Samakal:
2025-08-16@14:58:40 GMT

শাড়িতে স্কার্টে বর্ষা

Published: 1st, July 2025 GMT

শাড়িতে স্কার্টে বর্ষা

ফ্যাশনের অনুষজ্ঞ হিসেবে নকশা বা শিল্পকর্মের গুরুত্ব অনেক। পোশাকে স্থান পাচ্ছে ষড়ঋতুর নানা রূপ। বৃষ্টিদিনের পোশাকের নকশায়ও দেখা যায় বৈচিত্র্য। শিল্পকর্মে যদি ফুটে ওঠে মেঘ, বৃষ্টি আর পাতার গল্প, তাহলে সাজও হয় হৃদয়ছোঁয়া। এ বছরের বর্ষার পোশাকে কোন ধরনের নকশা চলছে তা নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন আশিকা নিগার

‘বর্ষা শুধু আকাশে নামে না/ সে নামে সুতি আর সিল্কের গায়ে/ নকশায়, বুননে, রঙের তালে
/ সে হাসে, কাঁদে, মুগ্ধতায় ভাসায় চুপিসারে।’
বর্ষা মানেই ভেজা ভেজা আবহাওয়া, আকাশজুড়ে ধূসর মেঘ, টুপটাপ বৃষ্টির শব্দে মন ভরে যাওয়া, ভেজা মাটির ঘ্রাণ আর বাতাসে ভেসে বেড়ানো ভেজা ভেজা কদমের মাতাল করা সুবাস।  
বৃষ্টিমুখর দিনে বারান্দায় বসে হাওয়ার তালে দোলে যাওয়া ভেজা পাতার দৃশ্য দেখতে দেখতে মানুষ যেন কেবলই নিজের কাছে ফিরে যায়। কফির কাপে চুমুক দিতে গিয়ে হয়ে যায় স্মৃতিকাতর। তাই কেউ কেউ বলেন, বর্ষা নাকি বিষণ্নতার ঋতু। তবে ফ্যাশন দুনিয়ায় বর্ষা কিন্তু বেশ রঙিন। এই রঙিনতার পেছনে বড় ভূমিকা রাখে পোশাকে বৈচিত্র্যের শিল্পকর্ম। 
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে মানুষের রুচি, ফ্যাশনের সংজ্ঞা। তাই বর্ষার আবহ আর মেজাজকে পোশাকে ফুটিয়ে তোলার জন্য এখন অনেকেই নকশা বা থিমভিত্তিক পোশাক পছন্দ করেন। মেঘ, বৃষ্টি, কদম-শাপলা-বেলি-জবা ফুল, পাতা, জলের ঢেউ, নৌকা, নদী, ছাতা কিংবা ছোট্ট কোনো পাখির নকশা যখন কাপড়ে জায়গা পায়, তখন সাজও হয়ে ওঠে বর্ষার মতো আকর্ষণীয়। স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য মানেই বর্ষার গল্প।
আমাদের চারপাশের প্রকৃতি থেকেই ধারণাগুলোর জন্ম। যেমন–
মেঘ ও বৃষ্টির গল্প 
সাদা মেঘ, নীল আকাশ, বৃষ্টির ফোঁটার শিল্পকর্ম এখন কুর্তি, ওড়না, স্কার্ট, টপ– এমনকি শাড়িতেও দেখা যায়। দেখতে যেমন সুন্দর, পরতেও তেমনি আরামদায়ক।
কদম ফুলের শিল্পকর্ম
বর্ষায় বৃষ্টিতে কদম ফুলের ভেজা গন্ধ সবার মনে রোমান্টিক আবহ এনে দেয়। কদম ফুলও যেন বর্ষার নিজস্ব প্রতীক হয়ে উঠেছে। সেই আবেগকে ধারণ করেই এখন ফ্যাশনে জায়গা করে নিচ্ছে কদম ফুলের শিল্পকর্ম। শাড়ি, কুর্তি, স্কার্ফ বা কামিজে কদম ফুলের নকশা যেন এক অন্যরকম নান্দনিকতা তৈরি করে। কখনও হাতে আঁকা, কখনও ব্লক প্রিন্ট আবার কখনও ডিজিটাল প্রিন্টে ফুটে ওঠে হলুদ-সাদা কদমের কোমল সৌন্দর্য। বিশেষ করে সাদা বা হালকা রঙের পোশাকে কদম ফুলের নকশা নজরকাড়া।
এ শিল্পকর্ম শুধু নান্দনিকই নয়, বরং বর্ষার আবেগ পোশাকে ফুটিয়ে তোলার এক অনন্য উপায়। যারা ঐতিহ্য আর চলতি প্রবণতাকে একসঙ্গে ধারণ করতে চান, তাদের জন্য কদম ফুল ধারণা হতে পারে বর্ষার ফ্যাশনে এক দারুণ সংযোজন।
শুধু পোশাকে নয়, সঙ্গে মিলিয়ে কদম ফুলের নকশায় ব্যাগ, জুতা বা অ্যাকসেসরিজ থাকলে দেখতে হয়ে ওঠে আরও প্রাণবন্ত। এই বর্ষায় আপনিও চাইলে বৃষ্টিভেজা কদম ফুলকে ধারণ করতে পারেন আপনার স্টাইলে, একটু আলাদাভাবে নিজেকে প্রকাশের জন্য।
পাতা বা লতাপাতা 
বৃষ্টিতে ভেজা পাতা কিংবা ছোট লতাগাছের নকশা বর্ষার প্রকৃতিকে চোখের সামনে তুলে ধরে। এগুলো কটন বা লিনেন পোশাকে বেশি মানায়।
পাখি, প্রজাপতি বা ছাতা 
বর্ষার দিনে পাখির ডানামেলা ওড়া বা রঙিন ছাতার ছাপ– সবই যেন বৃষ্টির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজের কথা বলে।
স্থানীয়তার ছাপ
আমাদের দেশীয় পোশাকে বর্ষা নিয়ে শিল্পকর্ম বরাবরই ছিল। জামদানি বা নকশিকাঁথার পুরোনো শিল্পকর্মেও দেখা মেলে বৃষ্টির ছায়া। এখনকার নকশাকাররাও এই ঐতিহ্যকে নতুনভাবে সাজিয়ে আনছেন। বুটিক ঘরানার জামা বা শাড়িতে বৃষ্টির ছোঁয়া পাওয়া যাচ্ছে হাতে আঁকা শিল্পকর্মের মাধ্যমে।
স্টাইল টিপস
হালকা প্রিন্টের কুর্তির সঙ্গে সাদামাটা প্যান্ট, আর একটি ছাতার নকশা দেওয়া ওড়না বর্ষার আদর্শ স্টাইল। ডেনিম স্কার্ট বা পালাজ্জোর সঙ্গে রঙিন ছাপা টপ যেন অনন্য কম্বিনেশন। এ ছাড়া ছাতায়, ব্যাগে বা জুতাতেও মিলিয়ে ছোট নকশার কাজ করলে দেখতে ভালো লাগে। 
হরিতকীর ডিজাইনার ও কো-ফাউন্ডার অনিক কুণ্ডু বলেন, ‘আমরা এই বর্ষায় পদ্ম ফুল ও স্টারি নাইটের একটি নতুন ভার্সন শাড়িতে নিয়ে এসেছি। পাশাপাশি পলো শার্টেও স্টারি নাইট থাকছে নীল রঙের মধ্যে। বর্ষাকালে নীল রংই সবার কাছে আকর্ষণীয় লাগে এবং এই রং যেন বর্ষার সঙ্গে মানানসই। এ ছাড়া নৌকার থিমেও শাড়ি রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্ষার আসল সৌন্দর্য বহন করে কদম ফুল। তাই কদম ফুলের শিল্পকর্ম তো থাকবেই। বর্ষার আমেজকে প্রাণবন্ত রাখতে আমাদের সংগ্রহে থাকা শাড়ি, কুর্তি, ওড়না, টি-শার্ট, পলো শার্ট সবকিছুতেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বর্ষার একেকটি আকর্ষণীয় শিল্পকর্ম।’
পোশাকে বর্ষার ভাবনা নিয়ে ‘লা রিভ’-এর ডিজাইনার মারুফা শিল্পী বলেন, ‘এবার বর্ষায় আমরা ফুলের শিল্পকর্মকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছি ৷ ফুলগুলো বড় আকারের নকশায় ফুটে উঠবে। এ ছাড়া পাতা ও পদ্ম দিয়ে ডিজাইনও থাকছে।’
পোশাকের রঙের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘নীল, জলপাই এবং সবুজ রয়েছে। এ ছাড়া বর্ষার ফুলের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে হলুদ আর মেরুনকেও প্রাধান্য দিয়েছি আমরা।’
মারুফা বলেন, ‘ফেব্রিকের ক্ষেত্রে বর্ষাকালে ভিসকোস এবং জর্জেটকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে কিছু সিনথেটিক ফেব্রিক, যেগুলো বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও দ্রুত শুকিয়ে যাবে। শাড়ির মধ্যে কটনই বেশি থাকছে।’
কোথায় পাবেন
রাজধানীসহ দেশের যে কোনো প্রান্তের শপিংমল ও ফ্যাশন হাউসে মিলবে বর্ষার শিল্পকর্মের পোশাক। স্থান ও মানের ওপর ভিত্তি করে দেখা যায় দামের ভিন্নতা। 
বসুন্ধরা সিটি, জামান টাওয়ার (গুলশান), প্লাজা এ আর (বনানী), সীমান্ত স্কয়ার (ধানমন্ডি), যমুনা ফিউচার পার্ক, জমজম টাওয়ার (উত্তরা)– এসব শপিংমলে প্রায় সব ব্র্যান্ডের বর্ষা কালেকশন পাওয়া যায়।
এ ছাড়া আজিজ সুপারমার্কেট (শাহবাগ), নিউমার্কেট, গাউছিয়া মার্কেটে স্থানীয় ডিজাইনার বা কাস্টম টেইলারদের কাছে থিমেটিক প্রিন্ট ও হ্যান্ডপেইন্ট করা কামিজ, ওড়না, শাড়ি পাওয়া যায় বর্ষা মেজাজে।
ফ্যাশন হাউসগুলোতেও মিলছে বর্ষা-ভাবনার ভরপুর কালেকশন। হরিতকী, লা রিভ, রঙ বাংলাদেশ, বিশ্ব রঙ ইত্যাদিতে পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের নকশার পোশাক। 
অনলাইন পেজগুলো তো আছেই, যেখান থেকে আপনি ঘরে বসেই পছন্দের পোশাকটি কিনে নিতে পারবেন। 

মডেল: আসিন জাহান; পোশাক: হরিতকী; মেকওভার: রাজিয়া’স মেকওভার ছবি: ফয়সাল সিদ্দিক কাব্য

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ য শন ফ ল র শ ল পকর ম কদম ফ ল র বর ষ য় ড জ ইন ই বর ষ বর ষ র র নকশ নকশ য়

এছাড়াও পড়ুন:

জিৎ যেভাবে সিনেমায় এলেন

‘‘সিনেমায় আসার কোনো ইচ্ছা ছিলো না। বিল্ডিং ম্যাটারিয়ালস সাপ্লাইয়ে কাজ করতাম। আমার ছোট-খাটো একটা ব্যবসাও ছিলো। আর টুক-টাক মডেলিং করেছিলাম। এই করতে করতে বন্ধুরা ইন্সপায়ার করলো। ওরা বললো, বম্বে চলে যাও। এরপর বম্বে গেলাম । কিছু কমার্শিয়াল অ্যাড, মিউজিক ভিডিও করলাম। এরপর টলিউডে ‘সাথী’ হলো। তারপরে সব বদলে গেলো। তার মাঝখানে বন্ধুদের সামনে ছোট-খাটো মিমিক্রি করতে থাকতাম। কখনও রাজেশ খান্নার মতো ডান্স করতাম, আবার কখনও অমিতাভ বচ্চনের কণ্ঠ নকল করতাম। এখন যখন ভাবি তখন রিলেট করতে পারি, ওই কারণগুলো ছিলো বলেই আজ আমি সিনেমায়। এছাড়া সম্ভব হতো না।’’ – কথাগুলো বলছিলেন টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা জিৎ।

রচনা ব্যানার্জির উপস্থাপনায় ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ অনুষ্ঠানে এসে এই স্বীকারোক্তি দেন জিৎ। 

সম্প্রতি জিৎ যুক্ত হয়েছেন জীবনীভিত্তিক সিনেমা ‘কেউ বলে বিপ্লবী, কেউ বলে ডাকাত’ সিনেমায়।

আরো পড়ুন:

সেলিম আল দীন স্মরণে ঢাকা থিয়েটার ও গ্রাম থিয়েটারের নাট্যোৎসব

ধূমকেতুর জন্য রাজের প্রতীক্ষা শেষ

ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য, ‘‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের অন্যতম নায়ক অনন্ত সিংহ। তার জীবনী অবলম্বনে সিনেমা পরিচালনা করছেন পথিকৃৎ বসু।  সিনেমার নাম ‘কেউ বলে বিপ্লবী, কেউ বলে ডাকাত’। নতুন এই সিনেমায় অভিনয় করবেন জিৎ।

লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফুটবল দলবিহীন শেষ দেশ মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের ঐতিহাসিক অভিষেক
  • জিৎ যেভাবে সিনেমায় এলেন