‘আমি আর প্রসেনজিৎ যখন পর্দায় থাকি, তখন সবকিছু ভুলে যাই’
Published: 23rd, May 2025 GMT
ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় জুটি প্রসেনজিৎ ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। এই জুটির প্রথম চলচ্চিত্র ‘নাগপঞ্চমী’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। তারপর অনেক জনপ্রিয় বাংলা সিনেমা উপহার দিয়েছেন রোমান্টিক এই জুটি।
২০০২ সালে এই জুটির অভিনীত ‘প্রতিহিংসা’ সিনেমা মুক্তি পায়। তারপর সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই বদলে যায়। মাঝে ১৪ বছর একসঙ্গে কোনো সিনেমায় দেখা যায়নি তাদের। দীর্ঘ ১৪ বছরের বিরতি ভেঙে ‘প্রাক্তন’ সিনেমার মাধ্যমে একসঙ্গে ফেরেন তারা। নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখার্জি পরিচালিত এ সিনেমাটি ২০১৬ সালের ২৭ মে মুক্তি পায়। এ সিনেমা মুক্তির পর ভূয়সী প্রশংসা কুড়ান তারা। ‘প্রাক্তন’ মুক্তির পর আরো দুটো সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেন প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা।
প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা অভিনীত ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ সিনেমা। ২০০০ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এটি। এ সিনেমার ‘চোখ তুলে দেখো না’ গানটি এখনো দর্শক হৃদয়ে দোলা দেয়। ২৫ বছর পর ফের সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। আগামী ৩০ মে কলকাতায় মুক্তি পাবে এটি। এ সিনেমা মুক্তির পর কীভাবে ২৫ বছর কেটে গেল, তা নিয়ে বিস্মিত ঋতুপর্ণা।
আরো পড়ুন:
‘পুরুষরা অসংবেদনশীল, ওদের বোঝার ক্ষমতা কম’
পোশাক নিয়ে তনুশ্রীকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বলেন, “আমার কাছে খুব বিস্ময়ের ব্যাপার, কীভাবে ২৫ বছর কেটে গেল বুঝতে পারলাম না। ২৫ বছর ধরে একটা সিনেমাকে আমরা বয়ে নিয়ে এসেছি। আজও সব বিয়েবাড়িতে এই গানটা বাজে। জীবনে কিছু জিনিস থেকে যায়।”
২৫ বছর কেটে গেলেও প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার রসায়ন এখনো তেমনি আছে। যদিও মাঝে দীর্ঘ সময় এ জুটিকে একসঙ্গে দেখা যায়নি। তবে তাদের প্রত্যাবর্তন মাঝের বিরতি ভুলিয়ে দিয়েছে। ঋতুপর্ণা বলেন, “আমি আর প্রসেনজিৎ যখন পর্দায় থাকি তখন সবকিছু ভুলে যাই। আমাদের কাছে তখন ওই চরিত্রগুলোই বাস্তব হয়ে ওঠে। ওর বাইরে কোনো জীবন আছে, সেটা ভুলে যাই। আমাদের তখন ওই মুহূর্তগুলো হয়ে ওঠে আপসহীন।”
রোমান্টিক সিনেমায় দারুণ জীবন্ত ঋতুপর্ণা-প্রসেনজিৎ। এ জুটি অনেকগুলো রোমান্টিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। অভিনয় করতে গিয়ে কখনো পরস্পরের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েননি? এমন প্রশ্নের জবাবে ঋতুপর্ণা বলেন, “আমাদের কাছে প্রেমটা অন্যরকম। দু’জন দু’জনের প্রতি রয়েছে আস্থা, নির্ভরতা ও ভরসা। সেটা এতটা সুন্দর যে আমরা বছরের পর বছর কথা না বললেও সেই জায়গা রয়ে যাবে।”
ভারতীয় বাংলা সিনেমাপ্রেমীদের কাছে প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটির দর্শকপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। দীর্ঘ দিনের গুঞ্জন, ব্যক্তিগত জীবনে এ জুটি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। সত্যি কী প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার মাঝে প্রেম ছিল বা আছে? গত বছর এই প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন তারা।
প্রথমে এ প্রশ্নের উত্তর দেন প্রসেনজিৎ। তিনি বলেছিলেন, “আপনি বলতে পারবেন, উত্তম-সুচিত্রার কি প্রেম ছিল? কিছু জিনিস অজানা থাকুক। যখন আমরা থাকব না, তখনো যাতে এই আলোচনাটা চলে।”
একই প্রশ্নের জবাবে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত তখনো রহস্য করে বলেছিলেন, “পরবর্তী প্রজন্মে যেন এটাই হাতড়ে যায়, ওদের মধ্যে কী ছিল!” ঋতুপর্ণার এ বক্তব্যের পর প্রসেনজিৎ বলেছিলেন, “আসলে কিছু সম্পর্ক বিশ্লেষণের বাইরে; সেটাকে ওরকমভাবেই রাখা ভালো।”
প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে আলাদা আলাদাভাবে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তার মধ্যে ৫০টি সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন তারা। তাদের অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘অযোগ্য’। গত বছর মুক্তি পায় এটি।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র একসঙ গ ২৫ বছর বছর ক
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারের যে স্থান থেকে একসঙ্গে দেখা যায় পাহাড়-সাগর আর ঝরনা
সাগরের পাশে বিশাল পাহাড়। সেই পাহাড়ের বুক চিরে বেরিয়েছে শীতল পানির ঝরনা। পাহাড়-ঝরনার নাম—হিমছড়ি। তবে পাহাড়টি আগে পরিচিত ছিল ‘হিমপরির পাহাড়’ নামে। স্থানীয় মানুষের কাছে প্রচলিত গল্প অনুযায়ী, একসময় উঁচু পাহাড়টির চূড়ায় সময় কাটাতেন সাগর থেকে উঠে আসা পরিরা। কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে টেকনাফের দিকে ১২ কিলোমিটার এগোলোই দেখা মেলে এই পাহাড়ের। এলাকাটির নামই এখন হিমছড়ি। এলাকায় অবস্থিত সমুদ্রসৈকতও পরিচিত হিমছড়ি সৈকত নামে।
প্রায় ২৮০ ফুট উঁচু হিমছড়ি পাহাড়ের চূড়ায় বসে দেখা যায় চারপাশের নয়নাভিরাম দৃশ্য। উপভোগ করা যায় সমুদ্রের গর্জন। ঝরনার শীতল জলে শরীর ভিজিয়ে নেওয়ার সুযোগ তো আছেই।
সড়কপথে হিমছড়ি পৌঁছানোর পরই চোখে পড়ে দুপাশে শতাধিক দোকানপাট। সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, জিপ-মাইক্রোবাসসহ নানা যানবাহনের ভিড়। অনেক পর্যটকের কাছে অস্বস্তিকর ঠেকে এই দৃশ্য। তবে হিমছড়িতে পাহাড়-সাগর আর ঝরনার দৃশ্য দেখার আনন্দ যেন এসব ভুলিয়ে দেয়।
দেখা যায় ঝরনার আশপাশে কয়েকটি বিশ্রামাগার। ঝরনায় যাতায়াতের রাস্তাতে বসানো হয়েছে রকমারি পণ্য বেচাবিক্রির ২০ থেকে ২৫টি দোকান। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ পর্যটকেরা বিশ্রামাগারে বসে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ দোকানে গিয়ে সেরে নিচ্ছেন কেনাকাটা। শামুক-ঝিনুক দিয়ে তৈরি রকমারি পণ্য, ফলমূল, আচার, ডাব, চিনাবাদামসহ নানা খাবারদাবার রয়েছে এসব দোকানে। ঝরনার আশপাশে ১০ থেকে ১২ জন ভ্রাম্যমাণ আলোকচিত্রীকে ছবি তোলার জন্য পর্যটকদের পিছু নিতে দেখা যায়।গত শুক্রবার সকাল ১০টা। সরেজমিনে দেখা যায় হিমছড়ি ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রে শতাধিক নারী-পুরুষের ভিড়। কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে পর্যটকেরা ভেতরে ঢুকছেন। টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ৩৫ টাকা। এক টিকিটেই ঝরনা দেখা ও পাহাড়চূড়ায় ওঠার সুযোগ। ভেতরে ঢুকেই দেখা গেল, পর্যটকদের বেশির ভাগ ছুটছেন ঝরনার দিকে। কেউ ঝরনার হিমশীতল পানিতে গা ভাসাচ্ছেন। কেউ ছবি তোলায় ব্যস্ত। কয়েকজন তরুণকে হিমছড়ি ঝরনায় পানি কম থাকা নিয়ে আক্ষেপ করতে দেখা যায়।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে ঝরনা দেখতে এসেছেন শিক্ষক কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় স্ত্রী-সন্তানেরা বলে রাখেন, কক্সবাজার পৌঁছে সমুদ্রসৈকতের লোনাপানিতে গোসল সেরে তাঁদের হিমছড়ির ঝরনা দেখাতে নিয়ে যেতে হবে। তাই ঝরনায় নিয়ে এলাম।’ কামরুল ইসলাম আরও বলেন, ১১ বছর আগে তিনি প্রথমবার যে হিমছড়ি ঝরনা দেখে গেছেন, এখন যেন তার অনেক কিছুই নেই। পাহাড়ের ওপর থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে খুবই কম। তাঁর দাবি, অযত্নে-অবহেলায় এই পাহাড়-ঝরনা সৌন্দর্য হারাচ্ছে।
কক্সবাজারের হিমছড়ির ঝরণা। অযত্ন-অবহেলায় ম্লান পানিপ্রবাহ। সম্প্রতি তোলা