গাজার বাসিন্দাদের জন্য ত্রাণের ময়দা নিয়ে যাওয়া ট্রাকের কাছে ভয়াবহ হামলা হয়েছে। শনিবার দক্ষিণ গাজার আল মাওয়াসিতে ইসরায়েলের চালানো এ হামলায় পাঁচজন নিহত ও অর্ধশত আহত হন। সব মিলিয়ে এক দিনে উপত্যকায় আরও ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আলজাজিরা জানায়, ইসরায়েল অবরোধ শিথিল করে একাংশে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিলেও উত্তর গাজায় তা পৌঁছাচ্ছে না। সেখানকার মানুষ এখনও অভুক্ত দিন পার করছেন।

অবরুদ্ধ উপত্যকায় ত্রাণের গাড়ি প্রবেশ শুরু হলেও বন্ধ হচ্ছে না হামলা। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে, গত দু’দিনে শতাধিক লক্ষ্যে তারা হামলা চালিয়েছে। এতে ৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শনিবার ভোরে গাজা সিটির পূর্বে তুফা এলাকায় ইসরায়েলের বোমা হামলায় চারজন নিহত হন। বিমান ও ড্রোন হামলার পাশাপাশি সামরিক অভিযানও চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গতকাল তারা মধ্য গাজার দায়ের আল বালাহতে সামরিক অভিযান শুরু করে। এ  পরিস্থিতিতে গাজায় মৃতের সংখ্যা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর এ পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৯০০ পার হয়েছে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৫৯৩ জন। হতাহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আরও অন্তত ১০ হাজারের মতো ফিলিস্তিনি ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে নিখোঁজ আছেন। 

৯২টি ত্রাণবাহী ট্রাকের প্রবেশ

গাজার চিকিৎসা সহায়তাবিষয়ক বিভাগের প্রধান শনিবার বলেছেন, উপত্যকায় গত তিন দিনে ৯২টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে। স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও খাবারে তীব্র সমস্যা রয়েছে। দক্ষিণে ত্রাণ পৌঁছলেও উত্তর গাজায় কোনো ট্রাক প্রবেশ করেনি। কার্যত সার্বিক পরিস্থিতির খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি বলে গাজা থেকে সংবাদকর্মীরা জানাচ্ছেন। আহমেদ আল নাজ্জার নামে গাজার এক বাসিন্দা সাংবাদিকদের বলেন, দক্ষিণ গাজায় সীমিত সংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতির খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। অনেক পরিবার এখনও অভুক্তই থেকে গেছে। তাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছায়নি। 

মানবঢাল বানাচ্ছে ইসরায়েল

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে গাজার সাধারণ বাসিন্দাদের মানবঢাল বানানোর অভিযোগ উঠেছে। মাসুদ আবু সাইদ নামের এক ফিলিস্তিনি জানান, ২০২৪ সালের মার্চে খান ইউনিসে তাঁকে দুই সপ্তাহ ধরে মানবঢাল করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এটা খুব ভয়াবহ বিষয় ছিল। আমার শিশু-সন্তান ছিল; আমি তাদের কাছে যেতে চাচ্ছিলাম।’ তিনি জানান, তাঁকে জোর করে হামাসের টানেল খুঁজে বের করার কাজ দেওয়া হয়েছিল। 

আরও খাদ্য সরবরাহের আহ্বান

গাজার পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ উল্লেখ করে ত্রাণ সরবরাহ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। শুক্রবার জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক অফিস জানায়, গাজায় প্রয়োজন ব্যাপক। সে তুলনায় অল্প পরিমাণে ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে। এর আগে বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গাজার দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে সতর্ক করে। 


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র পর স থ ত প রব শ

এছাড়াও পড়ুন:

পিস্তল ঠেকিয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন সাবেক এমপি শিমুলের বেয়াই

পাওনাদারকে টাকা না দিতে নাটোরের সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের এক আত্মীয় ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মাহিদুর রহমান মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকালে রাজশাহী নগরের বর্ণালী মোড় এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন। 

মাহিদুরের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদে। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স নয়ন এন্টারপ্রাইজ। সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি করে ঠিকাদারদের কাছে সরবরাহ করতেন মাহিদুর। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘মীর হাবিবুল আলম বখতিয়ার নামে এক ঠিকাদার পাথর নিয়ে তাকে প্রায় ৪ কোটি টাকা দিচ্ছেন না। বখতিয়ার সম্পর্কে সাবেক এমপি শিমুলের বেয়াই।’’

সংবাদ সম্মেলনে মাহিদুর রহমান জানান, বখতিয়ারকে তিনি ১৯ কোটি ৩৪ লাখ ১২ হাজার ৩৭৯ টাকার পাথর সরবরাহ করেন। লেনদেনের একপর্যায়ে তিনি ৭ কোটি ৩৫ লাখ ৮৪ হাজার ৭৭৪ টাকা বকেয়া রেখে দেন এবং নানা অজুহাতে ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে টাকা পরিশোধে গড়িমসি শুরু করেন। বর্তমানে তার কাছে বকেয়া পাওনা ৩ কোটি ৯৫ লাখ ১২ হাজার ৩৭৯ টাকা।’’

মাহিদুর রহমানের দাবি, আওয়ামী সরকারের আমলে বখতিয়ার তাকে টাকা দেওয়ার নামে নাটোরে তার কার্যালয়ে ডেকে নেন। এরপর তাকে পিস্তলের মুখে জিম্মি করা হয়। তারপর তিন-চারজন মিলে তাকে একটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়। মাহিদুর সাধারণত যে স্বাক্ষর দেন, তা না দিয়ে শুধু নিজের নাম লিখে সেদিন প্রাণ নিয়ে ফিরে আসেন। পরে ওই স্ট্যাম্পে লেখা হয়, মাহিদুর তার সব পাওনা বুঝে পেয়েছেন। 

মাহিদুর জানান, ওই ঘটনার পরও তিনি টাকার জন্য মোবাইলে বখতিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি টাকা দেননি। মামলা করলে টাকা আদায়ে বিলম্ব হবে, তাই মামলা না করে তিনি আপসে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেন। কিন্তু তার সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। 

বাধ্য হয়ে সম্প্রতি তিনি সেনাবাহিনী, রাজপাড়া থানা ও সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু প্রতিকার পাননি।  এতে তিনি বিপদে আছেন। 

বখতিয়ারকে ধরিয়ে দিতে পারলে মাহিদুর এক লাখ টাকা পুরষ্কার দেবেন বলে জানান। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাহিদুরের স্ত্রী ময়েদা বেগম ও ভাগনে জিল্লুর রহমান। 

 

কেয়া//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টেক্সাসে বন্যা মৃত্যু বেড়ে একশ ছাড়িয়েছে, এখনও নিখোঁজ অনেক
  • নবীগঞ্জে সংঘর্ষ: সেনাবাহিনীর হাতে আটক ৭ জন
  • অস্ত্র ঠেকিয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন এমপি শিমুলের বেয়াই
  • ‘আমরা এখনও সপদে বহাল আছি, পার্টির বিরুদ্ধে কী করেছি’
  • পিস্তল ঠেকিয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন সাবেক এমপি শিমুলের বেয়াই
  • ৫ বছরেও হলো না ৬৫০ মিটার সেতু
  • নির্বাচনে কোন দল কত ভোট পেতে পারে, জানালেন তরুণরা
  • আগামী নির্বাচনে ৩৮.৭৬% ভোট পেতে পারে বিএনপি
  • শিশু শিক্ষার্থীর লাশ: জিজ্ঞাসাবাদে এখনও কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ
  • আতশবাজি নিয়ে কটাক্ষের শিকার প্রিয়াঙ্কা