আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার জিতেছেন ভারতীয় লেখক, আইনজীবী ও অধিকারকর্মী বানু মুশতাক। মঙ্গলবার ছোটগল্পের সংকলন ‘হার্ট ল্যাম্প’ এর জন্য তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

লন্ডনের টেট মডার্ন গ্যালারিতে পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে বানু মুশতাক বলেন, ‘মহান এই সম্মান আমি কোনো ব্যক্তি হিসেবে গ্রহণ করছি না, বরং এমন এক কণ্ঠস্বর হিসেবে গ্রহণ করছি, যা আরও বহু কণ্ঠের সঙ্গে সমবেতভাবে উচ্চারিত হয়েছে।’

বানু মুশতাক কান্নাড়া ভাষায় লেখালেখি করেন। এই ভাষার লেখকদের মধ্যে তিনিই প্রথম বুকার পুরস্কার পেলেন। ৭৭ বছর বয়সী এই লেখকের ছোটগল্পের সংকলন কান্নাড়া ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন দীপা ভাস্তি। গল্প বাছাইয়ে তিনি বানু মুশতাককে সাহায্য করেছেন। পুরস্কারের অর্থমূল্য ৫০ হাজার পাউন্ড (৬৭ হাজার ডলার), যা অনুবাদক দীপা ভাস্তির সঙ্গে তিনি সমানভাবে ভাগ করে নেবেন।

বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি ম্যাক্স পোর্টার ‘হার্ট ল্যাম্প’-কে ‘ইংরেজি পাঠকদের জন্য সত্যিকারের নতুন কিছু’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি একটি বিপ্লবাত্মক (র‍্যাডিক্যাল) অনুবাদ, যা ভাষার গতিপথ বদলে দেয়, ভিন্ন ভিন্ন ইংরেজির মধ্যে নতুন রূপ ও ছোঁয়া তৈরি করে। এটি আমাদের অনুবাদের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং বিস্তৃত করে।’

‘হার্ট ল্যাম্প’-এ ১২টি গল্প সংকলিত হয়েছে, যেগুলো ১৯৯০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। গল্পগুলোতে দক্ষিণ ভারতের মুসলিম সমাজের দৈনন্দিন জীবন ফুটে উঠেছে। গল্পগুলোতে বিশেষ করে নারী ও কিশোরীদের অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

বানু মুশতাক নারী অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা এবং বৈষম্যবিরোধী আইনগত লড়াইয়ের জন্যও সুপরিচিত।

অনুষ্ঠানে বানু মুশতাক বলেন, ‘আমার গল্পগুলো নারীদের ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে। ধর্ম, সমাজ এবং রাজনীতি কীভাবে তাঁদের থেকে নিঃশর্ত আনুগত্য দাবি করে, এর মাধ্যমে তাঁদের ওপর কীভাবে অমানবিক নিষ্ঠুরতা চালানো হয়— এ সব গল্পে আমি তা বর্ণনা করতে চেষ্টা করেছি। নারীদের কেবল অধীনস্থ রূপেই কীভাবে গড়ে তোলা হয়, আমি গল্পগুলোতে তা দেখাতে চেয়েছি।’ সূত্র-এএফপি

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ক র প রস ক র প রস ক র ত হয় ছ ম শত ক অন ব দ

এছাড়াও পড়ুন:

১৪ দেশে ফের শুল্ক আরোপ, বাণিজ্যে অস্থিরতার শঙ্কা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিত্র দেশ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ আরও ১৪ দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এসব দেশকে আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্কের মুখোমুখি হতে হবে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ট্রাম্পের নতুন ঘোষণা বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করবে। খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই এর খারাপ প্রভাব পড়বে।

শুল্ক আরোপ করা হয়েছে এমন অন্য দেশগুলো হলো– বাংলাদেশ, মিয়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, কাজাখস্তান, তিউনিসিয়া ও মালয়েশিয়া। 

মিয়ানমার ও লাওসের ওপর সবচেয়ে বেশি ৪০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। মিয়ানমার যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও সামুদ্রিক খাবার এবং লাওস ট্রেক্সটাইল পণ্যসহ জুতা, কাঠের আসবাব, ইলেকট্রনিক উপাদান ও অপটিক্যাল ফাইবার রপ্তানি করে। থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া ৩৬ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়েছে। কম্বোডিয়া যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সটাইল, পোশাক, জুতা ও সাইকেল এবং থাইল্যান্ড কম্পিউটার যন্ত্রাংশ, রাবার পণ্য ও রত্নপাথর রপ্তানি করে। সার্বিয়ার ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে সফটওয়্যার ও আইটি পরিষেবা এবং গাড়ির টায়ার রপ্তানি করে থাকে। 

ইন্দোনেশিয়া ৩২ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হয়েছে। দেশটি পাম অয়েল, কোকো মাখন ও সেমিকন্ডাক্টর যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে থাকে। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের বসনিয়ার প্রধান রপ্তানি অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা প্লাটিনাম, হীরা, যানবাহন এবং গাড়ির যন্ত্রাংশ রপ্তানি করে। 

জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কাজাখস্তান, তিউনিসিয়া ও মালয়েশিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। জাপান যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি, গাড়ির যন্ত্রাংশ ও ইলেকট্রনিকস পণ্য; দক্ষিণ কোরিয়া যানবাহন, যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিকস পণ্য; কাজাখস্তান তেল, ইউরেনিয়াম, ফেরোঅ্যালয় ও রুপা এবং মালয়েশিয়া ইলেকট্রনিকস ও বৈদ্যুতিক পণ্য রপ্তানি করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিউনিসিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য হলো, প্রাণী ও উদ্ভিজ্জ চর্বি, পোশাক, ফল ও বাদাম। বাংলাদেশের ওপর শুল্ক আরোপ হয়েছে ৩৫ শতাংশ। দেশটি বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে। 

শুল্ক আরোপের চিঠিতে ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই দেশগুলোর সঙ্গে তাদের বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায়। তবে তা হতে হবে ন্যায্য ও সুষম বাণিজ্যের মাধ্যমে। তিনি হুমকি দিয়েছেন, কোনো দেশ প্রতিশোধমূলক পাল্টা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিলে, তাদের ওপর আরও উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হবে। আর বাণিজ্য বাধা দূর করতে আলোচনা চাইলে সেই পথ খোলা আছে। সোমবার শুল্ক আরোপের সময়সীমা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, সময়সীমার ঘোষণাটি শতভাগ মানা হবে তা নয়। কেউ আলোচনা চাইলে পথ খোলা। 

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করবেন। দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় বলেছে, সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারা আলোচনায় বসবে। খবর রয়টার্স ও বিবিসির। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ