বিপিএল ছেড়ে কর্নওয়াল বললেন, ‘বিদায় বাংলাদেশ’
Published: 15th, January 2025 GMT
বিপিএলের ঢাকা পর্বে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি রাকিম কর্নওয়াল। সিলেট পর্বে তিন ম্যাচ খেলেও ব্যাটে-বলে ভালো করতে পারেননি। কিন্তু চট্টগ্রাম পর্বে দলের সঙ্গে যাওয়া হলো না তার। চোট নিয়ে ‘বাংলাদেশকে বিদায়’ বলে বিপিএল ছেড়েছেন তিনি।
সিলেট স্ট্রাইকার্স তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছে এই সংবাদ, ‘সমর্থকদের জন্য দুঃসংবাদ। চোটের কারণে রাকিম কর্নওয়াল বিপিএল ছাড়ছেন।’ ভিডিওতে কর্নওয়াল বলেন, ‘বিদায় বাংলাদেশ। আপনাদের সঙ্গে আবার সিলেটে দেখা হবে।’
সিলেটের হয়ে এবারের বিপিএলে কর্নওয়াল ৩ ম্যাচ খেলেছেন। ব্যাট হাতে যথাক্রমে ১৮, ০ ও ৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে। বল হাতে নিয়েছেন ৪টি। বিদেশিদের মধ্যে সিলেটের দলে আছেন পল স্টার্লিং, জর্জ মানসে, রিস টপলি ও অ্যারন জোন্স।
এবারের বিপিএলে সিলেট টানা তিন ম্যাচে হারের মুখ দেখে। ঢাকা পর্বে পরপর দুই ম্যাচে হারের পর সিলেটে গিয়েও প্রথম ম্যাচে হারে সিলেট স্ট্রাইকার্স। এরপর জাকির হাসানের ব্যাটে চতুর্থ ও পঞ্চম ম্যাচে জিতে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেয় সিলেট। কিন্তু সিলেটে নিজেদের শেষ ম্যাচে হেরেছে আরিফুল হকের নেতৃত্বাধীন দলটি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গত ১৫ বছর ছিল ‘মানবাধিকার সংকটের ভয়াবহ সময়’
একাত্তরের পর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন ছিল, তা পূরণ হয়নি। গত ১৫ বছর ছিল মানবাধিকার সংকটের ভয়াবহ সময় এবং ’২৪–এর গণ–অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও তা পুরোপুরি বদলায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ছাত্রলীগের মাধ্যমে ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে’ পরিণত করা হয়েছিল। সেখান থেকে পরিবর্তনের এই পথে নারীদের উপস্থিতি অপরিহার্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার অডিটরিয়ামে ডাকসুর উদ্যোগে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় গুম কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন বলেন, পূর্বে ছাত্রসংগঠনগুলোর নির্যাতনের ফলে ছাত্রদের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে; এসব ঘটনা পরিবর্তন করাই ডাকসুর দায়িত্ব। তিনি বলেন, অতীতে বহু মানুষ র্যাব তুলে নেওয়ার পর নিখোঁজ হয়েছেন। বহু পরিবার ভয়ে পথ চলতে পারেনি; অনেকে চোখের সামনে প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। তিনি বলেন, গুমের ঘটনা ভুলে গেলে চলবে না, কমিশন প্রতিটি ঘটনার সত্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে।
গুম কমিশনের সদস্য ও বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত নাবিলা ইদ্রীস গুমের শিকার ভুক্তভোগীদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, অনেককে ইলেকট্রিক শক পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। ফলে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নাবিলা ইদ্রীস ছাত্ররাজনীতি সংশ্লিষ্ট টর্চার ও গেস্টরুম সংস্কৃতির প্রতিটি ঘটনা নথিবদ্ধ করার পরামর্শ দেন। নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিবর্তনের পথে নারীদের উপস্থিতি অপরিহার্য।’
গুমের শিকার ব্যারিস্টার আহমেদ বিন মীর কাশিম (আরমান) বলেন, শত শত পরিবার এখনো জানে না তাদের প্রিয়জন জীবিত না মৃত, রাষ্ট্র তাদের জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, গুম একটি জাতীয় ক্ষত, যা থেকে মুক্তি পেতে প্রথম শর্ত হলো কঠোর জবাবদিহি।
গুমের ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর পুনর্বাসনকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হিসেবে উল্লেখ করেন আহমেদ বিন মীর কাশিম। তিনি বলেন, হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প করা সম্ভব হলেও গুম পূর্ববর্তী পরিবারগুলোর আর্থিক নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্র কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের মিশনপ্রধান (ভারপ্রাপ্ত) হুমা খান বলেন, মানবাধিকার কোনো কঠিন বা জটিল বিষয় নয়। এটি খুব সহজভাবে বলা যায়, মানুষ হিসেবে সবাই সমান অধিকার পাবে, তাদের ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ, রং বা শ্রেণি যা–ই হোক না কেন।
হুমা খান আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান জনগণের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার কথা, কারণ জনগণের ট্যাক্সের অর্থেই তাদের বেতন চলে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও জনগণের সেবক—শাসক নন। আমাদের এই মানসিক পরিবর্তন আনতে হবে এবং তরুণ প্রজন্মই এ পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিতে পারে। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের প্রতি আমার গভীর প্রত্যাশা, আপনারা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তুলবেন, যা ন্যায়বিচার, সমতা ও পারস্পরিক সম্মান এই তিন মূলনীতির ওপর দাঁড়াবে।’
ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম বলেন, ‘যাঁরা মানবাধিকারকর্মীর নামে গুম–খুন এবং দমননীতিকে বৈধতা দিয়েছিলেন, তাঁরা “জাতির শত্রু”। তাঁদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। নতুন বাংলাদেশেও কিছু দল পুরোনো দমন নীতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।’ তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ হবে সব মানুষের অধিকার ও ইনসাফের দেশ, যেখানে গুম–টর্চার থাকবে না।
ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ বলেন, ৭১-এর পর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন ছিল, তা পূরণ হয়নি। গত ১৫ বছর ছিল মানবাধিকার সংকটের ভয়াবহ সময় এবং ২০২৪–পরবর্তী সময়েও তা পুরোপুরি বদলায়নি। তিনি বলেন, শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়—ব্যক্তি পর্যায় থেকে অন্যের অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার গ্রহণ করতে হবে।