চলমান পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন মামুনুল হক
Published: 7th, February 2025 GMT
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন, অভ্যুত্থান ও পরবর্তী সংগ্রামে বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনতার অভূতপূর্ব অংশগ্রহণ এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।
মামুনুল হক বলেন, ফ্যাসিবাদের প্রতিটি স্মৃতিচিহ্ন ও প্রতীকের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক তরুণ প্রজন্মের মহাজাগরণ এক অবিস্মরণীয় বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটিয়েছে। আগামীতে ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশপ্রেমিক জনতার কাঙ্খিত বাংলাদেশ দেখার প্রতীক্ষায় আছি আমরা সবাই।
তিনি আরও বলেন, বসে নেই দেশবিরোধী অপশক্তি, তার দোসর ও পরিকল্পনাকারীরা। জনতার জাগরণের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে যে কোনো মুহূর্তে। ইতিমধ্যে চিন্তাশীল মানুষের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, চলমান আন্দোলনকে সহিংসতার রূপ দিয়ে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ পরিচালনা করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে দেশে-বিদেশে ভয়ঙ্কর চাপের মুখে পড়বে বাংলাদেশ।
খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, রক্তখেকো হাসিনা সরকারের রক্তচোষা বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে আত্মদানকারী আবু সাঈদ-মুগ্ধদের রক্তস্নাত বিপ্লব পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ সফল অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। সেখানে পরাজিত অপশক্তির রক্ত ঝরেছে খুব মামুলি। আর এতেই বাংলাদেশের মানুষের ধৈর্য ও সহনশীলতার প্রমাণ পেয়েছে পৃথিবী। এতে হয়তো হতাশ হয়েছে দেশবিরোধী অপশক্তি। তবে হতাশ হলেও হাল ছাড়েনি তারা। আর তাই তীব্রভাবে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, চলমান আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে একটি সহিংস পরিবেশ তৈরি করা হবে। এজন্য এখন সর্বাগ্রে প্রয়োজন সচেতনতা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।
দেশের আলেম-ওলামা, ইসলামপ্রিয় জনতাসহ সব দেশপ্রেমিক নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই যেন সহিংসতা না ঘটে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়। পরিণামে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিপ্লব। ক্ষতিগ্রস্ত হবে আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে উঠবার সম্ভাবনা। ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ।
মামুনুল হক বলেন, এহেন পরিস্থিতিতে দেশের সব বিক্ষুব্ধ জনতা ও দেশপ্রেমিক জনগণকে যে কোনো মূল্যে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার আহ্বান জানাচ্ছি। দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করা সব দেশপ্রেমিক জনগণের ঐতিহাসিক দায়িত্ব।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক ম ম ন ল হক পর স থ ত চলম ন
এছাড়াও পড়ুন:
এবারের নির্বাচনের লড়াইটা কঠিন: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের লড়াইটা হবে কঠিন।
তিনি বলেন, “এবারের নির্বাচন আওয়ামী আমলের নির্বাচন নয়। নিরপেক্ষ পরিবেশেই ভোট হবে। জয়ী হতে হলে জনগণের ভালোবাসা অর্জন করতেই হবে।”
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির পঞ্চম দিনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “এই নির্বাচন আওয়ামী অভয়ের নির্বাচন নয়। তাই জনগণের মন জয় করাই হবে মূল বিষয়। কে নমিনেশন পেল তা গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
তিনি আরো বলেন, “গত ৫ আগস্ট আমরা ফ্যাসিস্ট শাসনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেশে অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছিল। আমাদের নেতা বিদেশে থাকলেও তিনি আমাদের সংগঠিত রেখেছেন— তার প্রমাণ আপনাদের সামনে।”
তিনি জানান, আজ তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব গঠনের সুযোগ এসেছে এবং এ নেতৃত্বে থাকবেন তারেক রহমান।
ফখরুল বলেন, “আজকের লড়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শক্তিশালী মনোভাব নিয়ে এগোতে হবে। বিএনপির সংস্কার শুরু করেন জিয়াউর রহমান— রেমিট্যান্স, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, উন্মুক্ত অর্থনীতি। পরে বেগম খালেদা জিয়া শিক্ষার প্রসার, নারীর ক্ষমতায়ন, যুবকদের কর্মসংস্থান বাড়িয়েছেন।”
গত ১৫ বছরের আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “আপনারা দীর্ঘদিন লড়াই করেছেন— এখন সেই লড়াইয়ের শেষ প্রান্তে। নির্বাচনের মাধ্যমেই এগিয়ে যেতে হবে। বিএনপি কখনো পরাজিত হওয়ার দল নয়।”
১৯৭১ প্রসঙ্গে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের অস্তিত্ব ১৯৭১। অথচ কেউ কেউ বলে ৭১-এর প্রজন্ম নাকি নিকৃষ্ট প্রজন্ম— তারা এমন কথা কীভাবে বলে?”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুতই দেশে ফিরবেন বলেও তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বেগম রোকেয়া সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “নারী জাগরণের অগ্রদূতকে নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য অগ্রহণযোগ্য। ৫ আগস্টের ঘটনার পর দেশে কোনো অন্ধ শক্তি সক্রিয় হচ্ছে কি না, সেটিও উদ্বেগের বিষয়।”
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ঢাকা/মোহাম্মদ/ইভা