৯ পয়েন্ট আর ৯৯ মিনিটের গোল: একটি আশ্চর্য পতনের গল্প
Published: 19th, May 2025 GMT
ছয় সপ্তাহ আগের কথা। আয়াক্সের ৩৭তম ডাচ লিগের শিরোপা জয় তখন শুধুই সময়ের ব্যাপার বলে মনে হচ্ছিল। বিশেষ করে ৩০ মার্চ সে সময় দ্বিতীয় স্থানে থাকা পিএসভি আইন্দহফেনের বিপক্ষে ২–০ গোলের জয়ের পর অনেকে আয়াক্সের হাতে ট্রফিও তুলে দিয়েছিলেন। ৩৪ ম্যাচের লিগে কোনো দল যদি ২৭তম ম্যাচশেষে ৯ পয়েন্টে এগিয়ে থাকে, তখন সে দলকে ট্রফি তুলে দেওয়া ছাড়া আর উপায় কী!
এমনকি লিগ শিরোপা হারানোর বিষয়টি মেনে নিয়েছিল দুই নম্বরে থাকা পিএসভি অধিনায়ক লুক দে জংও। আয়াক্সের কাছে হারের পর তিনি বলেছিলেন, ‘৯ পয়েন্ট অনেক বেশি। আমার মনে হয় না, আমরা এই ব্যবধান মেটাতে পারব। আমরা চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা করার জন্য দুই নম্বরে থাকার ওপর জোর দিচ্ছি।’
প্রতিদ্বন্দ্বীও যখন হার মেনে নেয়, তখন তো শিরোপা–উৎসবের প্রস্তুতিই শেষ কথা। কিন্তু ভোজবাজির মতো সব বদলাতে সময় লাগেনি। অনেকটা আকস্মিকভাবেই অসম্ভব এক পতনের দিকে যাত্রা শুরু করে আয়াক্স। আর উল্টোরথে পিএসভি যাত্রা করে অবিশ্বাস্য এক উত্থানের দিকে, যা শেষ হয়েছে গতকাল পিএসভির শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে।
আরও পড়ুনইন্টার মায়ামি কেমন, এবার বুঝতে পারবেন মেসি৪ ঘণ্টা আগেটুয়েন্টের বিপক্ষে নিজেদের শেষ লিগ ম্যাচে আয়াক্স জিতেছে ২–০ গোলে। তবে একই সময়ে স্পার্টা রটেরডামকে ৩–১ গোলে হারিয়ে ১ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শিরোপা জিতেছে পিএসভি। মাঝে যা ঘটেছে, তা রীতিমতো ব্যাখ্যাতীত।
পিএসভি–আয়াক্সের সেই ম্যাচে পর দুই দলের সামনে ছিল ৭ ম্যাচ। সেই সাত ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই পয়েন্ট হারিয়েছে আয়াক্স। হাতে থাকা ২১ পয়েন্টের মধ্যে আয়াক্স পায় ১১ পয়েন্ট। অন্যদিকে পরের ৭ ম্যাচের প্রতিটিতে জিতে পিএসভি পায় ২১ পয়েন্টের সবটাই। অর্থাৎ পরের ৭ ম্যাচে ৯ পয়েন্টের পার্থক্য মিটিয়ে উল্টো ১ পয়েন্টের লিড নিয়ে নেয় পিএসভি। যার ফলে চ্যাম্পিয়নের মুকুটও শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পেরেছে তারা।
নাটক অবশ্য শুধু এটুকুতেই শেষ নয়; এফসি গ্রোনিনগেনের বিপক্ষে ম্যাচটিতে পয়েন্ট হারানোর দুঃখ আয়াক্সকে নিশ্চিতভাবে আরও অনেক দিন তাড়া করবে। সেটি ছিল লিগের ৩৩তম ম্যাচ। সেদিন নির্ধারিত সময়ের পর যোগ করা সময়েও ২–১ ব্যবধানে জয়ের পথে ছিল আয়াক্স। কিন্তু ৯৯ মিনিটে থেইমান ব্লকজেইলের গোলে হৃদয় ভাঙে আয়াক্সের। ম্যাচটা ২–২ ব্যবধানে ড্র করে ২ পয়েন্ট হারায় ৩৬ বারের চ্যাম্পিয়নরা। ১ পয়েন্টে এগিয়ে যায় পিএসভি। মৌসুমের শেষ লিগ ম্যাচে ২ পয়েন্টের জন্যই আর শিরোপা জেতা হলো না আয়াক্সের।
আরও পড়ুনঅবশেষে হচ্ছে আর্জেন্টিনা–স্পেন ফিনালিসিমা, জানা গেল সম্ভাব্য দিন–তারিখ ১৯ ঘণ্টা আগেঅবিশ্বাস্যভাবে শিরোপা হাতছাড়া করার বিষয়টি যেন মানতেই পারছেন না আয়াক্সের ৩৬ বছর বয়সী কোচ ফ্রান্সেসকো ফারিওলি। গতকাল ম্যাচ শেষে অঝোরে কাঁদতে দেখা গেছে তাঁকে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সময় একাধিকবার কথা জড়িয়ে গেছে তাঁর, নিজেকে সামলাতে চুপও থেকেছেন। যেটুকু বলতে পেরেছেন, তাতে অবশ্য শক্ত মানসিকতারই পরিচয় দিয়েছেন, ‘এটা একটা ভীষণ কঠিন শিক্ষা। আর যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। আমার কোনো ধরনের আফসোস নেই।’
এমন পতন কে কবে কে দেখেছিল.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আয় ক স র ব যবধ ন প এসভ
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।
আরো পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।
যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।
লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।
বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।
ঢাকা/আমিনুল