অন্তর্বর্তী সরকার ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সফল হবে: জাহিদ হোসেন
Published: 24th, May 2025 GMT
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সফল হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে অগ্নিসেনা সোশ্যাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত বর্তমান রাজনীতি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, মানুষ তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) পেছনে আছে। কিন্তু, ওনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) যারা বিভিন্নভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে, এখনো সময় আছে লাগাম টেনে ধরুন। রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা করবেন না।
উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্য করে ডা.
উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, অতীতকে আপনি ভুলে যাবেন না। প্রথমে বয়ান দেওয়ার চেষ্টা করলেন যে, ৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্ট- এটি নাকি দ্বিতীয় জন্ম; এসব কথা বলার চেষ্টা করলেন। কিন্তু ৪৭ যদি না হতো, ৭১ পেতেন না। ৭১ না হলে ২৪ হতো কিনা বিরাট বড় প্রশ্ন। কাজেই মনে রাখতে হবে, ইতিহাসের ধারাবাহিকতাকে অস্বীকার করার চেষ্টা করবেন না। যার যতটুকু অবদান, সেটাকে স্বীকার করার মধ্যেই সত্যিকার অর্থে বীরত্ব আছে। আপনি যে দেশের ভালো চান, সেটি প্রমাণ করুন। আর যদি এককভাবে কিছু করেন তাহলে পতিত স্বৈরাচার সরকারের মতো অবস্থা আপনাদেরও হতে পারে।
এনসিপিকে উদ্দেশ্য করে জাহিদ হোসেন বলেন, আজকে কেন আন্দোলন হবে এই উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে। কারণ আপনারা আইন আদালতকে বিশ্বাস করেন না। আইন আদালত যখন আপনাদের পক্ষে থাকে তখন আপনারা খুশি। আর যখন বিপক্ষে যায়, তখন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এটা কী! এগুলো তো শেখ হাসিনার মানসিকতা। সবসময় আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্র-জনতা মাঠে থাকে। পরে দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেয় কাদেরকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেবে। কিন্তু, এখানে এটা উল্টো হয়েছে। আপনারা নিজেদের ট্যাগ ধরে ফেলেছেন। আপনারা সব কৃতিত্ব নিজেদের দাবি করেন। অন্য সবাইকে আপনারা অপমানিত করলেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব। জুলাই-আগস্ট মাসে তারা সেটি প্রমাণ করেছে। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে গেলে আপনারা নিজেরাই বিতর্কিত হয়ে যাবেন। আপনাদের দাবি থাকতেই পারে। কিন্তু রাত ১২টার সময় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে যমুনা ঘেরাও করেন। দাবি করারও তো একটা সিস্টেম আছে। আপনারা মনে করেন, এই সরকার আপনাদের নিজের। অবশ্যই এর জন্য সরকারের কতিপয় ব্যক্তিও দায়ী। কারণ ওনারা কেউ উপদেষ্টা হয়েছেন এবং ক্ষমতা দেখাচ্ছেন। পতিত স্বৈরাচারও ক্ষমতা দেখিয়েছিল, কিন্তু টেকেনি।
অগ্নিসেনা সোশ্যাল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান তালুকদার জহিরুল হক তুহিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স থ য় কম ট র সদস য উপদ ষ ট আপন দ র আপন র সরক র ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করলে দেশ বড় ঝুঁকিতে পড়বে
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশে সেনাবাহিনীর মর্যাদাপূর্ণ অবদান রয়েছে। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করলে স্বাধীন দেশ বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়বে।
শনিবার রাজধানীর মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার অধিবেশনে এ আহ্বান জানান তিনি।
জামায়াত আমির বলেন, কোনোভাবে কারও কোনো কার্যক্রম বা পদক্ষেপের মাধ্যমে আমাদের এই গর্বের প্রতিষ্ঠান (সেনাবাহিনী) বিতর্কিত হোক, তা আমরা চাই না। সেনাবাহিনীকে নিয়ে যেকোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
বাংলাদেশ একটি বিশেষ অবস্থায় অবস্থান করছে বলে মন্তব্য করেন শফিকুর রহমান। এ পরিস্থিতিতে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন। সংঘাত এবং কাদা–ছোড়াছুড়ির মধ্য দিয়ে জাতিকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া কোনোভাবেই সমুচিত হবে না বলে মনে করেন শফিকুর রহমান।
ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে এই পরিস্থিতির অবসান হওয়া উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, সমস্যা যত বড়ই হোক, আলোচনার মধ্য দিয়ে সন্তোষজনক সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বদলীয় বৈঠকের জন্য আহ্বান জানিয়েছি।
জামায়াত আমির আরও বলেন, সংস্কারের একটি রূপরেখা ও নির্বাচনের একটি রোডম্যাপের কথা আমরা শুরু থেকে বলে আসছি। কিন্তু তা এখনো জনগণের সামনে আসেনি। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাব, দ্রুত জনগণের সামনে এ দুটি বিষয়ে রোডম্যাপ তুলে ধরার জন্য। তাহলে সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরবে।
মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দরকে স্পর্শকাতর বিষয় বলে উল্লেখ করেন জামায়াত আমির। মানবিক করিডরের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে বলেন তিনি। অথবা বিষয়টি পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া উত্তম হবে বলে জানান।
চট্টগ্রাম বন্দরের বিষয়ে তিনি বলেন, এই বন্দরের ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের অনেক কিছু। প্রধান বৈদেশিক বাণিজ্যের ৭০ ভাগ এ বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং বন্দর ব্যবস্থাপনার কোনো বিষয়ে হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সমীচীন হবে না। বিষয়গুলো ভেবে চিন্তে অংশীজনের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে, এ বিষয়ে কী করা যায়, সেই বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসা উচিত।
জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে জামায়াত আমির বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে টাইমলাইন দিয়েছেন, আমরা শুরু থেকে মেনে নিয়েছি। আমরা জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকে সহায়তা করে আসার চেষ্টা করছি। অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানান জামায়াত আমির।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সিনিয়র নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান, নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান প্রমুখ।