যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসনবিরোধী অভিযানকে কেন্দ্র করে সহিংস বিক্ষোভের পর বেশকিছু মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করেছেন। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জন্ম নিলেও গত সোমবার ট্রাম্প আরও ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য ও ৭০০ মেরিন সদস্য মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন।

লস অ্যাঞ্জেলেসের লাতিন জনগোষ্ঠী–অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় ফেডারেল ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা বড় সংখ্যায় অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার শুরু করলে লোকজন এর প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামেন।

শুরুতে এসব বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে হলেও পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা একটি প্রধান মহাসড়ক অবরোধ করেন এবং চালকবিহীন কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে সোমবার সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হতে শুরু করে।

লস অ্যাঞ্জেলেসে কেন বিক্ষোভ হচ্ছে

গত শুক্রবার ফেডারেল ইমিগ্রেশন সংস্থা (আইসিই) লস অ্যাঞ্জলেসের লাতিন জনগোষ্ঠী–অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় অভিযান শুরু করেছে—এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এ বিক্ষোভ শুরু হয়।

ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফেরার পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এরপরই লস অ্যাঞ্জেলেসে ধরপাকড় বেড়ে যায়।

গত সোমবার দায়ের করা এ মামলায় ক্যালিফোর্নিয়া সরকার অভিযোগ করেছে, গভর্নরের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। সংবিধানের দশম সংশোধনী অনুযায়ী, ফেডারেল সরকারকে যেসব ক্ষমতা স্পষ্টভাবে দেওয়া হয়নি, সেসব রাজ্য সরকারগুলোর জন্য সংরক্ষিত থাকে।

বিবিসির সহযোগী মার্কিন গণমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলেসের ওয়েস্টলেক ও প্যারামাউন্ট এলাকায় অভিযান চালানো হয়। প্যারামাউন্ট শহরের ৮২ শতাংশের বেশি বাসিন্দা হিসপ্যানিক।

প্যারামাউন্টের একটি হোম ডিপো শপে আইসিই অভিযান চালিয়েছে বলেও খবর পাওয়া যায়। তবে কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানান, এ তথ্য সঠিক নয়।

আরও পড়ুনলস অ্যাঞ্জেলেসে ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনকে কেন বিপজ্জনক মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা০৯ জুন ২০২৫

পরে আইসিই সিবিএসকে জানায়, গত শুক্রবার অভিবাসীদের একটি কর্মস্থলে অভিযান চালিয়ে ৪৪ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই দিন লস অ্যাঞ্জেলেসের বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও ৭৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

লস অ্যাঞ্জেলেসের কোথায় বিক্ষোভ হচ্ছে এবং সেখানে কী ঘটছে

বিক্ষোভ মূলত লস অ্যাঞ্জেলেসের কেন্দ্রে সীমাবদ্ধ ছিল। কয়েক দিনের সংঘর্ষের পর পুলিশ সেখানে সমাবেশ বেআইনি ঘোষণা করে।

লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভে রাস্তা অবরোধের পর পুলিশ প্রতিবাদকারীদের সরিয়ে দেয়, ৮ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: লস অ য ঞ জ ল স র

এছাড়াও পড়ুন:

সুপার ব্যালন ডি’অর ফিরলে জিততে পারেন কে, মেসি না রোনালদো

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ শুরু হবে শনিবার। এ টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স দিয়ে নিশ্চিত হতে পারে এবারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী। এর মধ্যে গতকাল সুপার ব্যালন ডি’অরের প্রসঙ্গ ফিরিয়ে এনেছে পুরস্কারটি প্রচলন করা ফরাসি সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল’।

সুপার ব্যালন ডি’অর একবারই দেওয়া হয়েছে। একাধিকবার ব্যালন ডি’অরজয়ী ফুটবলারদের মধ্যে ভোটাভুটির মাধ্যমে ১৯৮৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর এ ট্রফি জেতেন আর্জেন্টিনা, স্পেন ও রিয়াল মাদ্রিদ কিংবদন্তি আলফ্রেডো ডি স্টেফানো। বিশেষ এ পুরস্কারের জন্য তখন শুধু ইউরোপিয়ান খেলোয়াড়দের বিবেচনা করা হতো।

আরও পড়ুনঢাকায় মেয়েদের সাফে অংশ নেবে না ভারত৩ ঘণ্টা আগে

ভোটাভুটিতে ডাচ কিংবদন্তি ইয়োহান ক্রুইফ ও ফরাসি কিংবদন্তি মিশেল প্লাতিনিকে পেছনে ফেলে সুপার ব্যালন ডি’অর জেতেন আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া ডি স্টেফানো। স্পেনের নাগরিকত্বও থাকায় মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকায় দুবার ব্যালন ডি’অরজয়ী এই কিংবদন্তি জায়গা পান।

ব্যালন ডি’অরের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডলে গতকাল বাংলাদেশ সময় রাতে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘এমন একটি ব্যালন ডি’অর, যা বাকিগুলোর চেয়ে আলাদা। ১৯৮৯ সালে একজন খেলোয়াড় এই ট্রফি জিতেছিলেন, যা আর কারও নেই; সুপার ব্যালন ডি’অর। কিন্তু তিনি কে ছিলেন? এখন যদি এই পুরস্কার আবারও দেওয়া হয়, তাহলে কে এটা জয়ের যোগ্য?’

ভিডিওতে ডি স্টেফানো, প্লাতিনি, ক্রুইফদের ছবি দেখানোর পাশাপাশি কণ্ঠের ধারাবর্ণনাও আছে, ‘১৯৮৯ সালে ফ্রান্স ফুটবল গত তিন দশকের সেরা ব্যালন ডি’অরজয়ীকে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নেয়। তা একটি নিয়মের ভিত্তিতে: একাধিকবার ব্যালন ডি’অরজয়ী। কারা ভোট দিয়েছিলেন? ফ্রান্স ফুটবলের পাঠক, বিচারকমণ্ডলী এবং পূর্বের (ব্যালন ডি’অর) বিজয়ীরা।’ ভিডিওটির শেষে জানতে চাওয়া হয়, ‘আপনারা কি নতুন সুপার ব্যালন ডি’অর চান? তাহলে এটা কে জিততে পারেন?’

একটি বিষয় জানিয়ে রাখা ভালো, ১৯৮৯ সালে সুপার ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকায় আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা বিবেচিত হননি। কারণ, ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত এ পুরস্কার শুধু ইউরোপিয়ান খেলোয়াড়দেরই দেওয়া হতো। ম্যারাডোনাকে ১৯৯৫ সালে ‘গোল্ডেন ব্যালন ডি’অর’ দেওয়া হয়েছিল, যেটা ছিল ইউরোপের বাইরের খেলোয়াড়দের জন্য।

আরও পড়ুনপোল্যান্ড কোচের পদত্যাগ, ‘যুদ্ধ’ জিতলেন লেভা৪ ঘণ্টা আগে

ফ্রান্স ফুটবল সুপার ব্যালন ডি’অর পুরস্কারটি ফিরিয়ে আনছে কি না, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানা যায়নি। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘এএস’ এর আগে জানিয়েছিল, ২০২৯ সালে সুপার ব্যালন ডি’অর দেওয়া হতে পারে। কিন্তু ব্যালন ডি’অরের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডলে সুপার ব্যালন ডি’অরের প্রসঙ্গ ফিরে আসায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে গুঞ্জন, অনেকে আবার এক ধাপ এগিয়ে এখনই বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করছেন, এখন এ পুরস্কার দেওয়া হলে কে জিততে পারেন।

সুপার ব্যালন ডি’অর পুরস্কার ফিরিয়ে আনা হলে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসি ও পর্তুগালের কিংবদন্তি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তা জয়ের দৌড়ে বাকিদের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন। মেসি ব্যালন ডি’অর জিতেছেন আটবার, রোনালদো জিতেছেন পাঁচবার। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে প্রায় সব পুরস্কারই জেতা হয়ে গেছে মেসির। রোনালদো শুধু বিশ্বকাপই জিততে পারেননি। এ ছাড়া মেসির মতোই ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে জিতেছেন মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার, একাধিকবার জিতেছেন লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ।

১৯৯৫ থেকে এ পর্যন্ত হিসাব করলে মেসি ও রোনালদোর বাইরে শুধু একজন খেলোয়াড়ই একাধিকবার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন। ব্রাজিলের হয়ে দুবার বিশ্বকাপজয়ী রোনালদো নাজারিও। ১৯৯৭ ও ২০০২ সালে বর্ষসেরার এ পুরস্কার জেতেন কিংবদন্তি স্ট্রাইকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ