জানা গেল এশিয়া কাপের সম্ভাব্য তারিখ, খেলবে ভারত-পাকিস্তান
Published: 29th, June 2025 GMT
সেপ্টেম্বরে টি-২০ ফরম্যাটে মাঠে গড়ানোর কথা এশিয়া কাপ ক্রিকেট। কিন্তু টুর্নামেন্ট ঘিরে অনিশ্চয়তা কাটেনি। ভারত ও পাকিস্তান টুর্নামেন্টে অংশ নেবে কিনা। দুই দল গ্রুপ পর্বে মুখোমুখি হবে কিনা এসব নিয়ে নানা আলোচনা ছিল। টুর্নামেন্ট হলে কোথায় হবে তা নিয়েও অনিশ্চয়তা কাটেনি।
ভারতের সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছে, এশিয়া কাপ আয়োজন নিয়ে ইতিবাচক এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ থাকলেও দুই দলের মুখোমুখি হওয়া নিয়ে কোন সংকট নেয়। তবে টুর্নামেন্টটি হতে পারে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
ক্রিকবাজের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, এসিসি সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে নিয়ে এশিয়া কাপ আয়োজন করতে যাচ্ছে। ১০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে পারে আসরটি।
সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, এখনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। তবে এশিয়া কাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে একটি আনুষ্ঠানিক বৈঠক হতে পারে। ওই বৈঠক শেষে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এশিয়া কাপের সূচি চূড়ান্ত করে তা প্রকাশ করা হতে পারে।
এশিয়া কাপের স্বাগতিক ভারত। টুর্নামেন্টটি ভারত হাইব্রিড পদ্ধতিতে আয়োজন করতে পারে। যেখানে পাকিস্তান তাদের ম্যাচগুলো নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে শ্রীলঙ্কা বা সংযুক্ত আরব আমিরাতে খেলতে পারে। আবার ভারত পুরো টুর্নামেন্ট আরব আমিরাতে নিতে পারে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কার্যকর পদক্ষেপ কাম্য
বাজারে চাউলের মূল্য পুনরায় বৃদ্ধি পাইবার বিষয়টি শুধু উদ্বেগজনক নহে, বিস্ময়করও বটে। সরু চাউলই শুধু নয়, মোটা চাউলের মূল্যও বৃদ্ধি পাইয়াছে প্রতি কেজিতে অন্তত পাঁচ টাকা, যাহার ভোক্তা হইল নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। উপরন্তু নূতন করিয়া চাউলের মূল্য এমন সময় বৃদ্ধি পাইয়াছে যখন সার্বিক জীবনযাত্রার ব্যয় নিম্নআয়ের মানুষের তো বটেই, সিংহভাগ মানুষের অন্যতম শিরঃপীড়ার কারণ। বস্তুত রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ বিবিধ কারণে বহু কলকারখানা এবং ব্যবসায় ক্ষেত্রেও স্থবিরতা চলিতেছে, যাহার বৃহৎ ধাক্কা পড়িয়াছে উক্ত শ্রেণি-গোষ্ঠীর উপর। ইহাও উল্লেখ্য, গত কয়েক বৎসরে বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত জরিপে দেখা গিয়াছে, সমাজের নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারগুলি প্রায় সম্পূর্ণ ভাতের উপর নির্ভরশীল। তাহাদের আয়ের বৃহৎ অংশ খাদ্য সংগ্রহেই ব্যয় হয়। ফলে বিশেষত মোটা চাউলের বাজারে এহেন ঊর্ধ্বগতির নেতিবাচক প্রভাব সমাজের বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবনযাত্রার সংকটকে বৃদ্ধি করিবে। প্রসঙ্গত রবিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মে মাসে সরু চাউলের মূল্য ছিল ৭২ হইতে ৮০ টাকা কেজি, যাহা জুনে দাঁড়াইয়াছে ৭২ হইতে ৮৫ টাকা। মোটা চাউলের মূল্য৫৫ হইতে বৃদ্ধি পাইয়া হইয়াছে ৬০ টাকা, যাহা গত চার মাস যাবৎ অপরিবর্তিত ছিল।
মাত্র কিছুদিন পূর্বে বোরো ধান কৃষকের ঘরে আসিয়াছে। দেশের মোট চাউলের চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশের জোগানদাতা এই মৌসুমে এইবার বাম্পার ফলন ফলিয়াছে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে চাউল আমদানিও যথেষ্ট। চাউলের মূল্যে ঊর্ধ্বগতি তাই আমাদের নিকট বিস্ময়কর। এইদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা জানাইয়াছেন, কোরবানির ঈদের পর হইতে এই অতিরিক্ত মূল্যে চাউল বিক্রয় হইতেছে।
শুরুতে বাজারে সরু চাউলের দাম বৃদ্ধি পাইয়াছে, যাহার প্রভাব পড়িয়াছে মোটা এবং অন্যান্য চাউলে। তাহাদের দাবি, এক সপ্তাহ যাবৎ আড়তগুলি চাহিদানুযায়ী চাউল সরবরাহ করিতেছে না; চাউলকল বন্ধ থাকিবার অজুহাত দেখাইতেছে। অবশ্য চাউলকল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি দাবি করিয়াছেন, কোনো কল বন্ধ নাই। বৎসরের এই সময়ে দাম বৃদ্ধিরও কোনো কারণ নাই। তবে আলোচ্য পরিস্থিতিতে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বাজার নজরদারির দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি সংস্থাগুলি যে উল্লেখযোগ্য কিছুই করিতেছে না– তাহা অস্বীকার করিবার উপায় নাই। অবশ্য অভিজ্ঞতা বলে, উহারা ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের উপর ক্ষণে ক্ষণে ব্যাঘ্রের ন্যায় ঝাঁপাইয়া পড়িলেও চাউলকল মালিকগণের বিরুদ্ধে বরাবরই মার্জারসদৃশ আচরণ করিয়া থাকে। দেশে মজুতদারি বন্ধে ২০১২ সালে প্রণীত প্রতিযোগিতা আইনটির প্রয়োগ অদ্যাবধি দৃশ্যমান নাই। অথচ গণঅভ্যুত্থানের পর সকলেই আশা করিয়াছিল, অন্যান্য ক্ষেত্রের ন্যায় চাউলের বাজারেও বিগত আমলে সক্রিয় সিন্ডিকেটের প্রভাব হ্রাস পাইবে। প্রকৃতপক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারও দায়িত্ব গ্রহণের অব্যবহিত পর এমনই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করিয়াছিল।
চাউলের দাম বৃদ্ধি পাইলে শুধু ব্যক্তি বা পরিবারই যে ভোগান্তিতে পড়ে, তাহা নহে। সামাজিক, এমনকি রাজনৈতিক অস্থিরতাতেও উহা ইন্ধন দিতে পারে– এই কথা আমরা এই স্তম্ভেই বহুবার বলিয়াছি। তাই ভরা মৌসুমে চাউলের মূল্য বৃদ্ধির বিষয় দ্রুত খতাইয়া দেখা জরুরি বলিয়া আমরা মনে করি। সরকারি পর্যায়ে চাউল আমদানি লইয়া যে ভাবনা চলিতেছে, তাহার বাস্তবায়নও দ্রুত হইতে হইবে। শুধু উহাই নহে, ইতোমধ্যে অজ্ঞাত কারণে বন্ধ করিয়া দেওয়া টিসিবির বিশেষ কার্ডধারীদের মধ্যে চাউল বিতরণ কর্মসূচি প্রবর্তন করা যাইতে পারে। খোলাবাজারে বিক্রয় কর্মসূচির আওতায় ভর্তুকি মূল্যে চাউল বিক্রয়ের কার্যক্রমও পুনরায় শুরু করা যায়।