ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা শেষে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছিলেন তিনি। করোনাভাইরাস মহামারির সময় চাকরি ছেড়ে চলে যান নিজ বাড়িতে, শুরু করেন খামারি জীবন। স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থার সাহায্য নিয়ে খামারে কেঁচো সার, মাংস ও দুধ উৎপাদনের কাজ শুরু করেন। এখন বছরে খরচ বাদে তাঁর আয় থাকে প্রায় ২০ লাখ টাকা।

এই উদ্যোক্তা হলেন ভোলার সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ছোট আলগী গ্রামের মো.

ওসমান গনী। তিনি গড়ে তুলেছেন ‘ঐকতান অ্যাগ্রো’ নামের একটি খামার।

সম্প্রতি ছোট আলগী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ওসমান গনীর খামারের কাছেই উন্নত মানের ঘাসের আবাদ। তিনি প্রায় ৩ একর ২০ শতাংশ জমিতে গবাদি পশুর জন্য ঘাস চাষ করেছেন। এ খেতে কেঁচো সার ছাড়া কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না।

প্রসঙ্গত, কেঁচো সার একটি জৈব সার, যা জমির উর্বরতা বাড়াতে ব্যবহার করা হয়। এক মাসের বাসি গোবর খেয়ে কেঁচো মলত্যাগ করে এবং এর সঙ্গে কেঁচোর দেহ থেকে রাসায়নিক পদার্থ বের হয়ে এ সার তৈরি হয়। এটাকে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার বলা হয়।

ওসমানের খামারে ঢুকতেই বাঁ পাশে চোখে পড়ে কেঁচো সারের খামার, যেখানে পাকাভাবে ১০টি চেম্বার করা আছে। এ খামারের পশ্চিম পাশে গরুর খামার। এর এক পাশে উন্নত জাতের ৪টি দুধের গরু, আরেক পাশে মাংস উৎপাদনের জন্য প্রায় ১৫টি গরু আছে। খামারের পাশেই ছোট করে কার্যালয়। তার ওপরে কবুতরের খামার। পাশে ছাগল ও কেঁচো সারের খামার। এখানে আরও ৫০টি চেম্বার আছে, যেগুলোর কিছু পাকা, কিছু রিংস্ল্যাবের। এটির সামনে ফাঁকা জমিতে সবজি, বেগুন ও লেবুর আবাদ। খামারের চারপাশে রয়েছে কাঁঠাল, খেজুর ও নারকেলগাছ।

ওসমান গনী ২০১৯ সালে পারিবারিক ১ একর ৩০ শতাংশ জমিতে ১০টি ছাগল দিয়ে একটি খামার দেন। করোনার সময় নানা অনিশ্চয়তায় তিনি চাকরি ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসেন। সে বছরই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে ১২টি গরু নিয়ে মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়ায় হাত দেন, সফলতাও পান। পরের বছর বিদেশি জাতের চারটি দুধের গরু কেনেন। শুরু হয় পুরোদমে তাঁর খামারি জীবন।

ওসমান গনী বলেন, দুধের গরু না বাড়িয়ে তিনি দেশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজাকরণ, মাংস প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি ও কেঁচো সার উৎপাদনের কাজে হাত দেন।

মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ প্ল্যান্ট নির্মাণের আশা ব্যক্ত করে ওসমান গনী বলেন, ভোলা শহরের টাউন স্কুল মাঠের সামনে তাঁর মালিকানাধীন মাংস বিক্রির একটি দোকান আছে। মানসম্মত মাংসের জন্য এর সুনাম আছে। তিনি গরু কিনে সঙ্গে সঙ্গে জবাই না করে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেন। রোগবালাই থাকলে রোগমুক্ত ও স্বাস্থ্যবান করার পর গরু বিক্রি করেন তিনি। বিয়ে, খতনাসহ বড় বড় অনুষ্ঠানে মাংস সরবরাহ করেন। মাংস বিক্রির এ ব্যবসা বড় পরিসরে করার জন্য তিনি একটি মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ প্ল্যান্ট নির্মাণ করতে চাইছেন।

২০২১ সালে ওসমান গনী কেঁচো সার উৎপাদনের প্রশিক্ষণ নেন। প্রথমে দুটি চেম্বার দিয়ে শুরু করলেও এখন তিনি ৭০টি চেম্বারে সার উৎপাদন করছেন

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রক র য় র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় পুকুরের পানিতে ডুবে তাছমিয়া আক্তার (৩) ও তারা নূর (৩) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৪ মে) দুপুরে উপজেলার কুন্ডা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দুই শিশু খালাত বোন। এতে এলাকায় শোক নেমে এসেছে।

মৃত তাছমিয়া আক্তার কুন্ডা গ্রামের মাফিকুল মিয়ার মেয়ে এবং তারা নূর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ধানতুলিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে। তারা নূর খালার বাড়ি কুন্ডা গ্রামে বেড়াতে এসেছিল।

পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা জানান, সকাল ১১টার দিকে বাড়ির পাশে পুকুরপাড়ে দুই শিশু খেলছিল। তাছমিয়ার মা পুকুরপাড়ের কাছে গৃহস্থালীর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। কিছুক্ষণ পর শিশুদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। আশপাশে না পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় মাইকিং করে নিখোঁজ হওয়ার খবর জানানো হয়। এর কিছুক্ষণ পর এক ব্যক্তি পুকুরে কিছু-একটা ভাসতে দেখে এগিয়ে গিয়ে দুই শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করেন।

আরো পড়ুন:

ঝিনাইদহে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কৃষকের মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লিচুর বিচি গলায় আটকে শিশুর মৃত্যু

স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাইফুল ইসলাম দুই শিশুর মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘‘বর্ষাকালে এ ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। তাই শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের আরো বেশি নজরদারি রাখা উচিত।’’

ঢাকা/পলাশ/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ