অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাওয়ায় সাংবাদিকদের ওপর ক্ষেপলেন জবি শিক্ষিকা
Published: 29th, June 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফেরদৌসী খাতুনের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, হুমকি ও হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (২৯ জুন) দুপুরে বাংলা বিভাগের কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করে অনিয়মের বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে ফেরদৌসী খাতুন ‘খবরের কাগজ’ এর জবি প্রতিনিধি মুজাহিদ বিল্লাহর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি উত্তেজিত হয়ে একাধিক সাংবাদিকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, মামলা করার হুমকি দেন এবং গায়ে হাত তোলারও চেষ্টা করেন।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ‘ডেইলি ক্যাম্পাস’ এর প্রতিনিধি জুনায়েদ মাসুদ এবং ‘রাইজিংবিডি ডটকম’ এর প্রতিনিধি লিমন ইসলামকেও তিরস্কার ও অসৌজন্যমূলক আচরণে লিপ্ত হন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মুজাহিদ বিল্লাহ বলেন, “আমি প্রায় ৬-৭ মাস ধরে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করছি। তথ্য অধিকার আইনে প্রাপ্ত নথিপত্রে দেখা গেছে, তিনি টানা ৬ বছর ক্লাসে অনুপস্থিত। এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাইতেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ধাক্কা দিতে আসেন এবং মামলা করার হুমকি দেন। এরপর অশালীন ভাষা ব্যবহার করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সহযোগী অধ্যাপক ফেরদৌসী খাতুনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার মোবাইল নম্বরটি খোলা পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জবিতে র্যাগিংয়ের নামে ‘অমানবিক’ নির্যাতনের অভিযোগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিং ও অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ২০২৩-২৪ সেশনের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, নির্যাতনের পর ভয় দেখিয়ে ঘটনাটি গোপন রাখতে বাধ্য করা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের পিয়ুস সাহা, প্রকাশ বিশ্বাস, মো. সাজ্জাদ, রিফাত হোসাইন, মো. শিহাব, কাজি ফারজানা জারিন অদ্রি, পুষ্পিতা লোদ, অন্নপূর্ণা দত্ত, তানজিলা মিতু ও মো. ফাহাদ ইসলাম।
আরো পড়ুন:
ইবিতে নবীনবরণ, র্যাগিং বন্ধে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন
গকসুর তফসিল ঘোষণা, নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বর
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৩০ জুলাই জুলফা ভবনের একটি শ্রেণিকক্ষে প্রথম র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। তবে এটি একদিনের নয়, বরং ধারাবাহিকভাবে চলে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা একদিনে ৩-৪ বার ক্লাসে ঢুকে নবীনদের হয়রানি করতেন। কথা না শুনলে ব্যাচ বয়কটের হুমকি দিতেন। কখনো টানা ২০-৪০ মিনিট দাঁড় করিয়ে রাখা হত, কথামতো আচরণ না করলে চড়-থাপ্পড়ও মারার চেষ্টা করতেন।
ভুক্তভোগীরা আরো জানান, তারা নবীনদের ‘তুই-তুকারি’ সম্বোধন করতেন এবং জোরপূর্বক সিনিয়রদের নাম-পরিচয় বলতে বাধ্য করতেন। এসব ঘটনা বাইরে জানালে বা অভিযোগ দিলে বিভাগের সুনাম নষ্ট হবে বলে ভয় দেখানো হত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, র্যাগিং ও মানসিক নির্যাতনের ফলে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ফাতেমা আক্তার নিশা নামে এক নবীন শিক্ষার্থী প্যানিক অ্যাটাকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অসুস্থ সহপাঠীর সঙ্গে দেখা করতেও দেওয়া হয়নি তাদের এবং কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পিয়ুস সাহাকে প্রশ্ন করলে তিনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে কল কেটে দেন। অপর অভিযুক্ত প্রকাশ বিশ্বাসও উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সাংবাদিককে বলেন, “যা পারেন করেন।”
এমনকি শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মনিরা জাহানকে প্রশ্ন করলে সাংবাদিকের ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চান এবং অপর এক সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ তোলেন।
সার্বিক বিষয়ে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “র্যাগিংয়ের বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি। তবে সাংবাদিকদের নিয়ে যে অভিযোগ এসেছে, তা জানতাম না। দ্রুত বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী