নড়াইলে সৈয়দ সজিবুর রহমান নামের এক সাংবাদিককে কুপিয়ে জখমের ঘটনার ১১ দিন পর মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে নড়াইল সদর থানায় মামলাটি করেন ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি। এতে অজ্ঞাতপরিচয় চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।

সজিবুর রহমান সময় টেলিভিশনের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। তাঁর গ্রামের বাড়ি লোহাগড়া উপজেলার যোগিয়া গ্রামে এবং বর্তমানে নড়াইল শহরের আলাদাতপুরে বসবাস করেন। গত ৩০ ডিসেম্বর পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার পথে হামলা শিকার হন তিনি।

আরও পড়ুনকথা-কাটাকাটি দেখে খোঁজ নিচ্ছিলেন সাংবাদিক, পরে তাঁকে কুপিয়ে জখম৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

আজ শনিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলা হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মামলার এজাহারে সজিবুর অভিযোগ করেন, তিনি গত ৩০ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে লোহাগড়ায় একটি সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ সংগ্রহে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে নড়াইল শহরে নিজ বাসার দিকে ফেরার পথে রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে শেখ রাসেল সেতুর মাঝে অজ্ঞাতপরিচয় চার থেকে পাঁচজন তাঁর পথ রোধ করে। তাদের একজনের শরীরে পুলিশের লোগোসংবলিত রিফলেক্টিং ভেস্ট পরা ছিল। অন্যজন নিজেকে নড়াইল জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) মুরাদ বলে পরিচয় দেয়। সজিবুর নিজের পরিচয় দিলে তারা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু করে। সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে ধারালো চাকু দিয়ে সজিবুরের পেট, হাঁটুর উপরিভাগ, গোড়ালির ওপরে, বাঁ হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মোটরসাইকেলে দ্রুত পালিয়ে যায় তারা। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য সেদিন রাতেই তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুননড়াইলে সাংবাদিককে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি০১ জানুয়ারি ২০২৫

চিকিৎসাধীন থাকায় মামলা করতে দেরি হয়েছে বলে জানান সজিবুর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ এখন পর্যন্ত ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার তো দূরের কথা, কাউকে শনাক্তও করতে পারেনি—বিষয়টি দুঃখজনক। যারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য কুপিয়ে জখম করেছে, দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পার্থক্যটা বুঝিয়ে দিল আজারবাইজান, বাটলার বললেন ‘আমি জাদুকর নই’

ত্রিদেশীয় ফুটবল সিরিজে মালয়েশিয়ার কাছে ১-০ গোলে হারের পর দলে গোলমালের গন্ধ পেয়েছিলেন বাংলাদেশ নারী দলের কোচ পিটার বাটলার। আজ জাতীয় স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে আজারবাইজানের বিপক্ষে বাংলাদেশ নারী দলের ২-১ গোলে হারের পর বাটলার বললেন, তিনি কোনো জাদুকর নন।

আগামী মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় এশিয়ান কাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু সিরিজের দুই ম্যাচ হেরেও অনেক ইতিবাচক দিক খুঁজে পেয়েছেন বাটলার।

ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘বাংলাদেশের ফুটবলের ইতিবাচক দিক হলো, ১১ জন খেলোয়াড়কে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামা। গত দুটি ম্যাচে তারা যে দুর্দান্ত মনোভাব দেখিয়েছে, সেই মনোভাব নিয়ে আজকের মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়াই করাও ইতিবাচক। আপনাকে সত্যিই বাস্তববাদী হতে হবে।’

জাদুকরের মতো রাতারাতি বা মুহূর্তে সবকিছু বদলে দেওয়ার মতো জিয়নকাঠি তাঁর কাছে নেই বলে জানিয়েছেন বাটলার, ‘যখন আপনারা শিশুদের জন্মদিনের পার্টিতে যান এবং সেখানে একজন জাদুকর থাকে, আর তিনি একটি বড় কালো টুপি থেকে সাদা খরগোশ বের করেন। আপনি কি মনে করেন আমি সেই জাদুকর? আমি শিশুদের জন্মদিনের পার্টির সেই জাদুকর নই যে সাদা খরগোশ বের করব।’

এশিয়ান বাছাইয়ের প্রস্তুতিতে এখন পর্যন্ত চারটি ম্যাচ খেলেছেন বাংলাদেশে মেয়েরা। চারটির কোনোটিতে জেতা হয়নি। এ সিরিজের আগে গত অক্টোবরে থাইল্যান্ডের সঙ্গে দুই ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ।

যদিও দলগুলো বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিমত্তা ও র‍্যাঙ্কিংয়ে অনেকটা এগিয়ে। আজারবাইজানের বর্তমান র‍্যাঙ্কিং ৭৪, তারা বাংলাদেশের (১০৪তম) চেয়ে ৩০ ধাপ এগিয়ে। মালয়েশিয়া ১২ ধাপ আর থাইল্যান্ড এগিয়ে ৫১ ধাপ।

বাটলার প্রতিপক্ষদের শক্তিমত্তায় চোখ রেখেই খানিকটা স্বস্তি খুঁজে পেয়েছেন, ‘আমাদের কোনো ট্রেনিং সুবিধা নেই, আলোচনা করার মতো কোনো জিম নেই। আলোচনা করার মতো কোনো লিগ নেই। তবু তো মেয়েরা উন্নতি করছে। তাদের প্রচেষ্টাকে আমি  দশে দশ নম্বর দেব। খেলার মানের কথা বললে সম্ভবত পাঁচ-ছয় দিতে পারি।’

কয়েকটি জায়গায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আজারবাইজান। জয়ের পর দলটির কোচ সিয়াসাত আসগারভও সেই পার্থক্যগুলো তুলে ধরেছেন, ‘আমাদের খেলোয়াড়দের একটি বড় সুবিধা হলো, বেশির ভাগ খেলোয়াড় বিদেশি ক্লাবে খেলে। এতে তাদের ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। কিন্তু বাংলাদেশ দল আমাদের তুলনায় বয়সে কম। আর আমাদের ম্যাচ প্র্যাকটিসও তাদের চেয়ে বেশি। শারীরিক সক্ষমতার দিক থেকেও আমাদের খেলোয়াড়েরা বাংলাদেশের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ