জাতীয় স্মৃতিসৌধে ‘যুবশক্তি’র শ্রদ্ধা নিবেদন
Published: 24th, May 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির অঙ্গসংগঠন ‘যুবশক্তি’ সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তাদের প্রথম কর্মসূচি পালন করেছে।
শনিবার (২৪ মে) সকাল ৯টায় স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি।
এসময় জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম বলেন, “যুবশক্তি কখনোই অন্য রাজনৈতিক দলের যুব সংগঠনের মতো হবে না। এটি ক্ষমতা ধরে রাখার হাতিয়ার হবে না। বরং দেশের মূল চালিকাশক্তি যুবসমাজকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যেই আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে। যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে যুবশক্তি। আমরা বিশ্বাস করি, যুবকদের জন্য আমাদের এই উদ্যোগ একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা দেখেছি যে মূলধারার রাজনৈতিক দলের যুব সংগঠনগুলো সমাজে একটি ভয়ের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করেছে। কিন্তু আমরা ভিন্ন পথে হাঁটছি। জাতীয় যুবশক্তি যেকোনো ধরনের অন্যায়, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে।”
বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা প্রসঙ্গে তারিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা একটি সংস্কারের পথে রয়েছি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যে দুই হাজার মানুষ প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে, তা রাষ্ট্র পুনর্গঠনের দাবিতে। আমরা মনে করি, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রাষ্ট্র হিসেবে পরিপূর্ণ রূপ পাওয়ার সময় এসেছে। সেই লক্ষ্যে ‘জুলাই সনদ’ ও ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রণয়ন করতে হবে এবং তা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কিন্তু শুধু নিষিদ্ধ করলেই হবে না। সরকার যে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ বাস্তবায়নের কথা বলেছে, তা এখনো কার্যকর হয়নি। আমরা দেখতে পাচ্ছি, নানা ইস্যু তুলে এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের পথ রুদ্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। যুবশক্তি সেই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রাস্তায় থাকবে। ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।”
তারিকুল ইসলাম ঘোষণা দেন, “শিগগিরই আমরা রাজপথে ডাক দেবো। দেশের সব যুব সংগঠন ও সচেতন যুবসমাজকে একত্রিত করে সারাদেশব্যাপী ‘যুব মার্চ’ পালন করা হবে। ঈদের আগেই আমরা আমাদের বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করবো এবং যুবশক্তিকে পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা পর্যন্ত পৌঁছে দেবো।”
মুখ্য সংগঠক ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সোহেল বলেন, “দেশের বিশাল যুবশক্তিকে রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। জাতীয় যুবশক্তি একটি ভিন্ন মাত্রার রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশের চেষ্টা করছে।”
এসময় জাতীয় যুবশক্তির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী বলেন, “রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাবো।”
শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও এনসিপির স্থানীয় নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সাব্বির/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় য বশক ত র জন ত ক আম দ র স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রকাশ্যে গুলি, ঢাকাইয়া আকবরসহ আহত ২
চট্টগ্রামে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে শত শত মানুষের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে গুলিতে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শুক্রবার রাত আটটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের একজনের নাম আলী আকবর। তিনি অপরাধ জগতে 'ঢাকাইয়া আকবর' হিসেবে পরিচিত। অন্যজনের নাম জানা যায়নি।
পুলিশের ধারণা, প্রতিপক্ষের লোকজন 'ঢাকাইয়া আকবরকে' লক্ষ্য করে গুলি করেছে। এই ঘটনায় সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে যাওয়া লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গুলিবিদ্ধ ঢাকাই আকবরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আকবর নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী পূর্ব মসজিদ জব্বার সওদাগর বাড়ির মোহাম্মদ মঞ্জুরের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, কারাগারে বন্দি সন্ত্রাসী 'ছোট সাজ্জাদ' ও বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খানের সঙ্গে ঢাকাইয়া আকবরের বিরোধ রয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকাইয়া আকবর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে যান। তার সঙ্গে এক নারীসহ পাঁচজন ছিলেন। তারা সমুদ্র সৈকতের পুলিশ বক্সের কাছাকাছি ২৮ নম্বর ও ২৯ নম্বর দোকানের মাঝামাঝি বসেন। ২৮ নম্বর দোকানে তারা খাবার অর্ডার দিয়েছিলেন। খাবারের জন্য তারা অপেক্ষা করছিলেন। এসময় অতর্কিত এসে তাকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এসময় ঢাকাইয়া আকবরসহ দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পতেঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদুল আলম সমকালকে বলেন,‘সমুদ্র সৈকতে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। ঘটনাস্থল থেকে ঢাকাইয়া আকবরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কারা, কী কারণে গুলি করেছে তা জানা যায়নি। তার সঙ্গে থাকা লোকজনকেও পাইনি। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘আহত দুইজনকে হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ জানায়, ঢাকাইয়া আকবর বিদেশে পালিয়ে থাকা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খানের অনুসারী ছিলেন। তার নামে নগরের বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি করতেন তিনি। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গুলি কিংবা পেট্রোলবোমা ছুড়ে মারতেন। কয়েকবছর আগে সাজ্জাদের সঙ্গে তার দূরুত্ব তৈরি হয়। ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সাজ্জাদের ভাই ওসমান আলীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়া তার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেন। সম্প্রতি সাজ্জাদ আলীর অনুসারী ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে বিরোধে জড়ান ঢাকাইয়া আকবর। ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর লক্ষীপুর থেকে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর জামিনে বের হন তিনি।