোখে চোখ রেখে লড়াই করল আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে আফগানদের করা ২১০ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০১ রান করে হার মানে মাত্র ৯ রানে। দুই ইনিংসে রান হয়েছে মোট ৪১১টি। যা আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ।

আরো পড়ুন:

কেন বিপিএল থেকে বাদ পড়ল চিটাগং কিংস

ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত

স্বাগতিকরা থেমে থেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও ব্রিয়ান বেনেট, সিকান্দার রাজা, রায়ান বার্ল ও তাশিনগা মুসেকিওয়ার ব্যাটে লড়াই করে শেষ বল পর্যন্ত। বেনেট ৩ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৪৭ রান। অধিনায়ক রাজা ৭টি চার ও ২ ছক্কায় করেন ৫১ রান। বার্ল ১৫ বলে ৫ ছক্কায় খেলেন ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস। আর মুসেকিওয়া ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ২৮ রান।

বল হাতে আফগানিস্তানের আব্দুল্লাহ আহমদজাই ৪ ওভারে ৪২ রানে ৩টি উইকেট নেন। ফজল হক ফারুকি ৪ ওভারে ২৯ রানে ২টি ও ফরিদ আহমদ ৩ ওভারে ৩৮ রানে নেন ২টি উইকেট।

তার আগে উদ্বোধনী জুটিতে আফগানিস্তানের রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ১৫.৩ ওভারে ১৫৯ রানের জুটি গড়েন। এই রানে গুরবাজ আউট হন ৪৮ বলে ৮টি চার ও ৫ ছক্কায় ৯২ রানের ইনিংস খেলে। মাত্র ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি। ১৬৩ রানের মাথায় ইব্রাহিম আউট হন ৭টি চারে ৬০ রান করে। এরপর সেদিকুল্লাহ অটল ১৫ বলে ২টি চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস খেলে দলীয় সংগ্রহকে ২১০ পর্যন্ত নিয়ে যান।

বল হাতে জিম্বাবুয়ের ব্রাড ইভান্স ৪ ওভারে ৩৩ রানে ২টি উইকেট নেন। অপর উইকেটটি নেন রিচার্ড এনগ্রাভা।

৯২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন গুরবাজ। আর মোট ১৬৯ রান করে সিরিজ সেরা হন ইব্রাহিম জাদরান।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ