ভালোবেসে ঘর বেঁধেছেন বলিউড তারকা দম্পতি ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ও অভিষেক বচ্চন। ২০০৭ সালের ২০ এপ্রিল বিয়ে করেন তারা। ঘরোয়া আয়োজনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছিল বচ্চন পরিবার।

বলিউডের অনেককে বিয়েতে নিমন্ত্রণ জানাতে পারেননি অমিতাভ বচ্চন। তার অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধুকেও নিমন্ত্রণ করেননি। বচ্চন পরিবার যাদের নিমন্ত্রণ জানাতে পারেনি, ছেলের বিয়ের পর তাদেরকে কার্ড ও মিষ্টি পাঠিয়েছিল অমিতাভ-জয়া। কিন্তু সেই কার্ড ও মিষ্টি ফেরত পাঠিয়েছিলেন বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা। কিন্তু কেন এই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন ‘খামোশ’ তারকা?

এ ঘটনা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে বলিপাড়ায়। অনেক চর্চার পর বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম মিড-ডের সঙ্গে কথা বলেছিলেন শত্রুঘ্ন সিনহা। কার্ড-মিষ্টি ফিরিয়ে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে এই অভিনেতা বলেছিলেন, “আপনি যখন নিমন্ত্রণ করবেন না, তাহলে মিষ্টি পাঠানোর প্রয়োজনটা কী? আমি অন্তত আশা করেছিলাম, অমিতাভ বা তার পরিবারের কেউ মিষ্টি পাঠানোর আগে আমাকে ফোন করবেন। যখন ফোনও করা হয়নি, তখন মিষ্টি কেন?”
   
শত্রুঘ্ন সিনহা মিষ্টি ফেরত দেওয়ার পর ‘কফি উইথ করন’ অনুষ্ঠানে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলেন অভিষেক বচ্চন। পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করে এই অভিনেতা বলেছিলেন, “সত্যি বলছি, মানুষ ভুলে যাচ্ছে যে, আমার পরিবার কেন বিয়েটিকে খুব ছোট পরিসরে শেষ করেছিল। এর পেছনে বড় একটি কারণ ছিল।”

আরো পড়ুন:

হামলাকারীকে নিয়ে সাইফের বাড়িতে পুলিশ

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন সাইফ আলী খান

কারণ ব্যাখ্যা করে অভিষেক বচ্চন বলেছিলেন, “আমার দাদি তখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আমার বাবা আমাকে বলেছিলেন, ‘তুমি জানো, বাইরে গিয়ে বড় পরিসরে উদযাপন করতে আমাদের ভালো লাগবে না।”

বচ্চন পরিবার জমকালো আয়োজনে বিয়ে উদযাপন করার পরিবর্তে আশীর্বাদ চেয়ে কার্ড পাঠিয়েছিল; যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন শত্রুঘ্ন। এ বিষয়ে অভিষেক বচ্চন বলেছিলেন, “আমি কি আমন্ত্রণ জানাতে চেয়েছিলাম? আমার পরিবার কি আমন্ত্রণ জানাতে চেয়েছিল? তার (ঐশ্বরিয়া) পরিবার কি পুরো বিশ্বকে আমন্ত্রণ জানাতে চেয়েছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর হলো, হ্যাঁ। কিন্তু আমাদের বাবা-মা, সবাই মিলে সবার আশীর্বাদ চেয়ে একটি কার্ড পাঠিয়েছিলেন। সবাই এটি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছিলেন। কেবল একজন ব্যক্তি এটি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন! শত্রুঘ্ন আঙ্কেল কার্ডটি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এটা ভালো ছিল! আমরাও ফিরিয়ে দেওয়া কার্ড গ্রহণ করেছিলাম। আপনি সবাইকে খুশি করতে পারবেন না।”

অমিতাভ বচ্চনের বাবার নাম হরিবংশ রাই। তিনি একজন কবি ছিলেন। হরিবংশ রাইয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী তেজি বচ্চন। এ সংসারে জন্মগ্রহণ করেন অমিতাভ। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ২০০৭ সালের ২১ ডিসেম্বর মারা যান তিনি। অর্থাৎ অভিষেক-ঐশ্বরিয়ার বিয়ের ঠিক ৮ মাস পর মারা যান তিনি। অমিতাভের জীবনে তার মায়ের প্রভাব অনেক, সে কথা বহুবার বলেছেন বিগবি।

তথ্যসূত্র: বলিউড বাবল, মিড-ডে

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পর ব কর ছ ল পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

‘এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর’

২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। এই ফুটবল কিংবদন্তির পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর মৃত্যুর পর প্রথম আলোতে ছাপা হওয়া উৎপল শুভ্রর লেখাটি আবার প্রকাশ করা হলো।  

‘বন্ধু’র সঙ্গে স্বর্গে ফুটবল খেলতে চেয়েছেন পেলে। ডিয়েগো ম্যারাডোনা কি সেই অপেক্ষায় থাকবেন? নাকি মৃত্যুর ওপারের রহস্যময় ওই জগতে এরই মধ্যে বল নিয়ে কারিকুরি শুরু করে দিয়েছেন?

কল্পচোখে যখনই দেখতে চাইছি, ম্যারাডোনা এখন কী করছেন, যে ছবিটি চোখে ভেসে উঠছে, তাতে হয় তাঁর আকাশমুখী মাথায় বল নাচছে, নয়তো বাঁ পায়ে। আহ্, জাদুকরি সেই বাঁ পা!

খেলা ছেড়েছেন সেই কবে! ছাড়ার পরও কত কিছুই না করেছেন! কথায়, কাজে, সম্ভবত তার চেয়েও বেশি অকাজে নিত্যদিনই তিনি খবর। ম্যারাডোনা কোথাও গেছেন আর কোনো ঝামেলা বাধাননি, কই, এমন তো মনেই পড়ছে না। তারপরও সবকিছু ছাপিয়ে সবার মনে অনপনেয় যে ছবিটা আঁকা, তা ফুটবল পায়ে ম্যারাডোনার।আশ্চর্যই বলতে হবে, যাঁরা তাঁকে খেলতে দেখেননি, এমনকি তাঁদের মনেও।

ফুটবল ইতিহাসে বিখ্যাত বাঁ পা বললে প্রথমেই মনে পড়বে ফেরেঙ্ক পুসকাসকে। ‘ম্যাজিক্যাল ম্যাগিয়ার্স’ নামে অমর হয়ে থাকা পাঁচের দশকের সেই হাঙ্গেরি দলের প্রাণভোমরা। ‘দ্য গ্যালোপিং মেজর’-এর ৮৫ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৮৪ গোল এখনো বিস্ময় জাগায়, কিন্তু স্পর্শের দূরত্বে গিয়েও তাঁর বিশ্বকাপ হাতে নেওয়া হয়নি।

জাদুকরি বাঁ পায়ের আধুনিকতম সংস্করণ লিওনেল মেসিকেও পুড়িয়েছে একই দীর্ঘশ্বাস (পরের বিশ্বকাপেই অবশ্য দীর্ঘশ্বাসকে মাটি দিয়ে বিশ্বকাপ হাতে তুলেছেন মেসি)। ডিয়েগো ম্যারাডোনার বাঁ পা এখানেই একমেবাদ্বিতীয়ম হয়ে যায়। কোনো ফুটবলারকে যাচাইয়ের চূড়ান্ত যে কষ্টিপাথর বিশ্বকাপ, সেখানেই ম্যারাডোনা দেখা দিয়েছেন পরিপূর্ণ মহিমায়। এক অর্থে যেখানে তিনি পেলের চেয়েও এগিয়ে। সংখ্যায় অবশ্যই নয়, পেলের তিনটি বিশ্বকাপ জয়ের রেকর্ড কেউ ছুঁতে পারেননি, কোনো দিন কেউ পারবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে দেওয়ায়ও কোনো ঝুঁকি দেখি না। কিন্তু প্রায় একক কৃতিত্বে ট্রফি জিতে একটা বিশ্বকাপকে নিজের নামাঙ্কিত করে রাখার কীর্তিতে পেলেও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী নন। এখানে ম্যারাডোনার সঙ্গে তুলনা হতে পারে শুধু ১৯৬২ বিশ্বকাপের গারিঞ্চার।

ম্যারাডোনা এখনো ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে। ছবিটি তাঁর মৃত্যুর পর নেপলসে তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ