সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ
Published: 24th, May 2025 GMT
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদনের প্রতিবাদে সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ। ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে এ অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ শনিবার এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
অভিযোগ উঠেছে, সাড়ে চার দশক আগের বিশেষ বিধানের কিছু ‘নিবর্তনমূলক ধারা’ সংযোজন করে অধ্যাদেশের খসড়াটি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সহজেই শাস্তি, এমনকি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে বলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। অধ্যাদেশের খসড়াটিকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আখ্যায়িত করে তা পুনর্বিবেচনারও দাবি করছেন কর্মচারীরা।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ আজ সচিবালয়ের ভেতরে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। এতে অনেক কর্মচারী অংশ নেন।
পরিষদের সভাপতি মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত র খসড় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টাকে ৩ কোম্পানির চিঠি, ৮০% মালিকানা বিদেশি বিনিয়োগে আস্থা কমাবে
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং ব্যবস্থার সংস্কার নীতিমালায় (খসড়া) মোবাইল অপারেটদের বিদেশি মালিকানা সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ রাখার কথা বলা হয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর চিঠি দিয়েছে দেশের বেসরকারি তিন মোবাইল অপারেটরের মূল প্রতিষ্ঠান টেলিনর, আজিয়াটা ও ভিওন। তারা বলছে, এ ধরনের নীতি হলে তা বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আস্থা কমাবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন সংস্থা বিটিআরসি। এই বিভাগ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের অধীন। প্রধান উপদেষ্টা বরাবর ৩ জুলাই চিঠিটি লিখেছেন গ্রামীণফোনের মূল প্রতিষ্ঠান টেলিনর এশিয়ার প্রধান ইয়োন ওমুন্ড রেভহাউগ, রবির মূল প্রতিষ্ঠান আজিয়াটার গ্রুপ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বিবেক সুদ ও বাংলালিংকের মূল প্রতিষ্ঠান ভিওনের গ্রুপ সিইও কান তেরজিওগ্লো।
গত বছরের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর টেলিযোগাযোগ খাত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে ২০১০ সালের আন্তর্জাতিক দূরপাল্লার টেলিযোগাযোগ সেবা (আইএলডিটিএস) নীতিমালা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং ব্যবস্থার সংস্কার নীতিমালা–২০২৫–এর প্রথম খসড়া গত এপ্রিলে প্রকাশ করা হয়। গত ৩০ জুন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এ খসড়ার একটি সংশোধিত সংস্করণ প্রস্তুত করে।
সংশোধিত খসড়ায় বলা হয়েছে, মোবাইল অপারেটরদের বিদেশি মালিকানা ৮০ শতাংশ পর্যন্ত রাখা যাবে। আর দেশি মালিকানা ২০ শতাংশ রাখতে হবে। বিষয়টি নিয়েই নিজেদের উদ্বেগের কথা চিঠিতে জানিয়েছে দেশের বেসরকারি তিন মোবাইল অপারেটরের মূল প্রতিষ্ঠানগুলো।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারের সংস্কার উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানায়। বিটিআরসির উদ্যোগগুলোকে তারা ইতিবাচকভাবে দেখছে। তবে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং ব্যবস্থার সংস্কার নীতিমালার খসড়ায় কিছু নতুন প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়িত হলে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে বিদ্যমান ও ভবিষ্যতের বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি হবে।
আরও পড়ুনসংস্কারের খসড়ায় মোবাইল অপারেটরদের বিশেষ কোনো সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না: অ্যামটব০৪ জুন ২০২৫মোবাইল অপারেটরদের জন্য বিদেশি মালিকানার ৮০ শতাংশ সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ এবং তা বর্তমান লাইসেন্সধারীদের ওপর প্রয়োগ করার প্রস্তাব গভীর উদ্বেগের কারণ বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, একই সঙ্গে অন্যান্য ডিজিটাল অবকাঠামোভিত্তিক অপারেটরদের জন্য বিদ্যমান ৫৫ শতাংশ মালিকানার সীমাও পরিবর্তনের প্রস্তাব খসড়ায় রয়েছে। এটাও উদ্বেগের কারণ।
টেলিনর, আজিয়াটা ও ভিওন চিঠিতে বলেছে, বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাত এত দিন উন্মুক্ত ও সহায়ক বিদেশি মালিকানা নীতির সুফল ভোগ করেছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা বজায় ছিল। তবে প্রস্তাবিত নীতিমালা বিদেশি বিনিয়োগে আস্থা কমিয়ে দেবে, যা অন্তর্বর্তী সরকারের বৈশ্বিক বিনিয়োগ আনার প্রচেষ্টার পরিপন্থী। যেকোনো স্তরে বিদেশি মালিকানায় সীমা আরোপ করা খাতের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকর হবে। প্রস্তাবিত নতুন লাইসেন্স কাঠামোতে মোবাইল অপারেটরদের আওতা আগের চেয়ে সীমিত করা হয়েছে। ফাইবার সংযোগ ও আন্তর্জাতিক এসএমএস পাঠানোর অধিকার একতরফাভাবে তৃতীয় পক্ষকে দেওয়া হয়েছে। এটা হস্তক্ষেপমূলক ও নিয়ন্ত্রণমূলক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। এ নির্দেশনা মোবাইল অপারেটরদের জন্য অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় বাড়াতে পারে। পাশাপাশি পুরো ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
আরও পড়ুনআইএলডিটিএস পলিসি বহাল রাখার দাবি আইসিএক্স অপারেটরদের২৯ মে ২০২৫খসড়া নীতিমালা নিয়ে খাতসংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে টেলিনর, আজিয়াটা ও ভিওন। চিঠিতে তারা বলেছে, এ নীতিমালার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব থাকবে। যদি ভুলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে তা শুধু বিদেশি বিনিয়োগের দিক থেকেই নয়; বরং দেশের সামগ্রিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্যও চ্যালেঞ্জিং হবে।
আরও পড়ুনকথা বলা ও ইন্টারনেট সেবায় মধ্যস্বত্বভোগী কমবে, গ্রাহকের লাভ কী২৩ এপ্রিল ২০২৫