কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জুতার সরঞ্জামের একটি মার্কেটে আগুনে পুড়ে গেছে ২৪টি দোকান। আরও ১৫টির মতো দোকানে ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার রাতে উপজেলা পরিষদসংলগ্ন জলপরী পার্ক রোডের লালু-কালু পাদুকা মার্কেটে এ আগুন লাগে। স্থানীয় দুটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, আগুনে তাদের অন্তত ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মার্কেটটির প্রতিটি দোকানে জুতা তৈরির আঠা, রাবার, পেস্টিং ও সলিউশন জাতীয় পণ্য মজুত ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, শুক্রবার রাত পৌনে ১টার দিকে লালু-কালু মার্কেটে আগুনের শিখা দেখতে পান। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন তারা। তবে দোকানগুলোতে রাসায়নিক জাতীয় পণ্য থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ভৈরব বাজার ফায়ার সার্ভিস ও নদী ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সদস্যরা রাত ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এই মার্কেটের দোকানমালিক শাহীন মিয়ার ভাষ্য, রাতে খবর পেয়ে এসে দেখেন আগুন জ্বলছে। নেভানোর পর শাটার খুলে দেখেন তার সব পণ্য পুড়ে গেছে। অন্তত ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে সেখানে মুখ ভার করে বসেছিলেন আরেক দোকান মালিক রাজু মিয়া। তাঁর ভাষ্য, ‘শুক্রবার মার্কেট বন্ধ। বৃহস্পতিবার রাতে দোকানে নগদ আড়াই লাখ টাকা রাখা ছিল। টাকাসহ দোকানের সব মালপত্র পুড়ে গেছে। আমি রাস্তায় বসে গেলাম।’
মুর্শিদ মিয়া নামে আরেক ব্যবসায়ীর ভাষ্য, মার্কেটের পাশেই নদী ফায়ার সার্ভিস। আগুনের সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক তারা আসেনি। ভৈরব বাজার ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তাঁর দোকানে কিছু অবশিষ্ট নেই।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, লালু-কালু পাদুকা মার্কেটটি একতলা। সেখানে ৪০টির মতো দোকান। আগুনে ২৪টি দোকান পুরোপুরি পুড়ে গেছে। বাকিগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ মার্কেটের পেছনে ১০০টির মতো জুতা তৈরির কারখানা। আগুন এক ঘণ্টার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনায় সেগুলোর তেমন ক্ষতি হয়নি।
পাশেই নিজ নামে মার্কেট রয়েছে হানিফ মিয়ার। তিনি বলেন, ‘কয়েকজন ব্যবসায়ী বসে মার্কেটের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করছিলাম। হঠাৎ আগুন দেখে দৌড়ে বের হই। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে।’
হানিফ মিয়ার ভাষ্য, ভৈরবের এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের জায়গা উপজেলা পরিষদসংলগ্ন পাদুকা মার্কেট এলাকা। পাশেই দুটি পুকুর আছে। তবে ময়লা ফেলে এগুলো ভরাট করে রাখা হয়েছে। প্রশাসন যদি পুকুরটি সংস্কার করত, তাহলে কম সময়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যেত। পানির অভাবে এক ঘণ্টা লেগেছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে।
লালু-কালু পাদুকা মার্কেটের অংশীদার কাজী মাসুদ বলেন, যতটুকু জেনেছি, শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। মার্কেটের সামনের সারির প্রায় সব দোকান পুড়ে গেছে। এতে আনুমানিক ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ভৈরব ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস ইনস্পেক্টর রাজন আহমেদ বলেন, রাত আনুমানিক ১২টা ৫০ মিনিটে ওই মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পান। এক ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ছোট-বড় মিলিয়ে ৩৫-৪০টি দোকান পুড়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও আগুনের কারণ তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না।
এ আগুনে ২৪টি দোকান পুরোপুরি পুড়ে গেছে বলে জানান ভৈরব পাদুকা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আগ ন শ ক রব র ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে একদিনে ৯ মরদেহ উদ্ধার
দিনাজপুরে একদিনেই নয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের মধ্যে পাঁচজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার দিনগত রাতে জেলার বীরগঞ্জের চাউলিয়া গ্রামে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি বাহা বেসরা (৫৫) নিহত হন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত সামিয়েল মার্ডিকে (৩৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। স্ত্রী মিনি হায়দার সঙ্গে পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে একই উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের নাগরগঞ্জ কলোনিপাড়া লিচু বাগানে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নারায়ণ চন্দ্র বর্মণ (২২) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল গফুর হত্যা ও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দুপুরে জেলার নবাবগঞ্জে খয়ের গুনি গ্রামে করতোয়া নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়।
একই উপজেলার মালভবানীপুর গ্রামের সোহরাফ হোসেনের মেয়ে সাথী আকতার (২০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়া হাকিমপুর উপজেলার বাওনা আলিহাট গ্রামের মনিরুল ইসলামের স্ত্রী বৃষ্টি (১৯) ও একই উপজেলার ঈশ্বরপুর গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে মুনসুর আলী খোকা (৫০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। বিকেলে তাদের নিজ শয়নকক্ষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক জানান, মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
একই রাতে বিরল উপজেলার ফরক্কাবাদ মল্লাপাড়া গ্রামের মৃত তসলিম উদ্দিনের ছেলে তৌফিকুজ্জামান (৪৭) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। বিরল থানার ওসি আব্দুস ছবুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ দিন দুপুরে গলায় লিচুর বিচি আটকে বোচাগঞ্জ উপজেলার নাফানগন ইউনিয়নের ধনীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোমিনের ছয়মাস বয়সের শিশু সন্তান আরফানের মৃত্যু হয়।
এছাড়াও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আঁখি মনি (২৭) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। প্রবাসী হারুন অর রশিদের নতুন বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার সময় ঘরের দরজা বিদ্যুতায়িত হয়। এ সময় আঁখি মনি দরজা খুলতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম খন্দকার মুহিব্বুল জানান, অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।