চাকরি ছেড়ে ওসমান এখন উদ্যোক্তা, বছরে আয় ২০ লাখ টাকা
Published: 24th, May 2025 GMT
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা শেষে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছিলেন তিনি। করোনাভাইরাস মহামারির সময় চাকরি ছেড়ে চলে যান নিজ বাড়িতে, শুরু করেন খামারি জীবন। স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থার সাহায্য নিয়ে খামারে কেঁচো সার, মাংস ও দুধ উৎপাদনের কাজ শুরু করেন। এখন বছরে খরচ বাদে তাঁর আয় থাকে প্রায় ২০ লাখ টাকা।
এই উদ্যোক্তা হলেন ভোলার সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ছোট আলগী গ্রামের মো.
সম্প্রতি ছোট আলগী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ওসমান গনীর খামারের কাছেই উন্নত মানের ঘাসের আবাদ। তিনি প্রায় ৩ একর ২০ শতাংশ জমিতে গবাদি পশুর জন্য ঘাস চাষ করেছেন। এ খেতে কেঁচো সার ছাড়া কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না।
প্রসঙ্গত, কেঁচো সার একটি জৈব সার, যা জমির উর্বরতা বাড়াতে ব্যবহার করা হয়। এক মাসের বাসি গোবর খেয়ে কেঁচো মলত্যাগ করে এবং এর সঙ্গে কেঁচোর দেহ থেকে রাসায়নিক পদার্থ বের হয়ে এ সার তৈরি হয়। এটাকে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার বলা হয়।
ওসমানের খামারে ঢুকতেই বাঁ পাশে চোখে পড়ে কেঁচো সারের খামার, যেখানে পাকাভাবে ১০টি চেম্বার করা আছে। এ খামারের পশ্চিম পাশে গরুর খামার। এর এক পাশে উন্নত জাতের ৪টি দুধের গরু, আরেক পাশে মাংস উৎপাদনের জন্য প্রায় ১৫টি গরু আছে। খামারের পাশেই ছোট করে কার্যালয়। তার ওপরে কবুতরের খামার। পাশে ছাগল ও কেঁচো সারের খামার। এখানে আরও ৫০টি চেম্বার আছে, যেগুলোর কিছু পাকা, কিছু রিংস্ল্যাবের। এটির সামনে ফাঁকা জমিতে সবজি, বেগুন ও লেবুর আবাদ। খামারের চারপাশে রয়েছে কাঁঠাল, খেজুর ও নারকেলগাছ।
ওসমান গনী ২০১৯ সালে পারিবারিক ১ একর ৩০ শতাংশ জমিতে ১০টি ছাগল দিয়ে একটি খামার দেন। করোনার সময় নানা অনিশ্চয়তায় তিনি চাকরি ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসেন। সে বছরই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে ১২টি গরু নিয়ে মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়ায় হাত দেন, সফলতাও পান। পরের বছর বিদেশি জাতের চারটি দুধের গরু কেনেন। শুরু হয় পুরোদমে তাঁর খামারি জীবন।
ওসমান গনী বলেন, দুধের গরু না বাড়িয়ে তিনি দেশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজাকরণ, মাংস প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি ও কেঁচো সার উৎপাদনের কাজে হাত দেন।
মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ প্ল্যান্ট নির্মাণের আশা ব্যক্ত করে ওসমান গনী বলেন, ভোলা শহরের টাউন স্কুল মাঠের সামনে তাঁর মালিকানাধীন মাংস বিক্রির একটি দোকান আছে। মানসম্মত মাংসের জন্য এর সুনাম আছে। তিনি গরু কিনে সঙ্গে সঙ্গে জবাই না করে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেন। রোগবালাই থাকলে রোগমুক্ত ও স্বাস্থ্যবান করার পর গরু বিক্রি করেন তিনি। বিয়ে, খতনাসহ বড় বড় অনুষ্ঠানে মাংস সরবরাহ করেন। মাংস বিক্রির এ ব্যবসা বড় পরিসরে করার জন্য তিনি একটি মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ প্ল্যান্ট নির্মাণ করতে চাইছেন।
২০২১ সালে ওসমান গনী কেঁচো সার উৎপাদনের প্রশিক্ষণ নেন। প্রথমে দুটি চেম্বার দিয়ে শুরু করলেও এখন তিনি ৭০টি চেম্বারে সার উৎপাদন করছেনউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নিখোঁজের ২ মাস পরে জঙ্গলে মিলল কিশোরের কঙ্কাল
নিখোঁজ দুই মাসে পরে জঙ্গল থেকে মিলন হোসেন (১৫) নামে এক কিশোরের কংঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সুমন মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের আমিন মডেল টাউন হাউজিংয়ের ভেতরের জঙ্গল থেকে ওই কিশোরের কঙ্কাল উদ্ধার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
নিহত মিলন হোসেন নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা থানার পারুলিয়া নোয়াপাড়া গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের ছেলে। সে সাভারের আশুলিয়ার পাড়াগাঁও এলাকায় ইউনুস আলীর মালিকানাধীন বাড়িতে ভাড়া থেকে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো।
পুলিশ জানায়, সোমবার বিকেলে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের মডেল টাউনের পাশে নিহত মিলন হোসেনের শরীরের গেঞ্জি ও প্যান্ট পড়ে থাকতে দেখেন নিহতের মা জোসনা বেগম। একটু সমানে গিয়ে তিনি একটি কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখেন। পরে সাভার মডেল থানা পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা।
সাভার মডেল থানার বিরুলিয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল ওহাব বলেন, “মিলনের মা কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়দের জানায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কঙ্কাল উদ্ধার করে। মূলত নিখোঁজ মিলনের গেঞ্জি প্যান্ট দেখে তার মা জোসনা বেগম তার ছেলের মরদেহ বলে দাবি করেন। আমরা কঙ্কাল উদ্ধার করে ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠিয়েছি।”
তিনি জানান, এ ঘটনায় নিহতের মা জোসনা বেগম আশুলিয়া থানায় একটি নিখোঁজের ঘটনায় মামলা করেছিলেন।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, “মিলন নিখোঁজের ঘটনায় তার মা আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিরেন। মিলন হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আশুলিয়া থেকে সুমন মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনেরগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
প্রসঙ্গত, গত ২৯ সেপ্টেম্বর (সোমবার) সাভারের আশুলিয়ার পাড়াগাঁও এলাকার শামীমের রিকশার গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয় মিলন হোসেন। তার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল সে। পরের দিন মিলনের মা জোসনা বেগম আশুলিয়া থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। এরপরে গত ১৮ নভেম্বর (মঙ্গলবার) জিডিটি মামলা হিসেবে আশুলিয়া থানায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ঢাকা/সাব্বির/এস