ফের খেলাপি ঋণ পুনঃতপশিলে বিশেষ সুবিধা
Published: 15th, January 2025 GMT
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে অবশেষে খেলাপি ঋণ পুনঃতপশিলে আবার বিশেষ সুবিধা দিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মাধ্যমে ডাউন পেমেন্টের শর্ত শিথিল, সুদ মওকুফ ও ঋণের মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ দেওয়া হবে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিরা এই সুযোগ পাবে না। পুরো প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছভাবে করতে বিভিন্ন খাতের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের একটি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি সাম্প্রতিক আন্দোলন, অগ্নিকাণ্ড, করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ প্রকৃত ক্ষতির মুখে পড়া ২০ কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণে বিশেষ পুনঃতপশিলের প্রস্তাব কমিটির কাছে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে শিগগির নীতিমালা জারি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংক খাত-সংশ্লিষ্টরা জানান, বিগত সরকারের সময় ঢালাওভাবে ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়। বিভিন্ন নীতি ছাড়ের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ কম দেখানো হচ্ছিল। আবার প্রভাবশালীরা কিস্তি না দিলেও খেলাপি দেখানো হচ্ছিল না। আইএমএফের ঋণ নেওয়ার কারণে গত বছর থেকে কঠিন শর্ত মানতে হচ্ছে। এর মধ্যে গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর অনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নেওয়া অনেক ঋণ এখন খেলাপি হতে শুরু করেছে। আগের মতো বিশেষ সুবিধা বন্ধ হয়েছে। এসব কারণে খেলাপি ঋণ দ্রুত বাড়ছে। গত বছরের ৯ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতের মোট ঋণের যা প্রায় ১৭ শতাংশ। খেলাপি ঋণ হু-হু করে বৃদ্ধির মধ্যে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন ঋণ পুনঃতপশিলে বিশেষ সুবিধার আবেদন জানিয়ে আসছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ ছাড়ে পুনঃতপশিলের উদ্যোগ নিয়েছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে শুধু ক্ষতিগ্রস্তদের সুবিধা দেওয়া হলে ভালো হবে। আগের মতো কোনোভাবেই ঢালাও সুবিধা দেওয়া ঠিক হবে না। ব্যাংকই ভালো জানে, কে ক্ষতিগ্রস্ত এবং কে ইচ্ছাকৃত খেলাপি। এ প্রক্রিয়া যেন দ্রুত সম্পন্ন করা যায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। আর কোনোভাবেই যেন ইচ্ছাকৃত খেলাপিরা সুবিধা না পায়।
বিশেষ কমিটিতে কারা থাকছেন, কী কাজ
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হকের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটিতে সাবেক ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক মামুন রশীদ এবং ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন। আর সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের (বিআরপিডি) পরিচালক মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী।
বিদ্যমান ঋণ পুনঃতপশিল নীতিমালার বাইরে ২০ কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণ নিয়মিত করার ক্ষেত্রে কী সুবিধা দেওয়া যায়, তা কমিটি যাচাই করবে। আর এ জন্য প্রথমে ব্যাংক গ্রাহকের কাছ থেকে আবেদন নিয়ে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রাথমিক বাছাই শেষে কমিটিতে পাঠাবে। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বিআরপিডির অনাপত্তি নিয়ে বিশেষ সুবিধা কার্যকর হবে।
ইতোমধ্যে যেসব বড় ঋণখেলাপি হয়েছে, পুনঃতপশিলের পরও কেন আদায় হচ্ছে না, তার কারণ পর্যালোচনা করবে কমিটি। এর বাইরে বিগত সরকারের সময় জারি করা সুদ মওকুফ, ঋণ পুনঃতপশিল, পুনর্গঠন, অবলোপন নীতিমালা পর্যালোচনা করে সম্ভাব্য পরিবর্তনের বিষয়ে প্রতিবেদন দেবে। সরকার পরিবর্তনের পর গত ২৭ নভেম্বর জারি করা ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশন নীতিমালা পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে সে বিষয়েও সুপারিশ করবে এই কমিটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, খেলাপি ঋণ পুনঃতপশিলের সাধারণ নীতিমালা রয়েছে। সাম্প্রতিক আন্দোলন, করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ঋণ পুনঃতপশিলে বিশেষ ছাড়ের প্রয়োজন হলে যাচাই-বাছাই করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি সুদ মওকুফ, ঋণ পুনঃতপশিল, শ্রেণীকরণসহ বিভিন্ন নীতি পর্যালোচনা করবে এই কমিটি। তিনি আরও বলেন, খেলাপি ঋণ দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচ বাড়ছে। আগামীতে খেলাপি আরও বাড়লে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এবং বিদেশি বিনিয়োগে প্রভাব পড়তে পারে। এ অবস্থায় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ সুবিধায় ঋণ পুনঃতপশিলের নীতিমালা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনে নির্ধারিত ডাউনপেমন্ট দিয়ে ব্যাংক যে কোনো সর্বোচ্চ চারবার ঋণ পুনঃতপশিল করতে পারে। আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নরের দায়িত্ব নিয়ে ২০২২ সালে ঋণ পুনঃতপশিলের নীতিমালায় ব্যাপক শিথিলতা আনেন। আগে যেখানে ঋণ পুনঃতপশিলে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ ডাউনপেমন্ট দিতে হতো, তা কমিয়ে আড়াই থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ করা হয়। পটপরিবর্তনের পর এখন আবার বিশেষ বিবেচনায় পুনঃতপশিলের উদ্যোগ নেওয়া হলো। এর মাধ্যমে ২০২২ সালে জারি করা নীতিমালার চেয়েও বাড়তি সুবিধা পাবেন ব্যবসায়ীরা।
নীতিমালার ছন্দপতন যেভাবে
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশনিংয়ের নীতিমালা ছিল আন্তর্জাতিক মানের। ২০১৪ সালের নির্বাচনের ঠিক আগে রাজনৈতিক বিবেচনায় ২০১৩ সালে নিয়ম শিথিল করা হয়। নামমাত্র ডাউনপেমেন্ট দিয়ে বিশেষ বিবেচনায় ঋণ পুনঃতপশিলের সুযোগ চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পর ২০১৫ এবং ২০১৮ সালে আবার ২ শতাংশ ডাউনপেমন্ট দিয়ে ঋণ নিয়মিত এবং পুনর্গঠনসহ বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হয়। করোনা শুরুর পর ২০২০ সালে ১ টাকা না দিলেও ঋণ নিয়মিত দেখানোর সুযোগ দেওয়া হয়। এর পর ২০২১ সালে কিস্তির ১৫ শতাংশ এবং ২০২২ ও ২০২৩ সালে অর্ধেক দিলেই নিয়মিত দেখানো যেত। অবশ্য এত সুযোগেও খেলাপি ঋণ আটকানো যায়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা নেওয়ার সময় ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। গত ১৬ বছরে তা ১৩ গুণ বেড়ে এখন তিন লাখ কোটি টাকা ছুঁইছুঁই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আগে সুবিধা নেওয়া ঋণই বারবার সুবিধার জন্য এসেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঋণখ ল প ব যবস য় দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আপসের কপ৩০ চুক্তি থেকে বাদ পড়ল জীবাশ্ম জ্বালানির প্রসঙ্গ
জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ৩০-তে বহু কাঠখড় পুড়িয়ে সর্বসম্মতিক্রমে একটি চুক্তি হয়েছে। এতে বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব মোকাবিলায় দরিদ্র দেশগুলোর জন্য অর্থ সহায়তা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। তবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে সরাসরি কোনো কিছু বলা হয়নি। তা ছাড়া চুক্তিটি বাধ্যতামূলক নয়, বরং স্বেচ্ছাভিত্তিক। অর্থাৎ সম্মত কোনো দেশ চাইলে চুক্তিতে থেকে বের হয়ে যেতে পারবে।
দ্য গার্ডিয়ান জানায়, কপ৩০-এর নির্ধারিত সময়ে চুক্তি করা সম্ভব না হওয়ায় আলোচনা বর্ধিত সময়ে গড়ায়। টানা ১২ ঘণ্টার নিবিড় দর-কষাকষির পর শনিবার সকালে চুক্তির ঘোষণা আসে। চুক্তিতে ১৯৪টি দেশ ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সম্মত হয়েছে। এবারের সম্মেলনের আয়োজক দেশ ব্রাজিলের বেলেম শহরের স্থানীয় সময় বেলা ১টা ৩৫ মিনিটে চুক্তির আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
ব্রাজিলের আশা, চুক্তি হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ভবিষ্যতে বৈশ্বিক পর্যায়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা সম্ভব হবে। কিন্তু এবারের সম্মেলনে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি না পাঠায়, ব্রাজিলের এই আশাবাদ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এবারের চুক্তি অনেককে হতাশ করেছে উল্লেখ করে জাতিসংঘের জলবায়ু সেক্রেটারিয়েটের (ইউএনএফসিসিসি) নির্বাহী সেক্রেটারি সাইমন স্টিয়েল বলেন, দায় স্বীকারে অস্বীকৃতি এবং নানা বিষয়ে বিভক্ত একটি বছরে অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিনিধিরা শেষ পর্যন্ত একমত হতে পেরেছেন, এটাই প্রশংসনীয়।
সাইমন স্টিয়েলের ভাষায়, ‘আমি বলছি না আমরা জলবায়ু লড়াইয়ে জিতছি। তবে আমরা এখনো নিঃসন্দেহে সম্ভাবনা জিইয়ে রেখেছি। আমরা প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছি।’
১০ নভেম্বর থেকে আমাজন নদীর মুখের কাছের বেলেম শহরে শুরু হওয়া কপ৩০-এর মূল লক্ষ্য ছিল গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ রোধ এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট ক্ষতি মোকাবিলায় জাতিসংঘের বিদ্যমান কাঠামোকে শক্তিশালী করা। প্রতিটি কপের শেষে সর্বসম্মতিক্রমে একটি আশা জাগানিয়া ঘোষণা আসবে, এমটি আশা করে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সংকট থাকা উন্নয়নশীল দেশগুলো। কিন্তু বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও সম্মেলনের শেষ দিন গত শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চুক্তির বিষয়ে সম্মত হওয়া যায়নি। তখন আলোচনা বর্ধিত সময়ে গড়ায়।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভুক্তভোগী ৮০টির বেশি দেশ ও অঞ্চল এবারে চুক্তিতে জ্বালানি তেল, কয়লা ও গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে স্পষ্ট রূপরেখা চেয়েছিল। যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এই দাবির পক্ষে ছিল। কিন্তু সৌদি আরব ও রাশিয়ার মতো শীর্ষ জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলন ও রপ্তানিকারক দেশগুলো সম্মেলনের শুরু থেকে এই দাবির বিরোধিতা করে আসছিল। শেষ মুহূর্তে এটা নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়।
এবার বর্ধিত সময়ে যে চুক্তি হয়েছে, তাতে জীবাশ্ম জ্বালানি ধীরে ধীরে কমানোর একটি রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বন নিধন বন্ধ করা নিয়ে রূপরেখায় কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি। এটি আয়োজক দেশ ব্রাজিল ও প্রকৃতি রক্ষায় নিবেদিত সংগঠনগুলোকে হতাশ করেছে। কারণ বন নিধন নিয়ে সচেতনতা বাড়াতেই এবারের কপ সম্মেলন বিশ্বের বৃহত্তম চিরহরিৎ বনাঞ্চল (রেইনফরেস্ট) আমাজনের নদীর মুখের বেলেম শহরে করা হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ভবিষ্যতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা নিয়ে আরও গভীর মতভেদ তৈরি হতে পারে, যা এবারের সম্মেলনে স্পষ্ট হয়েছে।
চুক্তিতে পৌঁছাতে যে বেশ ঘাম ঝরাতে হয়েছে, তা কপ৩০-এর সভাপতি আন্দ্রে কোরেয়া দো লাগোর কথার মধ্যেও সুস্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, আপনাদের মধ্যে অনেকে কিছু বিষয় নিয়ে আরও বড় প্রত্যাশা ছিল।’
কলম্বিয়া, পানামা এবং উরুগুয়ের মতো ব্রাজিলের প্রতিবেশী দেশগুলো দো লাগোর কিছু সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। এসব দেশের প্রতিনিধিদের অভিযোগ, চুক্তির প্রক্রিয়া কেমন হবে, তা চূড়ান্ত করার জন্য সব প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে আলোচনা (পেলেনারি) করা দরকার ছিল। কিন্তু দো লাগো তা স্থগিত করেছেন।
তবে এক ঘণ্টা পর আলোচনা পুনরায় শুরু হয়। এতে দো লাগোর জানান, যেসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তা বাতিল হওয়ার সুযোগ নেই।
কলম্বিয়ার প্রতিনিধি বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি পৃথিবীর উষ্ণায়নের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। তাই তাঁর দেশ এমন কোনো চুক্তির সঙ্গে থাকতে পারে না, যা বিজ্ঞানকে উপেক্ষা করে।
জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার দ্রুত বন্ধের রূপরেখা নিয়ে স্পষ্ট ঘোষণা না থাকায় ইইউ চুক্তিতে থাকবে কিনা, তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু বর্ধিত সময়ে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাতভর আলোচনার পর শনিবার সকালে চুক্তিতে তারা সম্মতি দেয়। তবে ইউরোপের সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের জোটটি জানিয়েছে, চুক্তিটি যেভাবে শেষ করা হয়েছে, তা নিয়ে তারা একমত নয়।
চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগে ইইউর জলবায়ু কমিশনার ওপকে হোয়েকস্ট্রা বলেন, ‘আমাদের চুক্তিটি সমর্থন করা উচিত। কারণ তা অন্ততপক্ষে সঠিক পথে রয়েছে।’
তহবিল
জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে স্পষ্ট রূপরেখা না থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য তহবিল বৃদ্ধির ঘোষণা কপ৩০ সবচেয়ে বড় অর্জন। জলবায়ু সংকটের প্রভাব মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা ধনী দেশগুলোকে ২০৩৫ সালের মধ্যে তিনগুণ বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে। কিন্তু চুক্তিটি যেহেতু বাধ্যতামূলক নয়, তাই এটা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চুক্তি অনুযায়ী উন্নয়নশীল দেশগুলো এক বছরে ১২ হাজার কোটি ডলার পাবে। ধনী দেশগুলো জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য গত বছর ৩০ হাজার কোটি ডলার দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেখান থেকেই এই তহবিল আসবে। তবে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর অনেকে আশা করেছিল, ৩০ হাজার কোটি ডলার থেকে নয়, বরং তাদের জন্য বাড়তি ১২ হাজার কোটি ডলারের ঘোষণা আসবে।
আরও পড়ুনজলবায়ু সম্মেলনে কাঙ্ক্ষিত ফল না আসার আশঙ্কা২ ঘণ্টা আগে